Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

শুধুমাত্র চরিত্রের প্রয়োজনে…

চরিত্রের প্রয়োজনে অভিনয়শিল্পীকে কতো ধরনের চরিত্রেই না অভিনয় করতে দেখা যায়। তাদের নিয়েই বিশেষ প্রতিবেদন।
অভিনেতা মোশাররফ করিম। এ পর্যন্ত এমন কোনো চরিত্র নেই যে তিনি করেননি। তিনি একাধারে করেছেন হিজড়া, বাটপার, ডাক্তার, বাবা, নেতা, প্রেমিক, ডিস ব্যবসায়ী, যমজ, মুক্তিযোদ্ধা, ঘাড় ত্যাড়া, লেখক, ঝালখোড়, পানখোড়, মাইকেল মামা, ফাঁপরবাজ, শিক্ষক, চাপাবাজ, ফ্যাটম্যান, র‌্যাপার, ঘুষখোর, মাস্তান, চিটারসহ অসংখ্য চরিত্র। তার চরিত্র বৈচিত্র্যতায় মুগ্ধ দর্শক। ‘জীবন বাবুর চিঠি’তে তিনি ১০টি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। এটিতে তাকে কখনো স্টেশন মাস্টার, বাসার দারোয়ান, পুলিশ অফিসার, প্রেমিক চরিত্রে দেখা যায়। আবার মাবরুর রশিদ বান্নাহর ‘আশ্রয়’ নাটকে তাহসানের পালক বাবা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।

জনপ্রিয় অভিনেত্রী তিশা তার অভিনয়গুণে দর্শকদের মুগ্ধ করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। অসংখ্য টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত চরিত্রগুলো নিয়ে বিস্তর লেখা যাবে। বিভিন্ন চরিত্রের মধ্যে করেছেন প্রেমিকা, বৌ, মিটু নিয়ে সোচ্চার নারী, বেদের মেয়ে, কুৎসিত মেয়ে, পুলিশ, ফুটবলার, নারী মাস্তান, বধূ, নেত্রী, মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীসহ অসংখ্য চরিত্র। সম্প্রতি বান্নাহর ‘লেডি কিলার’ নাটকে নারী মাস্তান, রাইসুল তমালের ‘আদা সদুদ্দুর’ নাটকে নেত্রী এবং মুরসালিন শুভর ‘আই অ্যাম আন্ডার এরেস্ট’ নাটকে পুলিশের চরিত্র তার অভিনয় সবার নজর কাড়ে।

আফরান নিশো বৈচিত্র্যময় চরিত্র দিয়ে দর্শককে এখনো টিভি ও বিভিন্ন প্লাটফর্মে ধরে রেখেছেন। এই বহুমুখী অভিনেতাও চরিত্রের প্রয়োজনে কোনো কিছু ছাড় দিতে রাজি নন। টিভি নাটকে তিনি সবার নজরেই আসেন ভিন্ন ভিন্ন সব চরিত্রে অভিনয় করে। সুমন আনোয়ারের পরিচালনায় ভিন্ন সব চরিত্রে অভিনয় করেই দর্শক তথা সমালোচকদের চোখে পড়েন নিশো। যদিও এখন সেই সুমন আনোয়ারই নিশোর কাছে শুটিংয়ের জন্য ডেট পান না। সে যাই হোক। নিশোকে কখনো দেখা যায় ভাড়াটে মাস্তান চরিত্রে, কখনো ডিস্টার্ব প্রেমিক, রোমান্টিক প্রেমিক, নেতা, পুরান ঢাকার বড়ভাই, বোকা প্রেমিক, করপোরেট চাকরিজীবী, মর্ডান ট্যাটুধারী প্রেমিক, ড্রাইভার, সৎ ছেলে, গ্রামের সাধারণ চরিত্রে, ডিজুস প্রেমিকসহ ভিন্ন রকম চরিত্রে। সম্প্রতি গাড়ির চালক হিসেবে সেরনিয়াবাত শাওনের ‘সিটি অব এরর’ নাটকে তাকে দেখা গেছে।

এই সময়ের শীর্ষ ও সবার্ধিক নাটকের অভিনেত্রী মেহজাবিন চৌধুরী। যে কোনো চরিত্রে তার অভিনয় যেন মানিয়ে যায়। কী প্রেমিকা চরিত্রে, কী গৃহিণী, পাগলি, বধূ, সরল কিশোরী, গ্রাম্য কিশোরীসহ বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ‘পতঙ্গ’ নাটকে দীর্ঘদিন ধরে অনাহারে থাকা নোংরা শাড়ি পরিহিত পাগলির চরিত্রে তার অভিনয় দর্শককে মুগ্ধ করেছে। ‘মায়া সবার মতো না’ নামের নাটকে স্থূলকায় এক সংগ্রামী নারী চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ভিক্ষারত এক বৃদ্ধার সাজে মেহজাবিনকে দেখা যায় ‘সিগনেচার’ নাটকে। ‘বড়ছেলে’ নাটকে সরল-সাধারণ প্রেমিকা চরিত্রে মেহজাবিনের অভিনয় দর্শককে মুগ্ধ করে।

বহুরূপী অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। নাটকে তার চরিত্রের বৈচিত্র্যতা চোখে পড়ার মতো। একজন পরীক্ষিত অভিনেতা তিনি। তিনি যে কোনো চরিত্রেই সহজেই মানিয়ে যান। ডাক্তার, চোর, প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধা, সার্ভিস হোল্ডার, অসহায় বাবা, প্রেমিক, রাখাল ছেলে, চোর জামাই, কলেজ স্টুডেন্ট, জ্ঞানী, প্রফেসর, কিপটা জামাই, বিয়ের পাত্রসহ অসংখ্য বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
জাহিদ হাসান মানেই নাটকে ভিন্নতা। ভিন্ন গল্প ও চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের আনন্দকে বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। পুরান ঢাকার চরিত্রে তাকে বেশি দেখা গেছে। ‘আরমান ভাই’, ‘আনিস ভাই’, ‘মতি ভাই’, ‘মফিজ’ নামেও পরিচিতি পেয়েছেন। নাটকের আরেকজন জনপ্রিয় ও সুদর্শন অভিনেতা অপূর্ব। ক্যারিয়ারে সাফল্যের পাল্লা অনেক ভারী। রোমান্টিক অভিনেতা হিসেবে সুপরিচিত হলেও বর্তমানে করেছেন ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে অভিনয়। ‘বড়ছেলে’ নাটকে বড়ছেলে ও নিরুপায় প্রেমিক চরিত্রে, বি ইউ শুভর ‘প্রস্থান’ নাটকে পাগলের চরিত্রে অভিনয় করে দর্শক প্রশংসিত হন। বান্নাহর ‘পুলিশ’ নাটকে পুলিশের চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন।
জনপ্রিয় অভিনেতা সজল। টিভি নাটকে তার ক্যারিয়ার দীর্ঘদিনের। অসংখ্য টিভি নাটক ও টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন। রোমান্টিক ধারা থেকে বেরিয়ে এসেছেন অনেক আগে থেকেই। তাই এই সময়েও তাকে দেখা যায় সিনজি ড্রাইভার, ইলেকট্রিক মিস্ত্রি, ক্রেজি প্রেমিক, অস্থির ছেলে, পুরান ঢাকার ভাই, নেতা, গ্যাংস্টারসহ বহুরূপী চরিত্রে। টিভি নাটকের খুবই পরিচিত মুখ আ খ ম হাসান। এমন কোনো চরিত্র নেই যে তিনি অভিনয় করেননি। গরু চোর, বাটপার, চিটার, শিক্ষক থেকে শুরু করে গ্র্যাজুয়েট, নাদান, নারী বিশেষজ্ঞ, বৌ পাগলসহ দর্শকনন্দিত চরিত্রে অভিনয় করেছেন। জনপ্রিয় নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী নাদিয়া আহমেদকে চরিত্রের প্রয়োজনে ভিন্ন ভিন্ন রূপে দেখা গেছে। ‘নানা ভাই’ নাটকে অভিনয় করেছেন নানির চরিত্র। শাহানাজ খুশি ভিন্ন ধারার ও চরিত্র দিয়ে দর্শক মুগ্ধ করেছেন। বড় মেয়ে, বৌ, বৃদ্ধা চরিত্রসহ অসংখ্য চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করেছেন। সিরিয়াস কমেডি চরিত্রে বেশি অভিনয় করেছেন। আরেকজন দর্শকনন্দিত অভিনেতা এফ এস নাঈম। অসংখ্য টিভি নাটক-টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে। কখনো দেখা গেছে রোমান্টিক চরিত্রে, কখনো পুরান ঢাকার মাস্তান বা ঐতিহাসিক কোনো চরিত্রে, চিত্রশিল্পী (বন্ধু হে আমার), অটিস্টিক (ইডিয়ট), ক্রেজি লাভার আর করপোরেট লুকে। মম মানেই ভিন্নতা। বান্নাহর ‘আশ্রয়’ নাটকে তার তাহসান-তিশার পালিত মায়ের চরিত্রে অভিনয় সবাইকে মুগ্ধ করে।