Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

শীত ফ্যাশনের হালচাল

সৈয়দ ইকবাল: এবারে শীতটা ভালোই জেঁকে বসেছে। এই শীতের সিজন ফ্যাশনেরও একটা সময়। তাই তো শীত এলেই দেশীয় ফ্যাশন হাউজ থেকে শুরু করে সব পোশাকের দোকানেই থাকে শীত পোশাকের বাহারি সব পসরা জমে ওঠে। বিভিন্ন শপিং মলে গেলে দেখা মিলছে বাহারি সব শীত পোশাকের। বাজারে ঘুরলেই দেখা মিলছে হালকা জিন্স বা গ্যাবাডিনে তৈরি জ্যাকেট। শীতে এগুলো দেখায় দারুণ স্টাইলিশ। পাতলা উলের সোয়েটার কিংবা ফুল সিøভ টি-শার্টও রয়েছে বাজারে। এগুলো একইসঙ্গে আপনাকে দেবে উষ্ণতা ও স্টাইল। শীতের সময় জ্যাকেট কিংবা সোয়েটারের সঙ্গে নানা স্টাইলের জিন্সের চলটাই সবচেয়ে বেশি। ভালো লাগবে ফর্মাল প্যান্টের সঙ্গেও। ফুল শার্টের ভেতরে একটি টি-শার্ট পরে নিলে মন্দ হয় না। সালোয়ার কামিজ পরা মেয়েদের জন্য রয়েছে লং জ্যাকেট, পঞ্চ। ফুলহাতা উজ্জ্বল রঙের লম্বা পাঞ্জাবিও আছে। যা চুড়িদার পায়জামার সাথে পরে তার ওপর একটা শাল জড়িয়ে নিলে ফ্যাশনও হবে, হবে আরামও। এই সময়ে তরুণীরা পছন্দ করছে মোটা কাপড়ের টপস, লেগিংস আর বাহারি ডিজাইনের কার্ডিগেন। শাড়ির ক্ষেত্রে ফুলসিøভ বøাউজ আর শাড়ির সাথে মিলিয়ে শাল জড়িয়ে হয়ে উঠতে পারেন অনন্য। টি শার্ট বা শার্ট পরলে উপরে পরতে পারেন হাতা কাটা সোয়েটার। অথবা একটু ঢিলেঢালা পুলওভার।

জ্যাকেট আর বেøজারের সংমিশ্রণে তৈরি নতুন ধরনের শীতের পোশাক এসেছে বাজারে, যা তরুণদের পছন্দের তালিকায়। অফিসের প্রয়োজনে বেøজার পরতে পারেন। তবে আগের মতো আর সাদা, কালো বা ছাই রঙের বেøজার নয়। এবার বেছে নিতে পারেন গাঢ় মেরুন, কালো হলুদের মিশ্রণ, পার্পেল রঙের বেøজার। এ ছাড়া হুডি জ্যাকেটও ধরে রাখছে হাল ফ্যাশনের আবেদন। আর মাফলার তো আছেই। ছেলে-মেয়ে সবার পছন্দের শীর্ষে উঠে এসেছে রঙিন মাফলার। শীতকাল হলো আঁটসাঁট চাপা জিন্স পরার উপযুক্ত সময়। এক্ষেত্রে গাঢ় রঙ এর প্রাধান্য দেয়া উচিত। বিভিন্ন রঙের শার্টের সাথে অল্প কিছু গয়না কিংবা গয়না না পরে কেবলমাত্র স্কার্ফ ব্যবহার করা যায়। স্কার্ফ এমন একটা ফ্যাশন অনুষঙ্গ, যা কি না শীত বা গ্রীষ্ম যে কোনো ঋতুতে যে কোনো পোশাককেই দারুণ আকর্ষণীয় করে তোলে। এই শীতে লেগিংসের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। ঢিলেঢালা সোয়েটারের সাথে লেগিংস আর পা ঢাকা জুতোয় দারুণ মানাবে যে কোনো তরুণীকেই। ভি আকৃতির টিশার্টের সাথে সোয়েটার আর একটা স্কার্ফ জড়িয়ে নিলেও দেখতে ভালো লাগবে।

সম্পর্কিত

এই গরমে ত্বকের যত্ন!

লাল সবুজের মেলা!

ফুলসিøভ শীতের ফ্যাশন

ছেলেদের শীতের ফ্যাশনে ফুলসিøভ পোলো শার্ট রয়েছে প্রথম সারিতে। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজগুলো বাজারে এনেছে সুতি কাপড়ের ফুল¯িøভ পোলো শার্ট। পাশাপাশি সিনথেটিক পোলো শার্টও রয়েছে। ক্যাজুয়াল পোশাক হিসেবে ফুলসিøভ পোলো টি-শার্ট কলেজ-ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা বেশি পছন্দ করছেন। এসব পোলো পরতে যেমন আরামদায়ক, তেমনি ডিজাইনেও রয়েছে বৈচিত্র্য। একই সাথে ব্যবহারেও রয়েছে সুবিধা। তাই এগুলো ধীরে ধীরে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। জিন্স, গ্যাবাডিন হোক অথবা ফরমাল প্যান্ট- সবগুলোর সাথেই ফুলসিøভ পোলো শার্ট চমৎকার মানিয়ে যায়। পোলো ফুলসিøভ টি-শার্টগুলোর প্রধান আকর্ষণ এর বৈচিত্র্যপূর্ণ গলার ডিজাইন- ইউ নেক, ভি নেক, ক্রিউ নেক, কলার নেক, রাউন্ড নেক বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন দেখা যায়। পোলো টি-শার্টের পাশাপাশি গ্রাফিক টি-শার্ট, হেনলে টি-শার্ট, পকেট টি-শার্ট, হুডেড টি-শার্ট, স্ট্রাইপ টি-শার্টও রয়েছে শীত-পোশাকের কালেকশনে।

শীত ফ্যাশনে বেøজার

এখন অনেকেই বেøজারকে ফরমাল পোশাক মানতে নারাজ। বয়স, অবস্থান ও রুচিভেদে নানা ডিজাইনের বেøজার যে কারও গায়ে প্রায়ই চোখে পড়ছে। অনেকে আবার অফিসিয়াল ড্রেস কোডের গÐি পেরিয়ে শীত নিবারণের ক্যাজুয়াল পোশাক হিসেবে বেøজার পরছেন। তরুণদের চাহিদা মাথায় রেখে এবার জ্যাকেট বা বেøজারেও এসেছে পরিবর্তন। বেøজারের কাপড়, প্যাটার্ন, বোতাম, রং ইত্যাদি বিষয়ে বৈচিত্র্যের ছোঁয়াও লেগেছে বেশ। জিন্স, চামড়া, সুতির বাইরে এবার নতুন এসেছে মখমলের কোট। জ্যাকেট বা বেøজারের ভেতরে আগে একটা সাধারণ কাপড় ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এবার সেখানে নকশার অংশ হিসেবেই দেখা যাচ্ছে বৈচিত্র্যময় কাপড়।

Fashion-1যেখানেই পরুন না কেন, বেøজারের কাটিং ও ফিটিংটা কিন্তু বেশি জরুরি। তাই অর্ডার দিয়ে তৈরি করে বা রেডিমেট যা-ই হোক না কেন, মাপ মতোই কিনতে হবে। কাঁধ ঝুলে যাওয়া যেমন চলবে না, তেমনি আবার হাত যেখানে শেষ তার থেকে আধা ইঞ্চির মতো শার্টের কাফ দেখা যাওয়া চাই। বেøজারের ফ্যাশনে এখন চলছে সিøম ফিট ফ্যাশন। দুই বা তিন বাটনের বেøজারই সবসময় চলছে বাংলাদেশে। তবে এক বাটনের বেøজারও পরছেন ফ্যাশন সচেতন অনেকে। নিচে রাউন্ড শেপটাই এখন সবার পছন্দ।

কাপড় কিনে পছন্দের ডিজাইনের বেøজার বা কমপ্লিট স্যুট বানাতে চাইলে যেতে হবে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড কিংবা এলাকা বুঝে ব্র্যান্ডের দর্জিবাড়িতে। বেøজারের কাপড় যাচাই-বাছাই করার অভিজ্ঞতা না থাকলে এক দরের দোকানগুলো থেকে কেনা ভালো। ফ্রপস, সিদ্দিক’স, টপটেন, ফেরদৌস, সানমুন, রেমন্ড এসব দোকানের সুনাম রয়েছে। বেøজার বানানোর মজুরি গুনতে হবে ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৮ হাজার টাকা। কাজের মান ও জনপ্রিয়তার ওপর ভিত্তি করে মজুরি কমবেশি হতে পারে।

আর তৈরি করা ভালো মানের বেøজার কিনতে হলে যেতে পারেন ইয়েলো, এক্সটাসি, ক্যাটস আই, ওয়েস্টেকস, ইনফিনিটি, এক্সটেসি, মেনজ ক্লাব, রিচম্যানসহ রাজধানীর বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে। এবার শীতে নানান ছাঁটের, নানা রঙের বেøজার এনেছে বাজারে এই প্রতিষ্ঠানগুলো। এ ছাড়া বসুন্ধরা সিটি, নিউমার্কেট, বঙ্গবাজারেও পাওয়া যাবে নানা ডিজাইনের বেøজার। সাধারণ ফ্যাশনেবল বেøজারগুলো দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে। মখমলের বেøজারগুলোর দাম পড়বে চার হাজার থেকে ছয় হাজার টাকা। খাদি কাপড়ের বেøজারগুলোর দাম কিছুটা কম, এক হাজার টাকা থেকে শুরু।

পথের ধারে শীতের পোশাক

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের কারণে বিশ্বখ্যাত অনেক ব্র্যান্ডের পোশাক তৈরি হয় এখানে। সামান্য ত্রæটি বা অন্য কোনো কারণে ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান যেগুলো বাতিল করে দেয়, সে সব পোশাক চলে আসে রাজধানীর বাজারে।

গোটা দুনিয়াতেই স্ট্রিট ফ্যাশনের চাহিদা আছে বেশ। বাংলাদেশের ফ্যাশন-সচেতন তরুণীরাও নিয়মিত ঢুঁ মারেন এসব বাজারে, বিশেষ করে শীতের পোশাকের খোঁজে। এসব বাজারের মধ্যে ঢাকা কলেজের উল্টো দিকের বদরুদ্দোজা মার্কেট, বঙ্গবাজার, নিউ সুপার মার্কেটের খ্যাতি বেশি। নিজের জন্য কম দামে সবচেয়ে সুন্দর পোশাকটি বেছে নেন ক্রেতারা। এর জন্য শুধু দরকার একটু বাড়তি সময় আর ফ্যাশনবোধ। এসব বাজার ঘুরলে আপনি পাবেন বিভিন্ন ব্র্যান্ডের অসাধারণ সব শীতের পোশাক।

শর্ট বেøজার, লং কোট, শর্ট কোট, ফুলসিøভ জ্যাকেট, সিøভলেস জ্যাকেট, উলের পোশাক, বেøজার, শ্রাগের মতো সোয়েটার, কোল্ড শোল্ডারের লম্বা সোয়েটার পাওয়া যাচ্ছে রাস্তার পাশের দোকানগুলোতে। আছে গোল গলার বা গলাবন্ধ ফুল হাতা শীতকালীন টপ, আছে পঞ্চও। বরাবরের মতো হুডিওয়ালা বা হুডিছাড়া সোয়েটার তো থাকছেই। শুধু আপনার যদি একটুখানি চলতি ফ্যাশন আর কাপড় সম্পর্কে ধারণা থাকে, তাহলে এসব বাজার থেকে নিশ্চিন্তে বেছে নিতে পারেন মনের মতো শীতের পোশাক।

পোশাক: রঙ বাংলাদেশ ও সিদ্দিক’স

মডেল: তানভীর, পুষন, তন্ময়, নিহন, বৃষ্টি ও শাহরিয়ার