Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

রাইজিংস্টার গান ২০১৬

বড় ভাইয়ের পথে ছোট ভাই

প্রয়াত সঙ্গীত শিল্পী খালিদ হাসান মিলুর ছোট ছেলে প্রীতম হাসান। তিনি মেধাবী একজন সঙ্গীত পরিচালক। গায়কীও দুর্দান্ত। তবে গাওয়ার চেয়ে গান সৃষ্টিতেই বেশি মনোযোগী। প্রীতম হাসান সঙ্গীত পরিবারে বড় হয়েছেন। ঘুম থেকে উঠে দেখতেন বাবা রেওয়াজ করতেন। সেটা দেখেই গানের প্রতি আগ্রহ জন্মায় তার। প্রীতমের গান শেখা বাবা খালিদ হাসান মিলুর কাছ থেকে। এরপর মায়ের কিনে দেওয়া পিয়ানো বাজানো  শিখেন প্রীতম হাসান। বড় ভাই প্রতীক হাসানের মতো প্রীতমও সঙ্গীতায়োজনের কাজ শেখেন সঙ্গীত পরিচালক জেকের কাছে। একসময় কাজটা আয়ত্তে আসে তার। এখন সঙ্গীতের আকাশে সুর নিয়ে খেলা করেন তিনি। ইতোমধ্যে প্রীতম গায়কি দিয়ে, তার কম্পোজিশন দিয়ে শ্রোতাদের মনজয় করতে সক্ষম হয়েছেন। গান গাওয়ার সকল অনুপ্রেরণার পেছনে রয়েছে তার মা-ভাই প্রতীক হাসান।

জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী ও কম্পোজার হাবিব ওয়াহিদের সহকারী হিসেবে বেশ কয়েক বছর কাজ করেছেন। ২০১২ সালে প্রীতমের সঙ্গীতায়োজনে প্রথম গান বের হয়। এরপর থেকে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক গান করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে প্রীতমের বেশ কিছু গান সিঙ্গেল আকারে প্রকাশিত হয়েছে। গানগুলো হলো- ‘মায়ার কোলে’, ‘মুখোশ’, ‘যাদুঘর’, ‘রঙিন কাচের চুড়ি’, ‘লোকালবাস’, ‘আসো মামা হে’ ইত্যাদি। ‘লোকালবাস’ ও ‘আসো মামা হে’ গান দুটির মিউজিক ভিডিও দর্শক শ্রোতাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে।

২০১৫ সালে প্রীতম প্রথম প্লেব্যাক করেন ‘রাজনীতি’ ছবিতে। এ ছবিতে ‘ঘরে ফিরে এলোরে ঘরের সনৱান’ শিরোনামের গানটি গেয়েছেন। আরও একটি গানে কণ্ঠ দেন তিনি। গান দুটির সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন প্রীতম হাসান নিজেই। এছাড়াও চলচ্চিত্রে প্রীতমের করা বেশ কিছু গান রয়েছে। বিজ্ঞাপনে জিঙ্গেল করছেন নিয়মিতভাবে। তার বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলগুলো বেশ প্রশংসিত হয়েছে। জিঙ্গেলগুলো হলো- প্রাণ মিঃ ম্যাংগো, এর আগে হাবিবের সহ সঙ্গীত পরিচালনা হিসেবে কাজ করেছেন ‘ম্যাক্সকোলা’, ‘চল বাংলাদেশ’, জাতীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে করা রবির জেগে উঠো বাংলাদেশ, জিপির ‘স্বপ্ন যাবে বাড়ি’ ইত্যাদি। আগামীর স্বপ্ন কী? এ প্রশ্নের উত্তরে প্রীতম বলেন, আমি আন্তর্জাতিক মানের একজন আর্টিষ্ট হতে চাই। বাউলদেরকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই।

মায়া ছড়ানো সানিয়া রমা

roma২০১৫ সালে ‘যার লাগিয়া’ মিক্সড অ্যালবামে ‘পাগল আমি’ গানটি গেয়ে রমার শুরুটা ভালোই হয়। সিডি চয়েজের ব্যানারে প্রকাশিত হয় সানিয়ার সলো অ্যালবাম ‘ডাগোর ডুগোর’। প্রথম একক অ্যালবামটি প্রকাশ পাওয়ার পর শ্রোতাদের কাছ থেকে অনেক ফিডব্যাক পেয়েছেন তিনি। ‘ডাগোর ডুগোর’ অ্যালবামের ‘দয়াময়’ ও ‘ডাগোর ডুগোর’ গান দুটি শ্রোতাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। এবছরের শেষের দিকে লেজার ভিশনের ব্যানারে প্রকাশিত হয়েছে সানিয়া রমার দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘মাটির গান’। সাতটি গান নিয়ে সাজানো হয়েছে এই অ্যালবামটি। এরই মধ্যে অ্যালবামের ‘দয়াময়’ গানটি বেশসাড়া ফেলেছে দর্শক- শ্রোতামহলে। নিজের প্রথম সলো অ্যালবাম প্রকাশ হওয়ার পরপরই জীবনের প্রথম চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দেন। সরকারি অনুদানে নির্মিত এই ছবির নাম ‘মায়া’। ছবির ‘তোমার ভেতরে যেতে যেতে ভেতর হয়ে গেছি’ শিরোনামের গানটিতে খালেদ মুন্নার সঙ্গে দ্বৈত কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন মহিদুল হাসান মন। বর্তমানে তিনি ‘রৌদ্রে ভরা ইস্টিশনে’ শিরোনামের একটি ফোক গানের কাজ করেছেন। আগামীর স্বপ্ন কী? জানতে চাইলে সানিয়া রমা বলেন, গান আমার সাধনা, আমি ভালো গান করে যেতে চাই।

এখন মেহেদীর সময়

Mahedi২০১০ সালে চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় রানার আপ হয়েছিলেন মেহেদী হাসান। সেটি সঙ্গীত জীবনের অন্যতম টার্নিং পয়েন্ট মনে করেন তিনি। ২০১৪ সালে এক পৃথিবী মিক্সড অ্যালবামে ‘মাহিয়া কেন কাছে আসনা’ গানটি দিয়ে সঙ্গীতানুরাগীদের নজরে আসেন মেহেদী। এরপর বেশ কয়েকটি মিক্সড অ্যালবামে কণ্ঠ দিয়েছেন। গত বছর গানচিল-এর ব্যানারে প্রকাশিত হয়েছে সেরা কণ্ঠ খ্যাত মেহেদী হাসানের প্রথম একক অ্যালবাম ‘আয়না ফিরে’। প্রথম একক অ্যালবাম প্রকাশ পাওয়ার পর শ্রোতাদের কাছ থেকে অনেক সাড়া পাচ্ছেন মেহেদী। এরই মধ্যে ‘আয়না ফিরে’ অ্যালবামের ‘আমি এক গানওয়ালা মেহেদী হাসান’, ‘অবহেলা’, ও ‘আয়না ফিরে’ গানগুলো শ্রোতাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। জীবনে প্রথম প্লেব্যাক করেন ২০১৪ সালে। ছবির নাম ‘মানে না মন মানে না’। এ ছবির টাইটেল গানটিতে সেরাকণ্ঠের আরেক শিল্পী লুইপার সঙ্গে দ্বৈত কণ্ঠ দেন তিনি। গানটির কথা ও সুর করেছেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। ওয়াহিদুজ্জামান ডায়মন্ড-এর নতুন ছবিতে ‘কতটা আড়াল হলে’ শিরোনামের গানটিতে এককভাবে কণ্ঠ দিয়েছেন মেহেদী। গানটির সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন বাসুদেব ঘোষ। সম্প্রতি ইমপ্রেস টেলিফিল্মের একটি ছবিতে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও বেশ কয়েকটি ছবিতে প্লেব্যাক করার কথা চলছে বলে জানান মেহেদী। বর্তমানে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের সঙ্গে মিউজিক বিষয়ে কাজ করছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সঙ্গীত বিষয়ক অনুষ্ঠান এবং স্টেজে পারফর্ম করে যাচ্ছেন নিয়মিত। অডিও, চলচ্চিত্র ও স্টেজ আপনি কোন মাধ্যমে গাইতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন? প্রশ্নের উত্তরে মেহেদী বলেন, অডিও মাধ্যমে সুবিধা হলো- এখানে নিজের ইচ্ছে মতো গান করা যায়। আবার চলচ্চিত্রের গান অনেক দিন বেঁচে থাকে। স্টেজে গান গাওয়ার মধ্যে রয়েছে অন্যরকম এক আনন্দ।

এগিয়ে যাচ্ছে আর্নিক

Arnikসূর্য সেজেছে আজকে ভোরে- এটি কণ্ঠ শিল্পী আর্নিকের প্রিয় একটি গান। এই গানটির মধ্য দিয়ে তিনি সূর্যের আলোয় আলোকিত হতে চান। ২০০৮ সালে ক্লোজআপ ওয়ান প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। এরপর থেকে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

২০০৯ সালে জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী কাজী শুভর ‘সাদামাটা’ অ্যালবামে ‘নীলিমা’ গানটি গেয়ে তার শুরুটা ভালোই হয়। এরপর ২০১০ সালৈ আরফিন রুমির ‘না বলা ভালোবাসা’ গানটি দিয়ে সঙ্গীতানুরাগীদের নজরে আসেন তিনি। গত বছরের শেষের দিকে জিপি মিউজিকের ব্যানারে প্রকাশিত হয় তার প্রথম সলো অ্যালবাম ‘বলি আবার’। এই অ্যালবামের ‘ মেঘলা দিন’, ‘জল ছবি’, ‘বলি আবার’, ‘অপূর্ণতা’, ‘তোমাকে দেখলে ও মাতোয়ারা মন’ গানগুলোর কথা লিখেছেন রবিউল ইসলাম জীবন, মাহমুদ মানজুর, ফয়সাল রাব্বিকীন, স্বপনীল ও প্রদীপ সাহা। আর সুর-সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন ফুয়াদ নাসের বাবু, বাপ্পা মজুমদার, সুমন কল্যাণ, মাহমুদ সানী, প্রতীক হাসান ও ডিজে আকস। প্রথম একক অ্যালবামটি প্রকাশ পাওয়ার পর শ্রোতাদের কাছ থেকে অনেক ফিডব্যাক পেয়েছেন তিনি। ‘বলি আবার’ অ্যালবামের ‘মেঘনা দিন’ জল ছবি  মাতোয়ারা মন, ‘বলি আবার’, গানগুলো শ্রোতাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। এরই মধ্যে ‘মেঘলা দিন’ বলি আবার গানের  মিউজিক ভিডিও দুটি দর্শক শ্রোতাদের কাছে বেশ প্রশংসিত হয়েছে। আর্নিক এখন স্টেজ শো নিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিজ্ঞাপনে জিঙ্গেল করছেন নিয়মিত ভাবে। তার কণ্ঠে বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলগুলো বেশ প্রশংসিত হয়েছে। জিঙ্গেলগুলো হলো- ‘আরসিকোলা’, ‘লিজান’, ‘রাজ’, ‘টিভিএস এর থিম সং’, ‘র‌্যাংস এর থিম সং’, ‘রবির আলো রাঙায় বাংলাদেশ’ ইত্যাদি। গান দিয়ে সকলের কাছে পরিচিতি পেলেও বৈশাখী টিভি, বাংলাভিশন, দেশ টিভি প্রভৃতি চ্যানেলের সঙ্গীত বিষয়ক অনুষ্ঠান উপস্থাপনায়ও দেখা গেছে তাকে। আগামীর স্বপ্ন কী? জানতে চাইলে আর্নিক বলেন, শুদ্ধ ও পরিচ্ছন্ন গানের সঙ্গে  থাকতে চাই।

মুক্তাঞ্চলে সানি!

Sani২০১২ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কনসার্টে এই হৃদয়, আনন্দ ভৈরবী, ভালোবাসা নিস। এই গানগুলো গেয়ে দর্শক-শ্রোতাদের নজরে আসেন। এরপর নিজের লেখা, সুর করা বেশ কিছু গান গেয়েছেন তিনি। তবে তার স্বপ্ন ছিল সলো অ্যালবাম প্রকাশ করার। গত বছর ঈদুল আজহায় মুঠোফোন তারপর এয়ারটেল থেকে প্রকাশিত হয় সানির প্রথম সলো অ্যালবাম সানির মুক্তাঞ্চল। কণ্ঠ দেয়ার পাশাপাশি অ্যালবামের চারটি গানের কথা ও সুর রচনা করেছেন সানি নিজেই। সঙ্গীতায়োজন করেছেন আরাফাত মহসীন। এরই মধ্যে ‘সানির মুক্তাঞ্চল’ অ্যালবামের ‘এই হৃদয়’, আনন্দ ভৈরবী গানগুলো শ্রোতাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা পায়। লোকাল প্রেমের গান, এই হৃদয় গান দুটির মিউজিক ভিডিও বেশ প্রশংসিত হয়েছে। ঢাকা শহরে বেড়ে উঠেছেন সানি। নিজেই গান লিখতেন, সুর করতেন, আবার কণ্ঠও দিতেন। গাইতে গাইতে এখন সঙ্গীতের আকাশে সুর নিয়ে খেলা করেন তিনি। ইতোমধ্যে সানি তার গায়কী দিয়ে আধুনিক সঙ্গীত শ্রোতাদের মন জয় করতে সক্ষম হয়েছেন। সানির গান গাওয়ার অনুপ্রেরণার পেছনে রয়েছে তার মা।

অ্যালবামের বাইরে নাটকেও কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। গিয়াসউদ্দিন সেলিমের একটি নাটকে ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি গানটি গেয়েছিলেন’। আশুতোষ সুজন পরিচালিত থ্রি সিস্টার ধারাবাহিক নাটকের থিম সংটিও তার গাওয়া। বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলেও পিছিয়ে নেই সানি। ২০১৫ সালে সানি প্রথম ‘মোজো’ বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলে কণ্ঠ দেন। তার গাওয়া জিঙ্গেলগুলো হলো- আরএফএল, বাংলালিংক, এয়ারটেল, এপেক্স, ইস্পাহানি চা, ইস্পাহানি পানি, এখানেই ডটকম ইত্যাদি। এই সঙ্গীত শিল্পী জিঙ্গেলের কাজটা করে যাচ্ছেন নিয়মিত। ইতোমধ্যে সানি প্লেব্যাকের কাজটাও সেরে ফেলেছেন। বর্তমানে তিনি নতুন একটি অ্যালবামের কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন। অ্যালবামটি প্রসঙ্গে সানি বলেন, আমার দ্বিতীয় অ্যালবামের কাজ চলছে।

গানেই থাকতে চায় সাবা

Sabaপৃথিবী অনেক বড়/যদি বিশ্বাস করো/ হৃদয় আমার আরো বড়/হোক না জীবন ক্ষুদ্র/তোমার ভালোবাসার এক ফোঁটা জল/ এক মহা সমুদ্র… গীতিকার দেলোয়ার আরজুদা শরফের এই মিষ্টি প্রেমের অমর বাণীতে হৃদয়স্পর্শী সুরের মায়াজাল ছড়িয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পেয়েছেন পরিচিতি। তিনি আর কেউ নন, অসংখ্য তরুণের কোমল হৃদয়ে ভালোবাসার মুগ্ধতা ছড়ানো শিল্পী সাবরিনা হক সাবা। ২০১০ সালে মার্কস অলরাউন্ডার প্রতিযোগিতায় চতুর্থ হয়েছিলেন। শুরুতেই সাবা আক্ষেপ করে বলেন, অন্যান্য সঙ্গীত প্রতিযোগিতা থেকে বের হওয়া শিল্পীরা নানা রকমের ব্যাকআপ পান। আমি কোনো ব্যাকআপ পাইনি। তার প্রথম একক অ্যালবামের বেশ কিছু গান শ্রোতা প্রিয়তা পেয়েছে। তবে শ্রোতারা সাবাকে চিনেছে আসিফ আকবরের সঙ্গে গাওয়া ‘পৃথিবী অনেক বড়’ গানটি দিয়ে। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ডজন খানেক মিক্সড অ্যালবামে গেয়েছেন। গেয়েছেন ভারতের জনপ্রিয় কণ্ঠ শিল্পী জুবিনের সঙ্গেও। ২০১৫ সালে সঙ্গীতার ব্যানারে প্রকাশিত হয়েছে তার দ্বিতীয় সলো অ্যালবাম। অনলি সাবা-২। এ অ্যালবামের ‘সাগরের সব ঢেউ’, ‘চাঁদকে বলে দাও’, ‘ভালোবাসা চাই’, ‘চাঁদের আলো’, ‘পাগল মন’, এবং ‘মনের অন্তরে’ গান ছয়টিতে সাবার সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন আসিফ আকবর, বেলাল খান, এস আই টুটুল, কাজী শুভ, তৌসিফ ও ইলিয়াস। ‘জলের উঠান’, ‘জলসা ঘর’, ‘এসো না’, ‘শুভ জন্মদিন’ গানগুলো সাবার একক। ইতোমধ্যে অনলি সাবা-২ অ্যালবামের বেশির ভাগ গানগুলো শ্রোতাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে। এরই মধ্যে ‘সাগরের সব ঢেউ’, ‘শত জনম’, ‘পাগল পাগল মন’, ‘ভালোবাসার রোদ’, ‘জনম ধরে’, ‘জনম জনম তোমাকে’. ‘সুখ তারা’, ‘আমার প্রিয় বাংলাদেশ’ গানগুলোর মিউজিক ভিডিও শ্রোতাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা পায়। সুর সপ্তক একাডেমিতে ফেরদৌস আরা ও নীলিমা দাশের কাছে গানের তালিম নিয়েছেন সাবা। ক্ল্যাসিক্যাল শিখেছেন অনিল কুমার সাহার কাছে। সাবার সঙ্গীতে ভিত্তিটা বেশ শক্ত। তারপরও নাচ, গান, অভিনয়, উপস্থাপনা, আবৃত্তি অনেক কিছু করছেন। তিনি গাইবেন, নাকি অলরাউন্ডার হবেন? সব কিছুই শিখেছি। মডেলিং ও অভিনয়ও করার অনেক অফার পেয়েছি। কিন্তু আমি গান নিয়েই থাকতে চাই। আমি এমন কিছু গান করতে চাই, যে গান মানুষের সুখ-দুঃখের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে থাকবে। আমি সব ধরনের গান করতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।

গানের বৃষ্টি…

Bristiযখন সবেমাত্র পঞ্চম শ্রেণিতে পড়েন তখনই জীবনের প্রথম মৌলিক গানে কণ্ঠ দেন বৃষ্টি। ‘রংধনু’ শিরোনামের একটি মিক্সড অ্যালবামে ‘মা’ ও ‘বিভীষিকা’ শিরোনামের দুটি গান প্রকাশ পায় তার। ২০১৩ সালে এসএ টিভি আয়োজিত বাংলাদেশি আইডল প্রতিযোগিতার শীর্ষে সাতে জায়গা করে নেন বৃষ্টি। এরপর বিভিন্ন জায়গা থেকে ডাক পেতে থাকেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ২৪টি মিক্সড অ্যালবামে গান গেয়েছেন।

উল্লেখযোগ্য অ্যালবামগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশি আইডলের শিল্পীদের নিয়ে করা ভলিউম-১, প্রথম ভালোবাসা, ভলিউম-২, ভালোবাসি তোমায়, আজ ভালোবাসো না, বন্ধন, পোড়া চিঠি, স্বপ্ন ছায়া, ছুটির ঘণ্টা ইত্যাদি। এখন পর্যন্ত একটি মাত্র মিউজিক ভিডিওতেই দেখা গেছে বৃষ্টিকে। ‘আমি নেই আমাতে’ শিরোনামের এই গানে তার সঙ্গে দ্বৈত গেয়েছেন জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী ইমরান। ‘ভালোবাসার দিনে’ নাটকের টাইটেল গান গেয়েছেন। কয়েকটি থিম সংয়েও শোনা গেছে তার কণ্ঠ। যেমন- বিটিভির ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান পরিবর্তন এবং অন্যমেলা। এরই মধ্যে প্লেব্যাকেও অভিষেক হয়েছে বৃষ্টির। ইফতেখার চৌধুরীর ‘ প্রেমলীলা’ চলচ্চিত্রে গেয়েছেন মন্টির সঙ্গে। এছাড়া রাফাতের সঙ্গে গাওয়া একটি গান কলকাতার ছবিতে দেখা যেতে পারে বলে জানান তিনি। প্রায় ১২টির মতো বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলে কণ্ঠ দিয়েছেন বাংলাদেশি আইডলের এই গায়িকা। জিঙ্গেলগুলো হলো- ‘মেরিডিয়ান চিপস’, ‘যমুনা ক্যান’, ‘প্রাণ’ ইত্যাদি।

এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে সঙ্গীতার ব্যানারে প্রকাশিত হয় বৃষ্টির প্রথম একক অ্যালবাম। বৃষ্টি উপস্থাপনাও করেন। এশিয়ান টিভির এশিয়ান মিউজিক সপ্তাহে দুই দিন প্রচারিত হয় তার উপস্থাপনায়।

কম্পোজার হওয়ার স্বপ্ন!

Arafat-Mohshinআরাফাত মহসীন এ প্রজন্মের জনপ্রিয় কম্পোজারদের মধ্যে একজন। ইতোমধ্যে বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেল, অডিও অ্যালবাম এবং চলচ্চিত্রের গানে নিজেকে যোগ্য প্রমাণ করেছেন। ২০১১ সালে এয়ারটেল থেকে প্রকাশিত হয় আরাফাতের প্রথম অ্যালবাম আরাফাত মহসীন ফিচারিং ‘পলবাশা’। এপর বাজারে আসে তার দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘স্টুডিও ফিফটি এইট এন্ড সিঙ্গারস’। ২০১০ সালে আরাফাত প্রথম বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলে মিউজিক করেন। জিঙ্গেলটি ছিল বাংলালিংকের রেমিটেনস। এরপর এয়ারটেলের ময়না’ বিজ্ঞাপনটি ছিল তার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট। এখনো পর্যায় এয়ারটেলের আকাশ থেকে নেমে এলো ছোট্ট একটি ময়না সবার মুখে মুখে শোনা যায়। এরপর থেকে একের পর এক জিঙ্গেল তৈরি করে যাচ্ছেন তিনি। তার উল্লেখযোগ্য জিঙ্গেলের মধ্যে রয়েছে- রবির ফুরিয়ে যায়, সামার গিলে খায় মোজো, টেংগো আমার চুমক, রবির ইউয়ন্ডার, বাংলালিংক, আরএফএল, ইস্পাহানী চা, এখানেই ডটকম ইত্যাদি। বর্তমানে বেশ কিছু জিঙ্গেলের কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন। গত বছর আরাফাত মহসীনের সঙ্গীতায়োজনে এয়ারটেল থেকে প্রকাশিত হয় ‘সানির মুক্তাঞ্চল’ অ্যালবামটি। অডিও অ্যালবাম, বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলের বাইরে তিনি চলচ্চিত্রেও কাজ করেছেন। রেদওয়ান রনির আইসক্রীম সিনেমার ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকসহ সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন। তার সঙ্গীত পরিচালনায় ফোক সম্রাজ্ঞী মমতাজ গেয়েছেন। কারে দিবা মন, অর্ণব গেয়েছেন বোকাচাঁদ ও তাহসান কণ্ঠ দিয়েছেন ভুল ভালোবেসে। আগামীর স্বপ্ন কী? জানতে চাইলে আরাফাত বলেন, ভবিষ্যতে আমি প্রতিষ্ঠিত একজন কম্পোজার হতে চাই।

শারমীনের বাবা হুমায়ূন সরকার একজন গায়ক। গ্রামে গ্রামে ঘুরে গান করেন। তিনি চাননি মেয়ে তার গানে আসুক। ময়মনসিংহের এক পালায় দেড় ঘণ্টা গাইলেন হুমায়ূন। আর পুরোটা সময় বাবার গানের তালে নেচে বেড়ালেন চার বছরের মেয়েটি। কেউ একজন ভিডিও করল সেটা মেয়ের ভিডিও দেখে সিদ্ধান্ত বদল করেন বাবা। মেয়ের কণ্ঠে তুলে দেন নিজের গান। মেয়ের মধ্যে নিজের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। তার স্বপ্ন বৃথা যায়নি। গতবছর আড়ং ডেইরি চ্যানেল আই বাংলার গান প্রতিযোগিতায় হাজার হাজার প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে শারমীন জিতে নেন সেরার মুকুট।

বাংলার গানে সেরা হওয়ার অনুভূতি ব্যক্ত করে শারমীন বলেন, আমার ভেতরে আত্মবিশ্বাস ছিল এই প্রতিযোগিতায় একটা স্থান করে নিতে পারব। আড়ং ডেইরি চ্যানেল আই বাংলার গানে চ্যাম্পিয়ন হতে পারাটা সৌভাগ্যের ব্যাপার। সবারই একটা স্বপ্ন থাকে। তেমন আমারও স্বপ্ন ছিল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। সেই স্বপ্নটা পূরণ হলো বাবার জন্য। আমার গানের পেছনে বাবার অবদান সবচেয়ে বেশি। তার কারণে আমি এতদূর আসতে পেরেছি। বাবা যখন আমার জন্য এই প্রতিযোগিতার নাম লেখান, তখন আমাকে বলেছিলেন, এইবারই শেষ। এরপর আর কোনো প্রতিযোগিতায় তোমারে পাঠাবো না। আমি বাবার কথা রাখতে পেরেছি। এটাই সবচেয়ে বড় আনন্দ আমার। আমি খুব ভাগ্যবান চ্যানেল আই-এর মত্যে একটি শীর্ষস্থানীয় চ্যানেলের লোক সঙ্গীতের রিয়েলিটি শোতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছি। চ্যানেল আই ও আড়ং ডেইরির কাছে আমি ঋণী। গান নিয়ে আমার স্বপ্ন অনেক বড়। আমি মমতাজ ম্যাডামের মতো ফোক শিল্পী হতে চাই। ভালো কিছু গান গেয়ে মানুষের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই।