সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2001-2021 - আনন্দ আলো
একেক মানুষের আবেগের প্রকাশ একেক রকম। কেউ প্রেমিককে দুরন্ত দেখতে পছন্দ করে, কেউ পছন্দ করে রোমান্টিক প্রেমিক আবার কেউবা পছন্দ করে প্রেমিককে দায়িত্বশীল হিসেবে দেখতে যে কী না তাকে আগলে রাখবে সমস্ত ঝড়ঝাপটা থেকে। চলচ্চিত্র অভিনেত্রী মাহিয়া মাহীর ক্ষেত্রে কোনটি ঘটেছে? মাহিয়া মাহী তার টাইমলাইনে লিখেছেন… ‘কোন এক সন্ধ্যাবেলায় তুমি আমার প্রেমিক থেকে বাবা হয়ে যেও। আমি তোমার বুড়ো আঙুলটা ধরবো। ’
আহ! আমার বাংলা ভাষা!
নিজের ভাষায় লিখতে না পারার কষ্ট তারাই বোঝে যারা দেশের বাইরে থাকে। আবার নিজের ভাষা বলতে না পারারও যন্ত্রণা অপরিসীম। কণ্ঠশিল্পী কৃষ্ণকলি তার ফেসবুকে লিখেছেন…
‘বহু দিন পর বাংলায় লিখলাম। ছোটো বেলায় মায়ের সাথে পশ্চিমবঙ্গে মায়ের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে, সাতদিন পর আনন্দে কেঁদেছিলাম, বাংলাদেশের বাংলা শুনব বলে। ’
এ কোন গাড়ি!
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী
কত স্বজনের রক্তে স্নাত আমাদের স্বাধীন দেশ বাংলাদেশ। কিছু ঘটনা, কিছু অঘটনের কারণে মানুষ কিছুটা বিরক্ত। দোষটা কার? চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী লিখেছেন…
‘এইসব খুনাখুনি, লাশ, পিতার ঘোলা চোখ, রক্ত, ঘৃণার ব্যবসা, কান্না, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি নিয়েই কি চলবে আমাদের এইসব দিনরাত্রি? কোন গাড়িতে চড়ে বসলো, বাংলাদেশ?’
বাহ! কী ট্রাফিক জ্যাম
ট্রাফিকে আটকে থাকার সময়ে তোলা প্রাসঙ্গিক একটি সুন্দর ছবি পোস্ট করে নিজের মনের কথা ব্যক্ত করেছেন অভিনেতা ইরেশ যাকের… ‘ভাই আমারে এইহানেই নামায়া দেন! আমি আর এই ট্রাফিক নিতে পারতেসি না!’
ভ্রমণ বিষয়ক একটি গল্প
শাকুর মজিদ
জীবনের প্রথম কোন অনুভূতির শ্রেষ্টত্বের সাথে পরবতর্ী কোন সময়ের তুলনা করা যায় না। প্রথম সবকিছুতেই মানুষের উচ্ছ্বাস থাকে আকাশ সমান। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শাকুর মজিদ বহু দেশ ঘুরেছেন। ভ্রমণ নিয়ে তথ্যচিত্র বানিয়েছেন। তারপরেও প্রথম ভ্রমণের অভিজ্ঞতা তার কাছে এখনো অম্লান। ফেসবুকে জানিয়েছেন তার প্রথম বিদেশ ভ্রমণের আনন্দ উচ্ছ্বাসের কথা…
‘প্রথম ভ্রমণ। ১৯৯০ সালের কথা। বুয়েটের আর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্টে সিনিওর ক্লাসের ভাইদের সঙ্গে আমার বেশি খাতির। তাদের একজন কাজী এম আরিফ আমাকে বললেন কলকাতা যাবি নাকি? সেমিনার আছে, কলকাতার ৩শ’ বছরপূর্তি।
আমি রাজি। আমার পাসপোর্ট আছে, এবার ভিসা লাগে। ভিসা করাতে হয় ধানমন্ডির ভারত দূতাবাস থেকে। আমি ৫০ টাকা খরচ করে পাসপোর্টে ডলারের এনডোর্সমেন্ট করিয়ে পাসপোর্ট, ছবি নিয়ে চলে যাই। ওখানে অনেক দালাল আছে। একশো টাকা দিলে সব করে দেয়। পরদিন ভিসা। একশো টাকা খরচ না করতে চাইলে নিজে লাইনে দাঁড়াও, ফরম কেনো, ফিলাপ করে জমা দাও, রশিদ নাও, আবার পরদিন এসে লাইন ধরে রসিদ দেখিয়ে ভিসাসহ পাসপোর্ট ফেরত নাও।
একশ’ টাকার অনেক দাম আমার কাছে। আমি নিজে ফরম ফিলাপ করতে গিয়ে দেখি, কলকাতার কোনো পরিচিত লোকের নাম ঠিকানা দিতে হবে। বিপদে পড়ি। কার নাম দেব? আমিতো কাউকে চিনি না।
আমি কয়েক সেকেন্ড চিন্তা করলাম। যে কনফারেন্সে যাচ্ছি, তার ঠিকানা সবাই দিয়েছে। কিন্তু আমি তো সেসব নিয়ে আসিনি। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম লিখে দেশ পত্রিকার ঠিকানা বসিয়ে দিলাম। পরদিন ভিসাসহ পাসপোর্ট নিয়ে আসি। এবার যশোরের বাসে ওঠার পালা।
যশোর থেকে বেনাপোল, বেনাপোল ছেড়ে যখন হরিদাসপুর এসে পড়ি, শুনি ইন্ডিয়া এসে গেছি। কিন্তু কোথায় ইন্ডিয়া? দেখি এ তো বাংলাদেশেরই মতো সব কিছু। সে রকম মাটি, রাস্তা, গাছপালা, ঘরবাড়ি। প্রথম যে তফাতটুকু চোখে এলো, তা ঘরের চাল। ঘরের চালে আমরা টিন ব্যবহার করি, ওখানে মাটির টালি। যশোর রোডের উপর দিয়ে আমাদের ভ্যানগাড়ি ছুটে চলে। আমরা মালামাল নিয়ে ভ্যানের উপর বসে পড়ি। দু’পাশে বড় বড় গাছ। গাছের ছায়া পড়েছে ভাঙাচোরা পুরনো পিচঢালা পথের উপর। খানিক চলার পর এসে নামি বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে এসে নামি নিউ মার্কেটের কাছে।
কলকাতার সদর স্ট্রিট দেখা দিয়েই শুরু হয়েছিল কলকাতার আমার প্রথম প্রভাত। ডরমেটরি লজ টাইপের সস্তার হোটেল মারিয়া’তে জন প্রতি কুড়ি টাকায় আমাদের থাকার ব্যবস্হা হয়েছিল। এক কামরায় ৮ জন। বাহ! সে বড়ই মজার স্মৃতি।
সদর স্ট্রিট দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আমরা কলকাতা যাদুঘরের কাছে যেতাম। সেখান থেকে বাস নিয়ে যেতো পাঁচতারা হোটেল তাজ বেঙ্গল-এ। আমাদের কাজ অডিটরিয়ামের আসন ভর্তি করে রাখা আর বক্তৃতা শোনা। নিজের দেশের বক্তাদের বক্তৃতা শেষ হলে জোরে জোরে তালি দেয়া। কনফারেন্সে ট্যাগ বুকে লাগিয়ে, মাগনা পাওয়া চটের ব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে ঘুরে বেড়ানোই আমাদের সুখ। সেইতো প্রথম কলকাতা, প্রথম পাঁচতারা হোটেলের ঘ্রাণ। ’
ক্যামেরা ভীতি
প্রকৃতিবিদ ইনাম আল হক ঘুরে বেড়ান বনে বাদাড়ে। উদ্দেশ্য বনের বাসিন্দাদের সাক্ষাত লাভ করা। ভিনগ্রহের প্রাণী ভেবে সেখানকার অনেক বাসিন্দা ভয়ে কুঁকড়ে থাকে। ইনাম আল হক ফেসবুকে তেমনই অনুভূতির কথা লিখেছেন…
‘সাতছড়ি বনের এই শিশু আমাকে দেখে ভয় পেয়ে মায়ের কোলে আশ্রয় নিয়েছে। অস্ত্র সন্দেহে ক্যামেরাকে ভয় পাচ্ছে ভেবে আমি তা আড়াল করলাম। কোন কাজ হল না; মা ও শিশু কেউই আমাকে নিকট আত্মীয় ও আপনজন জেনে শঙ্কামুক্ত হল না। বেচারাদের কষ্ট না বাড়িয়ে তাড়াতাড়ি চলে এলাম। ’
ওমর সানীর প্রার্থনা
এখন যারা সেলিব্রেটি তাদের কিশোর কিংবা তরুণ সময়ের উজ্জ্বল চোখে কেউ কেউ ছিলেন দুর্দান্ত সেলিব্রেটি। সেই সেলিব্রেটিকে একনজর দেখার জন্য কত কিছুই না করেছেন! এমনই অনুভূতির কথা ফেসবুকে লিখেছেন চিত্রনায়ক ওমর সানী…
‘আমি এই মুহুর্তে সাভারে ডিপজল মামার বাড়িতে শুটিং করছি। হঠাৎ দেখি মোহসীন ভাইয়ের আগমন, আমি স্তম্ভিত। আমার তরুণ বয়সের সুপারস্টার ফুটবলার মোহসীন ভাই যিনি তৎকালীন বাংলাদেশি ফুটবলের যাদুকর গোলকিপার। যাকে এক নজর দেখার জন্য আমি বেকার যুবক সেই সময় গেটম্যানকে ৫০ টাকা ঘুষ দিয়েছিলাম। তখনকার একজন তরুণ ফুটবলার হিসেবে আমি তার অন্ধ ভক্ত ছিলাম আর সবসময়ই তার খেলা আমাকে ভাবাতো এবং শেখাতো।
বহুদিন তার কোন প্রকার খোঁজখবর না পাবার পর, আজ সুদীর্ঘ প্রায় ১৮ বছর পর তার সাথে আমার এখানে হঠাৎ দেখা। আমি সত্যিই আবেগে আপ্লুত কারণ আত্মার পরম আত্মীয় মোহসীন ভাই এখন আমার পাশে। তার কাছেই জানতে পারলাম তিনি নাকি এখন স্বপরিবারে কানাডায় স্হায়ী হয়েছেন, সত্যিই বাংলাদেশে আমরা কোন গুণি মানুষের কদর করতে পারিনা; না হলে মোহসীন ভাইয়ের মত মহা প্রতিভাবান ফুটবলার কে বিদেশে স্হায়ী হতে হয়না। তাদের মত ফুটবলারকে, দেশের ফুটবলের উন্নয়নের জন্য কাজে লাগানো উচিৎ। হে আল্লাহ তুমি তাকে এবং তার পরিবারকে সুস্হতার সাথে সুখে রাখো। ’
এ কেমন অভিমান!
মানুষের মনের কথা বলার জায়গা লাগে। আর ক্ষোভ প্রকাশেরও জায়গা লাগে। যখন সেটা থাকেনা তখন কী করে মানুষ? অভিমান করে। নৃত্যশিল্পী ওয়ার্দা রিহাব তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন…
‘এই দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি বিন্দুমাত্র ভালোবাসা নেই আর। যদিও এতে কারোই কিছু আসে যায় না। আকাশের গায়ে থুতু…। ’
একটা দিন ভালোভাবে যাওয়া মানেই…
জীবনে দুঃখ আসবে, মানুষ জরাগ্রস্হ হবে তারপরেও কোন অদৃশ্য শক্তিবলে উঠে দাঁড়ানোর শক্তি ও সাহস রাখতে হবে নিজের ভেতরে। সঙ্গীতশিল্পী প্রীতম আহমেদ ফেসবুকে লিখেছেন…
‘মানুষের জীবনটা খুব অল্পদিনের তাই আমার জীবনে যত খারাপ সময়ই আসুক না কেন আমি চেষ্টা করি তা হাঁসিমুখে মোকাবেলা করতে। একটা দিন ভালো যাওয়া মানে একটু খানি ভালোভাবে বাঁচা। কখনো কখনো আমি নিজের সাথেই নিজে মজা করি নিজেকে খুশি করার জন্য, আপনি ?’
ভিসা বিষয়ক আসিফের ক্ষোভ!
ভিসাজনিত জটিলতা যে কী বিরক্তিকর হতে পারে সেটা বোধ হয় যারা ভারতের ভিসার জন্য অ্যাপ্লাই করেছেন তারাথঢ টের পেয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে টের পেয়েছেন সঙ্গীত শিল্পী আসিফ। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন…
‘২০০৪ সালে ভারতীয় হাই কমিশন আমার পাসপোর্ট আটদিন আটকে রেখে ভিসা দেয়নি। গত এগারো বছর ভিসা চাইনি, প্রয়োজনবোধ করিনি কখনোই। এবার ভারত থেকে সম্মানজনক দাওয়াতপত্র পেয়ে হাই কমিশনে গিয়েছিলাম ভিসার জন্য। পাঁচটি পাসপোর্টসহ যাবতীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছি। এবারই প্রথম কাবিননামা দিলাম, বলেছি প্রয়োজনে ডেথ সার্টিফিকেট দেয়া হবে। এগারো বছর পর দীর্ঘ তেরোদিন পাসপোর্ট রেখে দিয়ে চৌদ্দদিনের মাথায় প্রদর্শিত হল ভারতীয় হাই কমিশনের ব্লক বাষ্টার সিনেমা-‘এখানে প্রস্রাব করা নিষেধ’। এখানে নায়ক ভিলেন দুটোই আমি, ওরা টিকেটের কালোবাজারি মাত্র। দাওয়াতের মর্যাদা ভারতীয় হাইকমিশন বুঝবে না, এটা একটা স্রেফ ব্যবসা কেন্দ্র। এবারো ভিসা না দেয়ার কারণ ব্যাখ্যা করা হয়নি, তবে আদায় করা হবে। গত কয়েকদিন শরীরটা মোটেও ভাল যাচ্ছেনা, এবার মেজাজটাও খিঁচড়ে গেলো। আমি অপমানিত, ক্রোধান্বিত, বিরক্ত। ভারতীয় হাইকমিশনের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করছি। পরের বার ভিসা বাড়ি এসে দিয়ে যেতে হবে। ভারতীয় বন্ধুরা যারা ভালোবেসে দাওয়াত দিয়েছেন আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। এবার শুরু হবে আসল লড়াই। ’