Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

মাশরাফির জন্য ভালোবাসা!

মামুনুর রহমান
বিদেশে নয়, দেশের মাটিতেই ক্রিকেট জীবন থেকে অবসর নিবেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন সবার প্রিয় মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। লন্ডনে ইন্টার পার্লামেন্টারি ওয়ার্ল্ড কাপ ক্রিকেট উপলক্ষে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। প্রাসঙ্গিক ভাবেই মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার কথা গুরুত্বের সাথে উঠে আসে। নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, ক্রিকেট থেকে মাশরাফীর অবসর নিয়ে কথা উঠেছে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি বিদেশে নয় দেশের মাটিতেই আড়ম্বরপুর্ণ পরিবেশে ক্রিকেট থেকে মাশরাফীর বিদায় নেওয়া উচিৎ। এজন্য যা-যা করা দরকার আমরা সেটা করব। নাজমুল হাসান পাপন বলেন, বোলার কিংবা পারফরমার হিসেবে নয় বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়াটাই ছিল মাশরাফীর মূল দায়িত্ব। খেলোয়াড় হিসেবে তো বটেই অধিনায়ক হিসেবেও যদি ধরেন মাশরাফীর বিকল্প খুঁজে পাওয়া মুশকিল। আমি সব সময় একটা কথা বলি, দুটো প্লেয়ারের বদলী আমাদের নেই। প্লেয়ার হিসেবে সাকিব আর অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফী। এ দু’জনের বদলি পাওয়া কঠিন।
আজ হোক আর কালই হোক বিশ্ব ক্রিকেটে মাশরাফীর যুগ শেষ হতে চলেছে একথা বলাই যায়। যদিও মাশরাফী ক্রিকেটে থাকবেন না এটা মেনে নিতে অনেক কষ্ট হবে দেশের কোটি কোটি ক্রিকেট প্রেমী মানুষের। কারণ শারিরীক নানান সমস্যাকে তুড়ি মেরে একজন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা দেশের ক্রিকেটের জন্য যে অবদান রেখেছেন তা কিংবদন্তী গল্প হয়ে থাকবে। একথা সত্য, মাশরাফী যে ধরনের শারিরীক সমস্যা নিয়ে বছরের পর বছর ধরে ক্রিকেট খেলেছেন অন্য কারও পক্ষে তা মোটেই সম্ভব ছিল না। এবার বিশ্বকাপ ক্রিকেট চলাকালেই পায়ের ব্যান্ডেজ বদল করছিলেন মাশরাফী। ওই দৃশ্য টিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। তাই দেখে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় মাশরাফীর জন্য কেঁদে ফেলেন অনেকে।
অবশ্য মুদ্রার ওপিঠে মাশরাফীকে ঘিরে সমালোচনাও কম হচ্ছে না। ২০১৪ সালে দ্বিতীয় দফায় অধিনায়কত্ব ফিরে পাওয়ার পর ক্যারিশমাটিক নেতৃত্ব আর বল হাতে মাশরাফি বাংলাদেশের ক্রিকেটে যে জাগরনের পরিবেশ গড়ে তোলেন তা সবারই জানা। অথচ বিশ্বকাপে সামান্য ব্যর্থতায় কেউ কেউ তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেও পিছ পা হচ্ছেন না।
এক্ষেত্রেও নাজমুল হাসান পাপন একটা যুক্তি দাঁড় করিয়েছেন। মাশরাফী তো সুস্থ শরীরে বিশ্বকাপ খেলতে পারেনি। আয়ারল্যান্ডে পাওয়া হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট নিয়েই ইংলান্ডে খেলতে যায়। তাই বিশ্বকাপে সে ভালো করতে পারেনি। না পারারই কথা। ইংল্যান্ডের ক্রিকেট কন্ডিশনে সে ভালো করবে আমরা আশাও করিনি। তবে একথা সত্য, মাশরাফি তার শারিরীক সমস্যা থাকা সত্বেও বাংলাদেশ দলকে যেভাবে নেতৃত্ব দিয়েছে তা অকল্পনীয়। আমাদের উচিৎ তার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা এবং আমরা সেটাই করব।
একথা সত্য, পরাজিতদের সাথে কেউ থাকে না। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল যদি সেরা চারটি দলে ওঠার যোগ্যতা লাভ করতো অথবা পাকিস্তানের সাথে শোচনীয় ভাবে না হারত তাহলে মাশরাফিকে ঘিরে যে সমালোচনার ঢেউ উঠেছে তা হয়তো উঠতো না। আমাদের বোধকরি একটা কথা মনে রাখা দরকার, একটা পরাজয়েই কারও মূল্যায়ন করা ঠিক নয়। মাশরাফি আমাদের ক্রিকেটের রাজপুত্র। আমরা যেন তাকে সেভাবেই আজীবন সম্মান দিয়ে চলি। জয় হোক বাংলাদেশের ক্রিকেটের।