Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

মাদক কেলেঙ্কারিতে বলিউডের ৫০ তারকার নাম

বেশির ভাগ বলিউড তারকাই নাকি মাদকে আসক্ত। বলিউডের গভীরে শিকড় বিস্তার করে থাকা মাদক চক্রের খোঁজ মিলতে শুরু করেছে। আর এসবের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে একাধিক তারকার নাম। শুরুতে বলা হয়েছিল, মাদক কেলেঙ্কারিতে রয়েছে বলিউডের ২০ জন তারকার নাম। সপ্তাহ না পেরোতেই সংখ্যাটি বেড়ে এখন ৫০ জনের বিশাল তালিকায়। সামনে আরও বাড়ার সম্ভাবনাও আছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা…

বলিউডকে তছনছ করে দিয়েছে সুশান্ত সিং রাজপুতের অপমৃত্যু। বদলে দিচ্ছে পুরোনো বহু হিসেব–নিকেশ। নতুন করে রচিত হয়েছে এক কালো অধ্যায়, ‘মাদক কেলেঙ্কারি’। এমনও বলছেন অনেকে, বলিউডের বেশির ভাগ তারকাই মাদকে আসক্ত। বলিউডের গভীরে শিকড় বিস্তার করে থাকা মাদক চক্রের খোঁজ মিলতে শুরু করেছে। আর এসবের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে একাধিক তারকার নাম। উঠে এসেছে শীর্ষ নারী তারকা দীপিকার নামও। শুরুতে বলা হয়েছিল, মাদক কেলেঙ্কারিতে রয়েছে বলিউডের ২০ জন তারকার নাম। সপ্তাহ না পেরোতেই সংখ্যাটি বেড়ে এখন ৫০!

সারা আলী খান, রিয়া চক্রবর্তী ও রাকুল প্রীত সিং 

ইতিমধ্যে ৮ সেপ্টেম্বর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো (এনসিবি) গ্রেপ্তার করেছে বলিউড তারকা সুশান্তের প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তীকে। সুশান্তের মৃত্যুতে মাদকের সূত্র পেয়েই আলাদা করে তদন্ত শুরু করে ভারতের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো। তদন্ত করে রিয়াসহ মাদক কেলেঙ্কারিতে গ্রেপ্তার করা হয় ১৮ জনকে। পরে রিয়ার বক্তব্যে উঠে আসে সারা আলী খান ও রাকুল প্রীতের নাম। জবানবন্দিতে তিনি জানিয়েছেন, সুশান্তের সঙ্গে বসেই নাকি মাদক সেবন করতেন সারা ও রাকুল। এ নিয়ে হইচই যখন তুঙ্গে, তখনই মাদক চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে যায় দীপিকা পাড়ুকোনের নাম।

এভাবে কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে বেরিয়ে আসে সাপ। একের পর এক বড় তারকার নাম ফাঁস হতে শুরু করে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো বলিউডের আরও গভীরে ঢুকে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। সংস্থাটির নজরে রয়েছে বলিউডের অন্দরমহলে চলা সেসব পার্টি, যেখানে মাদকসেবন এবং লেনদেন চলে অবাধে। ভারতীয় বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম বলছে, বর্তমানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর কর্মকর্তাদের নজরে রয়েছেন চলচ্চিত্র জগতের অন্তত ৫০ জন অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক। এ–ও জানা গেছে, বলিউডের প্রথম সারির বেশ কিছু অভিনেতা, যাঁরা ড্রাগ পার্টির আয়োজন করেন, তাঁদের সঙ্গে ক্রিকেট জগতেরও যোগ আছে। ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস নাউ-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, তদন্তকারী সংস্থার নজর পড়ছে কোকো ক্লাবে আয়োজিত একটি অভিজাত পার্টির দিকে। ২০১৭ সালের ২৮ অক্টোবর রাতে ক্লাবের পার্টিতে ঠিক কী হয়েছিল, তা জানতে সিসিটিভি ফুটেজ বের করে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।

গত ১৪ জুন মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় নিজ বাসা থেকে বলিউড তারকা সুশান্তের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, আত্মহত্যা করেছেন সুশান্ত সিং রাজপুত। আত্মহত্যার বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না সুশান্তের ভক্তরা। বলিউডের বহু তারকা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, এমনকি বিহার পুলিশের মহাপরিচালকও তদন্ত শুরুর পর এ হত্যাকে আত্মহত্যা বলে মেনে নিতে পারছিলেন না। অন্যদিকে একের পর এক প্রেমে ব্যর্থতা, মাদক, বাইপোলার ডিসঅর্ডার, নিম্নমুখী ক্যারিয়ার, পরিবারের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতা—সবকিছু সুশান্তকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিল বলে দাবি করেছেন তাঁর প্রেমিকা রিয়া। এসব তদন্ত করতে গিয়েই উঠে এসেছে মাদক কেলেঙ্কারির কথা।

সুশান্ত সিং রাজপুত এখন কেবলই ছবি। 

গতকাল বুধবার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো সমন পাঠিয়েছে দীপিকা পাড়ুকোন, সারা আলী খান, শ্রদ্ধা কাপুর, রাকুল প্রীত সিং, সিমোন খামবাট্টা, সেলিব্রিটি ম্যানেজার শ্রুতি মোদি এবং দীপিকার ম্যানেজার কারিশমা প্রকাশকে। শকুন বাত্রার আগামী ছবির শুটিংয়ের জন্য বর্তমানে গোয়াতে আছেন দীপিকা পাড়ুকোন। এই মামলায় তাঁর নাম জড়িয়ে পড়ায় মুম্বাইতে চলে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোর কর্মকর্তারা ফোন করে দীপিকা পাড়ুকোনকে সমনের কথা জানালেও সংস্থার প্রতিনিধি সশরীরে সমন নিয়ে গেছেন শ্রদ্ধা কাপুর ও সারা আলী খানের বাড়িতে। সমন পাঠানো বলিউডের শিল্পী ও কলাকুশলীদের মধ্যে দীপিকাকে জেরা করার কথা ২৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার, সারা ও শ্রদ্ধাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে ২৬ সেপ্টেম্বর শনিবার এবং রাকুল প্রীত, সিমোন খামবাট্টা ও শ্রুতি মোদিকে জেরা করার কথা আজ বৃহস্পতিবার।

দীপিকার পর এবার দিয়া মির্জাকেও সমন পাঠানোর কথা শোনা গেছে। দ্রুত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরোতে ডাকা হবে দিয়াকে। মাদক পাচারকারী অঙ্কুশ আর অনুজ কেশওয়ানিকে জেরার সময়ই দিয়ার নাম উঠে এসেছে। দিয়ার এই ম্যানেজার অনুজের প্রেমিকা। গত বছর থেকে তিনিই নিয়মিত দিয়াকে মাদক পৌঁছে দিতেন। এমনকি দুবার মাদক পাচারকারীদের সঙ্গে দেখাও করেছিলেন দিয়ার ব্যবস্থাপক। ইতিমধ্যে তাঁকে সমন পাঠানো হয়েছে।

কৃতজ্ঞতা: প্রথম আলো