Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

ব্লাক সতের বছরে পা

মোহাম্মদ তারেক

ব্লাক নামটি ব্যান্ড সঙ্গীতের জগতে অত্যনৱ পরিচিত। ব্লাক-এর রক, মেলোডি গানগুলো শ্রোতাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। ব্লাক ব্যান্ড এ যাবৎ অসাধারণ কিছু গান সৃষ্টি করেছে। গানগুলোর কথা, সুর এবং গায়কির ধরনে রয়েছে বৈচিত্র্য। এক বিকালে আনন্দ আলোর প্রতিবেদক গিয়েছিলেন ব্লাক-এর গান তৈরির কারখানায়। জমে উঠল আনন্দ আলোর সঙ্গে ব্লাক ব্যান্ডের আনন্দ আড্ডা।

১৯৯৯ সালে ব্লাক ব্যান্ডের যাত্রা শুরু হয়। টনি খাদেমুল জাহানের উদ্যোগে গঠিত হয়েছিল এ ব্যান্ডটি। শুরু থেকে এ ব্যান্ডের সঙ্গে ছিলেন জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী তাহসান, আশিকুর, টনি জাহান। এখন ব্লাক ব্যান্ডের সদস্যদের মধ্যে আছেন ভোকাল ও গিটারে রুবায়াত, লিড গিটারে জাহান, ড্রামসে টনি ও বেজ গিটারে চার্লস। এই দীর্ঘ পথ চলায় ব্লাক ব্যান্ড বেশ কিছু জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছে শ্রোতাদের। উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে ‘আমরা’, ‘প্রার্থনা’, ‘তুমি কি সাড়া দিবে’, ‘মিথ্যা’, ‘হাত বাড়াও’, ‘অভিমান’, ‘পরাহত’, ‘অপলা’, ‘প্রাকৃতিক’, ‘চেনা দুঃখ’, ‘এখনো প্রশ্ন বোধক চিহ্ন’, ‘আমার পৃথিবী’ ইত্যাদি। এক সময় শ্রোতাদের মুখে মুখে ছিল গানগুলো। ২০০২ সালে জি-সিরিজ থেকে ব্লাক ব্যান্ডের প্রথম অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। অ্যালবামের নাম ছিল ‘আমার পৃথিবী’। এ অ্যালবামের বেশির ভাগ গানই বেশ শ্রোতাপ্রিয়তা পায়।

২০০৩ সালে বাজারে আসে তাদের দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘উৎসবের পর’। সে অ্যালবামটি বেশ শ্রোতাপ্রিয়তা পায়। বেশ কয়েক বছর পর বিরতি দিয়ে ২০০৮ সালে জি-সিরিজের ব্যানারে প্রকাশিত হয় তৃতীয় অ্যালবাম ‘আবার’। ২০১১ সালে একই ব্যানারে বাজারে আসে তাদের চতুর্থ ও সর্বশেষ অ্যালবাম ‘ব্লাক’। এ অ্যালবামের গানগুলো শ্রোতাদের কাছে বেশ গ্রহণযোগ্যতা পায়। প্রতিটি অ্যালবামে তারা চেষ্টা করেছেন একটা অ্যালবামের সঙ্গে আরেকটা অ্যালবামের গানের ধাঁচে মিল না রাখতে। সলো অ্যালাবাম ছাড়াও ব্লাক ২৫টির মতো মিক্সড অ্যালবামে গান গেয়েছে। দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড ব্লাক সাফল্যের সঙ্গে ষোলটি বছর পার করে সতের এ পা দিয়েছে। এই দীর্ঘ পথচলায় ব্যান্ডটি অসাধারণ কিছু গান সৃষ্টি করেছে। ব্লাকের ১৭ বছর পদার্পণের অনুভূতি প্রসঙ্গে জাহান বলেন, ১৭ বছর ধরে আমরা মিউজিকে আছি এটা অনেক ভালো লাগার ব্যাপার। সবচেয়ে বড় কথা আমরা যখন দর্শক শ্রোতাদের সামনে যাই কিংবা স্টুডিওতে লাইভ শো করি তখন ভক্তদের কাছ থেকে যে ভালোবাসা পাই এটাই অনেক বড় একটা পাওয়া। গত ১৬ বছরে বাংলাদেশের শ্রোতাদের কাছে ব্লাক ব্যান্ড গানের মাধ্যমে যে সুনাম ধরে রাখতে পেরেছে এটাই সবচেয়ে বড় সার্থকতা বলে মনে করি। ব্যান্ড সঙ্গীতের বর্তমান অবস্থা কী? এ প্রশ্নের জবাবে গিটারিস্ট জাহান বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশের সামগ্রিক অবস্থা ভালো না। এ কারণে  সঙ্গীতও যেন ঝিমিয়ে পড়েছে। নিরাপত্তা জনিত কারণে এখন কনসার্ট হয় না বললেই চলে। ব্যান্ডের অবস্থাও তেমন একটা ভালো না। তবে আমাদের অডিও বাজারের অবস্থা কিছুটা ভালোর দিকে যাচ্ছে। ব্যান্ড দলগুলো অন লাইনে অ্যালবাম প্রকাশ করছে। এটা একটা ভালো দিক।

ড্রামার টনি বলেন, ক্রিয়েটিভিটির দিক থেকে আমি বলব ব্যান্ড সঙ্গীত বর্তমান অনেকটাই এগিয়েছে। নতুন  নতুন মেধাবী মিউজিশিয়ান আসছে। সাউন্ডের কোয়ালিটি আগের তুলনায় অনেক ভালো। গানে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার প্রসঙ্গে জাহান বলেন, আমি বলব টেকনোলজির ভালো- খারাপ দুটো দিকই রয়েছে। টেকনোলজির প্রভাবে আমাদের গানের সাউন্ড অনেক ভালো হচ্ছে। দিনে দিনে গান শ্রুতিমধুর হচ্ছে। এটা অবশ্যই একটা ভালো দিক। বিশ্বের হাই টেকনোলজি ব্যবহার করে মিউজিক করা হচ্ছে। আবার এটাও সত্য, অনেকে টেকনোলজির ব্যবহার বিকৃত ভাবে এটা খারাপ দিক। ব্লাকের নতুন অ্যালবামের কী খবর? এ প্রশ্নের জবাবে জাহান বলেন, আমাদের নতুন অ্যালবামের কাজ শেষ। অ্যালবামের নাম এখনও ঠিক করা হয়নি। অ্যালবামে গান রয়েছে মোট নয়টি। গানগুলো হলো- ‘আক্ষেপ’, ‘চোখ’, ‘ঘৃণা’, ‘গহীনে’, ‘অধোরা’, ‘অনেক জীবন’, ‘উনমানুষ’ ইত্যাদি। পাঁচটি গানের কথা লিখেছেন ইমন জুবায়ের। আর চারটি গানের কথা, সুর ও সঙ্গীতায়োজন আমাদের নিজেদের করা। খুব শিগগিরই নতুন অ্যালবামটি শ্রোতাদের হাতে তুলে দিতে পারব। কিছু দিন আগে ব্লাক তাদের নতুন অ্যালবামের ‘আক্ষেপ’ গানটি প্রকাশ করেছে। রেডিও জি-বিডি ডট কমে শ্রোতারা ‘আক্ষেপ’ গানটি শুনতে পাচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে এর মিউজিক ভিডিও দেখা যাচ্ছে। সবশেষে প্রশ্ন ছিল ব্ল্যাক-এর গানের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে। টনি বললেন, আমাদের চেষ্টা থাকবে নিজেদের মতো যতটা সম্ভব ভালো গান করে যাওয়া। আমাদের গানগুলো সারাদেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাই।