Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

বন্ধুত্ব টিকে থাকে ভালোবাসা ও বিশ্বাসে

ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল

সিলেটের হবিগঞ্জে দ্য প্যালেস রিসোর্টের বিশাল আঙিনায় দেখা হল তার সাথে। মহান জাতীয় সংসদের তরুণ সদস্য। ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল। সুপুরুষ। সারাক্ষণ মুখে হাসি লেগেই থাকে। তার পিতা বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও সংস্কৃতি মনস্ক ব্যক্তিত্ব আলতাফ হোসেন গোলন্দাজও এক সময় মহান জাতীয় সংসদের সদস্য ছিলেন। সারাজীবন বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কথা বলেছেন। পিতার যোগ্য উত্তরসুরী হয়ে উঠেছেন ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল। নিজের সংসদীয় এলাকায় তিনি তুমুল জনপ্রিয়। মহান জাতীয় সংসদের একজন সদস্য হিসেবে ফাহমির মূল ভাবনাটা কি? এই প্রশ্ন দিয়েই আমাদের আড্ডা শুরু হলো। একটু যেন ভাবলেন ফাহমি গোলন্দাজ বাবেল। তারপর বললেন, আমি দ্বিতীয়বারের মতো মহান জাতীয় সংসদের সদস্য হয়েছি। এর আগে উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলাম। এলাকার মানুষের অনেক ধরনের সামাজিক সমস্যা থাকে, সে গুলো সমাধানের ভাবনাকে গুরুত্ব দিয়েই কাজ করে যাচ্ছি। এটা হচ্ছে আমার ফ্যামিলি ট্রেডিশান। মানুষের জন্য ভালো কাজ কর, অসহায় মানুষের পাশে থাকো এটা আমি আমার ফ্যামিলি থেকে শিখেছি। আমার বাবাও একবার উপজেলা চেয়ারম্যান ও তিনবার এমপি ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই দেখেছি আমাদের বাড়িতে সাধারন মানুষ তাদের সমস্যা নিয়ে আসতো। বাবা খুশি মনে তাদের সমস্যা, সংকট দূর করার উদ্যোগ নিতেন। বাবাকে দেখতে দেখতে আমিও অভ্যস্থ হয়ে উঠেছি। সাধারন মানুষের কোনো উপকারে আসতে পারলেই আমার ভালো লাগে। আনন্দ পাই।
আনন্দ আলো: বর্তমান বাংলাদেশ নিয়ে আপনার ভাবনা কি? দেশ কি এগুচ্ছে…?
ফাহমি গোলন্দাজ: বর্তমান বাংলাদেশ নিয়ে আমি অনেক গর্বিত। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমিকে সম্মানের জায়গায়, মর্যাদার জায়গায় এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বে অনন্য করে তুলেছেন। এজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যা বলেন তা করেও দেখান। তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আজ আমরা তাঁর কথার সুফল পাচ্ছি। বাংলাদেশ এখন যথার্থ অর্থেই ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়ে উঠেছে।
আনন্দ আলো: আপনার শিক্ষাজীবনের কথা জানতে চাই। পড়াশুনা করেছেন কোথায়?
ফাহমি গোলন্দাজ: আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুলের স্টুডেন্ট। আনন্দ মোহন কলেজে পড়াশুনা করেছি। ছোটবেলা থেকেই আমি ময়মনসিংহ শহরে বড় হয়েছি।
আনন্দ আলো: দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তরুণরা নেতৃত্ব দিচ্ছে। একজন তরুণ রাজনীতীবিদ হিসেবে এক্ষেত্রে আপনার ভাবনাটা কেমন?
ফাহমি গোলন্দাজ: আমি তরুণদের নিয়ে বেশ আশাবাদী। আমি মূলত তরুণদের নিয়েই চলাফেরা করি। আপনি নিশ্চয়ই বুঝবেন যে প্রতিটি ক্ষেত্রে বয়সের একটা ব্যাপার থাকে। যেহেতু আমি নিজে বয়সে তরুণ কাজেই তরুণদের ব্যাপারে সব সময়ই আমার মনোযোগ থাকে।
আনন্দ আলো: তরুণদের ব্যাপারে মাদকাসক্ত সহ অন্যান্য সমস্যার কথা শোনা যায়। এক্ষেত্রে আপনার বক্তব্য কী?
ফাহমি গোলন্দাজ: আনন্দের সাথে জানাই আমার এলাকায় মাদক জাতীয় কোনো অপরাধের দৌরাত্ম নাই। যেটুকু আছে তাকে আমরা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলা ইত্যাদির মাধ্যমে বিপথগামী তরুণদের আমরা সুপথে আনার চেষ্টা করছি।
আনন্দ আলো: একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আপনাকে প্রচুর ব্যস্ত থাকতে হয়। তবুও অবসরে কি করেন?
ফাহমি গোলন্দাজ: (একটু ভেবে নিয়ে) এই যে আমি চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়াডস-এ এসেছি এটা আমার রিক্রিয়েশন! কারণ আমি আসলে এই ধরনের পরিবেশে আসার সুযোগ কম পাই। বিষয়টা আমি এনজয় করছি। রাজনীতিবিদদের আসলে রিল্যাক্স টাইম বলতে কিছু নাই। তাদেরকে কাজের মাঝখান থেকেই আনন্দ খুঁজে নিতে হয়।
আনন্দ আলো: অনেকে মনে করেন যার বন্ধু ভাগ্য ভালো সেই জীবনে সুখি মানুষ। বন্ধু আপনার কাছে কী?
ফাহমি গোলন্দাজ: বন্ধু আমার কাছে অনেক বড় ব্যাপার। আমি বন্ধু-বান্ধবদের নিয়েই থাকতে বেশ পছন্দ করি। স্কুলে আমি যাদের সাথে পড়েছি তাদের অনেকের সাথেই আমার নিয়মিত যোগাযোগ হয়। কোনো সময় তাদেরকে নিয়ে আমি হারিয়ে যাই।
আনন্দ আলো: বন্ধুত্ব টিকে থাকে কিসে?
ফাহমি গোলন্দাজ: এককথায় উত্তরÑ ভালোবাসা ও বিশ্বাসে টিকে থাকে বন্ধুত্ব।
আনন্দ আলো: আপনার কাছে পরিবার কি?
ফাহমি গোলন্দাজ: পরিবার তো পরিবারই… পরিবারের কোনো বিকল্প নাই। যার পরিবার নাই। সে জীবনে যত বড় হোক না কেন আমার কাছে তিনি একজন ব্যর্থ মানুষ।
আনন্দ আলো: পরিবার টিকে কিভাবে? মন্ত্রটা কি?
ফাহমি গোলন্দাজ: আমি যেটা বুঝি যে, আপনাকে কেয়ারিং হতে হবে। পরিবারের অন্য মানুষের সুবিধা অসুবিধার কথা না ভেবে আপনি সুখ চাইবেন, সুবিধা চাইবেন সেটা যুক্তির কথা নয়। বিশ্বাস, ভালোবাসা, সম্মান ও নির্ভরতার নিশ্চয়তাই একটি পরিবারকে টিকিয়ে রাখে।
আনন্দ আলো: সিনেমা দেখেন?
ফাহমি গোলন্দাজ: হ্যা সিনেমা দেখি। আমার সব চেয়ে পছন্দের নায়ক ছিল সালমান শাহ। যতদিন সালমান শাহ্র মুভি ছিল ততদিন হলে গিয়েছি। মুভি দেখেছি। এখনকার সিনেমার খবর জানিনা। ব্যস্ততার কারনে খবর রাখা সম্ভবও হয়না।
আনন্দ আলো: টেলিভিশনের কোন অনুষ্ঠান আপনার প্রিয়?
ফাহমি গোলন্দাজ: বাংলাদেশের?
আনন্দ আলো: হ্যা।
ফাহিম গোলন্দাজ: নিউজ ছাড়া আমি আসলে অন্য কোনো অনুষ্ঠান দেখি না। বলতে গেলে দেখার জন্য সময় পাই না। তবে গানের অনুষ্ঠান আমার প্রিয়। প্রিয়শিল্পীর গানের অনুষ্ঠানের খবর পেলেই তা দেখার চেষ্টা করি। এক সময় টেলিভিশনে খুব নাটক দেখতাম। এখন একদম সময় পাইনা।
আনন্দ আলো: আপনার নিজ পরিবারের কথা জানতে চাই।
ফাহমি গোলন্দাজ: স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে আমার ছোট্ট সংসার। স্ত্রীর নাম তুস্টি গোলন্দাজ। মেয়ের নাম তোরসা। ছেলের নাম আরিয়ান। ওরা ধানমন্ডিতে মাস্টার মাইন্ড স্কুলে পড়ে। সবাইকে নিয়ে অনেক ভালো আছি।
আনন্দ আলো: আপনার ভবিষ্যৎ স্বপ্নটা কি?
ফাহিম গোলন্দাজ: ভবিষ্যৎ স্বপ্ন হচ্ছে, যেভাবে এলাকার মানুষদের জন্য কাজ করছি, এলাকার উন্নয়নের চেষ্টা করছি মৃত্যুর আগে পর্যন্ত যেন তা করতে পারি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।