Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

বকা খেয়েই সম্পর্ক ছিন্ন করি! তানজিন তিশা

আনন্দ আলো: আপনি কী তিশা?
তানজিন তিশা: হ্যাঁ। আমি তানজিন তিশা।
আনন্দ আলো: মিডিয়াতে পথ চলা শুরু হলো কীভাবে?
তানজিন তিশা: আমার মিডিয়ায় পথ চলা শুরু হয়েছিল একটি পত্রিকার মডেল হিসেবে। তারপর ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড, পোলার আইসক্রীম সহ বেশ কয়েকটি কোম্পানির বিলবোর্ডে মডেল হয়েছিলাম।
আনন্দ আলো: জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় যে কাজটি…
তানজিন তিশা: জনপ্রিয় বিজ্ঞাপন নির্মাতা অমিতাভ রেজার রবির বিজ্ঞানটি আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এই বিজ্ঞানটির মাধ্যমে মূলত দর্শক আমাকে চিনতে শুরু করে।
আনন্দ আলো: ছোটবেলায় কী হতে চেয়েছিলেন?
তানজিন তিশা: ছোটবেলায় নৃত্যশিল্পী হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু হয়ে গেছি অভিনেত্রী।
আনন্দ আলো: ক্যামেরার সামনে প্রথমদিন…
তানজিন তিশা: ২০১২ সালের কথা। একটি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনে মডেল হতে গিয়ে প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলাম। একক কোনো মডেল ছিল না বিজ্ঞাপনে। পুরো টিমের কাজ। টিমটাও ছিল অনেক বড়। শুটিং হচ্ছিল গাজীপুর। পরিচালক ছিলেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। শুটিংয়ের আগে থেকেই আমি খুবই নার্ভাস ছিলাম। শর্ট নেওয়ার সময় আমার এক্সপ্রেশন মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর কাছে ভালো লেগে যায়। তিনি আলাদা করে আমার কয়েকটি শট নিয়েছিলেন। সেগুলো পর্দাতেও রেখেছিলেন।
আনন্দ আলো: প্রথম পারিশ্রমিক কত ছিলো?
তানজিন তিশা: সম্ভবত আমি তখন পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী। তখন রমনার বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে নাচ করেছিলাম। নাচের জন্য পারিশ্রমিক হিসেবে এক হাজার টাকা পেয়েছিলাম। টাকা পেয়ে কী যে আনন্দ হয়েছিল সেদিন। সেই টাকা দিয়ে বাবা-মা, বোন সবার জন্যই উপহার কিনেছিলাম। মনে আছে বাবাকে একটি কলম কিনে দিয়েছিলাম।
আনন্দ আলো: বিলবোর্ডে নিজের প্রথম ছবি…
তানজিন তিশা: ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের মডেল হওয়ার কারণে প্রথম বিলবোর্ড আমার ছবি শোভা পেয়েছিল। বিলবোর্ডে নিজের ছবি দেখার পর খুবই আনন্দ পেয়েছিলাম।
আনন্দ আলো: আপনার অভিনীত প্রথম নাটক…
তানজিন তিশা: আমার অভিনীত প্রথম নাটক ‘ইউটার্ন’। এটি পরিচালনা করেছিলেন রেদওয়ান রনি। প্রথম নাটকে অভিনয়ের সময় খুব ভয় পেয়েছিলাম। তবে রনি ভাই আমাকে প্রচুর সাহায্য করেছিলেন। এ জন্য নাটকে আমার চরিত্রটি সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছিলাম।
আনন্দ আলো: যে চরিত্রের ভিতরে ঢুকে পড়েছিলাম…
তানজিনা তিশা: মাররুর রশীদ বান্নাহর পরিচালনায় ‘চশমায় লেগে থাকা ভালোবাসা’ নাটকটির সুপর্ণা চরিত্রের ভেতরে যেন সত্যি সত্যিই ঢুকে পড়েছিলাম। মনে হয়েছিল শৈশবে চলে গিয়েছিলাম। সেই সময়ের রোমান্টি সিজমের ঢুকে যাচ্ছিলাম। ক্যামেরা সরে গেলে ফিরে আসি বাস্তবে।
আনন্দ আলো: অভিনয় আমার কাছে নেশা, পেশা, স্বপ্ন নাকি ¯্রফে ফান?
তানজিন তিশা: আমি অভিনয় নিয়ে খুব একটা সিরিয়াস ছিলাম না। কিন্তু এখন অভিনয়ের বাইরে আর কিছু ভাবতে পারি না।
আনন্দ আলো: এ সময়ের বেশির ভাগ টিভির অভিনয়শিল্পীই সিনেমায় কাজ করার ব্যাপারে বেশ আগ্রহী। আপনিও কী তাই?
তানজিন তিশা: সিনেমায় অভিনয়ের ব্যাপারে এত আলাপ-আলোচনা হয়েছে যে এটা নিয়ে কথা বলতে বলতে আমি ক্লান্ত। সত্যি বলতে সিনেমা নিয়ে আমার আলাদা আগ্রহ নেই। ছোট বা বড় পর্দা বলে আমি কিছু আলাদা করতে চাই না। আমার কাছে এখন অভিনয়টা মুখ্য, পর্দা বড় কি ছোট সেটা বিষয় নয়।
আনন্দ আলো: যে সহ শিল্পীর অভিনয় মুগ্ধ করেছে…
তানজিন তিশা: অপূর্ব, আফরান নিশো আর মম আপুর অভিনয় আমাকে মুগ্ধ করে।
আনন্দ আলো: যাকে অথবা যাদের দেখে এখনো অভিনয় শিখি…
তানিজন তিশা: আমাদের দেশের সবার কাছ থেকে কমবেশি অভিনয় শেখার চেষ্টা করি। অভিনয় নেয়ার একটা বিষয় আছে। সুর্বণা মুস্তাফা, বিপাশা হায়াত, মম, তিশা আপু এদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত অভিনয় শিখছি।
আনন্দ আলো: প্রথম অটোগ্রাফ দেওয়ার অভিজ্ঞতা…
Tanzin-Tisha-1তানজিন তিশা: মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের ওই বিজ্ঞাপন সব চ্যানেলে ব্যাপক প্রচার চলছিল। লোকজন মোটামুটি আমাকে চিনতে শুরু করেছে। এর মধ্যে কক্সবাজার একটি শো করতে গিয়েছিলাম আমি। ওখানকার কেএফসিতে বসে খাবারের জন্য অপেক্ষা করছি। সেই সময় দুটি ছেলে ও একটি মেয়ে এসে আমার কাছে অটোগ্রাফ চাইল। আমি তো অবাক। বিস্মিতও হয়েছিলাম। কিন্তু আমার সঙ্গে যারা ছিলেন, তারা খুশি হয়েছিলেন। দিনটির কথা মনে পড়ে এখনো।
আনন্দ আলো: প্রথম বই পড়া…
তানজিন তিশা: বাবা-মা, বড় বোন সবাই একসময় বই পড়তেন। আমাদের বাসায় বইয়ের একটি বড় শেলফ ছিল। শেলফ ভর্তি প্রচুর বই ছিল। বাসার সবার দেখাদেখি আমিও বই পড়া শুরু করি। নবম শ্রেণীতে থাকাকালে প্রচুর বই পড়েছি। প্রথম পড়েছিলাম হুমায়ূন স্যারের হিমু। হিমু সিরিজের সব বই-ই মোটামুটি পড়েছি। এরপর আজ দুপুরে, তোমার নিমন্ত্রণ সহ অনেক বই পড়া হয়েছে।
আনন্দ আলো: এক স্যুটকেস ভর্তি মেকআপ আর ডিজাইনার ডেস, অন্যদিকে বিশ্বভ্রমণের সুযোগ দুটির মধ্য থেকে কোনটি বেছে নেবেন?
তানজিন তিশা: অবশ্যই বিশ্ব ভ্রমণের সুযোগ। বিশ্ব ভ্রমণের ফাঁকে ফাঁকে বাকি সব কিনে নিতে পারব।
আনন্দ আলো: জীবনে পাওয়া সবচেয়ে বড় শিক্ষা কী?
তানজিন তিশা: দুটি শিক্ষা পেয়েছি এ জীবনে। এক, সবার আগে নিজেকে প্রাধান্য দিতে হবে। দুই, কোনো মানুষকে সহজে বিশ্বাস করা যাবে না। বিশ্বাস করার আগে হাজারবার ভাবতে হবে।
আনন্দ আলো: আপনার চোখে এ সময়ের সবচেয়ে সুন্দরী ও আকর্ষনীয় অভিনেত্রী কে?
তানজিন তিশা: মেহজাবীন ও মম আপুকে আমার খুবই ভালো লাগে।
আনন্দ আলো: প্রথম প্রেম…
তানজিন তিশা: আমি যখন মতিঝিল মডেল হাইস্কুলের ছাত্রী ছিলাম সেই সময় বড় বোনের এক বন্ধুর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক হয়েছিল আমার। ছেলেটি তখন কলেজে পড়ত। বোনের বন্ধু হওয়ার কারণে প্রায়ই আমাদের বাসায় আসত ছেলেটি। আমরা একসঙ্গে ঘুরতে যেতাম। অনেক গল্প হতো। একদিন ছেলেটি একটি চিরকুট রেখে যায় আমাদের বাসায়। খুলে দেখি আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছে। আমারও ভালো লাগত তাকে। প্রস্তাব পেয়েই রাজি হয়ে গেলাম। ঠিক মাস তিনেকের মাথায় আমাদের প্রেমের কথা বাসায় জেনে যায়। মা-বাবা দুজনই খুব বকাবকি করলেন। বকা খেয়ে ওই দিনই সম্পর্ক ছিন্ন করি।