Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

প্রিয় শিল্পীর জন্য আকুলতা!

দেশ বরেণ্য সঙ্গীত শিল্পী সুবীর নন্দী অসুস্থ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাকে বিদেশে নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। পহেলা বৈশাখের রাতে সিলেট থেকে ঢাকায় ফেরার পথে ট্রেনে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন একুশে পদকে ভ‚ষিত সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ও কন্যা। রাতেই তাকে দ্রæত রাজধানীর সিএমএইচ হাসপাতালে নেয়া হয়। জরুরি বিভাগে থাকতেই হার্ট অ্যাটাক করেন এই নন্দিত শিল্পী। এরপর তাকে আইসিইউতে দ্রত লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়।
সুবীর নন্দী দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস রোগে ভুগছেন। তার হার্টে বাইপাস সার্জারি হয়েছিল। কিডনির সমস্যাও রয়েছে তার। নিয়মিত ডায়ালাইসিস করাতে হয় তাকে। প্রসঙ্গত, ৪০ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে আড়াই হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন সুবীর নন্দী। ১৯৫৩ সালের ১৯শে নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার নন্দীপাড়ায় তার জন্ম। বাবার চাকরি সূত্রে শৈশব কেটেছে চা বাগানে। পরিণত বয়সে গানের পাশাপাশি চাকরি করেছেন ব্যাংকে। প্রাইমারিতে পড়ার সময় মা পুতুল রানীর কাছে সংগীতের হাতেখড়ির পর ওস্তাদ বাবর আলী খানের কাছে শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নেন সুবীর নন্দী। সিলেট বেতারে তিনি প্রথম গান করেন ১৯৬৭ সালে। এরপর ঢাকা রেডিওতে সুযোগ পান ১৯৭০ সালে। রেডিওতে তার প্রথম গান ‘যদি কেউ ধূপ জ্বেলে দেয়’। বেতার থেকে টেলিভিশন, তারপর চলচ্চিত্রে গেয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় গান।
১৯৭৬ সালে আব্দুস সামাদ পরিচালিত ‘সূর্যগ্রহণ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে প্লেব্যাকে আসেন সুবীর নন্দী। ১৯৭৮ সালে মুক্তি পায় আজিজুর রহমান পরিচালিত ‘অশিক্ষিত’ সিনেমাটি। সেই সিনেমায় সাবিনা ইয়াসমিন আর সুবীর নন্দীর কণ্ঠে ‘মাস্টার সাব আমি নাম দস্তখত শিখতে চাই’ গানটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। ধীরে ধীরে সুবীর নন্দীর কণ্ঠের গান ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মুখে মুখে। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করে চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন এই শিল্পী। চারবার পেয়েছেন বাচসাস পুরস্কার। তার গাওয়া উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে ‘দিন যায় কথা থাকে’, আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়’, ‘পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই’, ‘আশা ছিল মনে মনে’, ‘হাজার মনের কাছে প্রশ্ন রেখে’, ‘বন্ধু তোর বারাত নিয়া’, ‘বন্ধু হতে চেয়ে তোমার’, ‘কতো যে তোমাকে বেসেছি ভালো’, ‘পাহাড়ের কান্না দেখে’, ‘আমি বৃষ্টির কাছ থেকে কাঁদতে শিখেছি’, ‘কেন ভালোবাসা হারিয়ে যায়’, একটা ছিল সোনার কন্যা’, ‘ও আমার উড়াল পঙ্খীরে’সহ অসংখ্য গান। তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ বাজারে আসে ১৯৮১ সালে। ‘প্রেম বলে কিছু নেই’, ‘ভালোবাসা কখনো মরে না’, ‘সুরের ভুবনে’, ‘গানের সুরে আমায় পাবে’ ছাড়াও ‘প্রণামাঞ্জলী’ নামে একটি ভক্তিমূলক গানের অ্যালবাম রয়েছে এ শিল্পীর।
আনন্দ আলো পরিবারের অনেক আপনজন প্রিয় শিল্পী সুবীর নন্দী আপনি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই আমাদের সমবেত প্রার্থনা।