সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2001-2021 - আনন্দ আলো
রেজানুর রহমান
এত আনন্দ রাখি কোথায়? যদি নদীর সঙ্গে তুলনা করি কম বলা হবে। তাহলে কি আকাশের সঙ্গে তুলনা করব? নাকি সমুদ্রের সঙ্গে? কে বড় আকাশ নাকি সমুদ্র? সমুদ্র বিশাল, আকাশ তার চেয়েও বিশাল। আর আমাদের আনন্দ তার চেয়েও বিশাল। সবার প্রিয় বিনোদন পাক্ষিক ইমপ্রেসের আনন্দ আলো সবার সামনে পরম মমতায় তুলে ধরেছেন আমাদের প্রিয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভাবা যায় এ আনন্দ কতটা বড়?
গল্পটা তাহলে খুলেই বলি। গল্প মানেই তো বানানো ঘটনা। কিন্তু আমাদেরটা সত্যি গল্প! পহেলা বৈশাখ আনন্দ আলোর জন্মদিন। এবার পহেলা বৈশাখে সম্ভাবনার ১৪ বছরে পা দিয়েছে আনন্দ আলো। বর্ষ শুরু সংখ্যার কাজ চলছিল সম্পাদকীয় কার্যালয়ে। হঠাৎই সিদ্ধান্ত হলো ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন সুরের ধারার ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে সুরের ধারা ও চ্যানেল আই-এর উদ্যোগে হাজারো কণ্ঠে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান এবার শুরু হবে ৪দিন আগে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ছবিসহ তাৎক্ষণিকভাবে আনন্দ আলো একটি বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করে এবং তা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেয়া হবে।
তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রসরমান সময়ের কথা ভাবলে এক অর্থে বিষয়টা খুবই সহজ। আরেক অর্থে বিষয়টা বেশ কঠিন ও জটিলও বটে। প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে কঠোর নিরাপত্তা থাকে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার ছবি তুলে তাৎক্ষণিক ভাবে পত্রিকা প্রকাশ করে তাঁর হাতে তুলে দেয়া খুব সহজ কাজ নয়। কিন্তু আনন্দ আলোর সম্পাদকমÐলীর সভাপতি, চ্যানেল আই-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর ছাড় দিতে নারাজ। সকল প্রতিবন্ধকতাকে ছাপিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ছবিসহ তাৎক্ষণিকভাবে আনন্দ আলোর বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করতেই হবে। চ্যানেল আই-এর পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করে পত্রিকা প্রকাশের একটি সুযোগ সৃষ্টি করে দিলেন।
সুরের ধারার ২৫ বছর পূর্তি ও হাজারো কণ্ঠে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের তথ্য সম্বলিত আনন্দ আলোর একটি বিশেষ সংখ্যা প্রকাশের জোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল। পত্রিকার মূল কাভার ছাড়া সবকিছু আগেই ছাপানো হলো প্রেসে। শুরু হলো অপেক্ষার পালা। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া মাত্র ক্যামেরায় ছবি ধারণ করে তা পত্রিকার পাতায় জুড়ে দিয়ে কাভার ছাপানো হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে ওই পত্রিকা প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেয়া হবে। অনুষ্ঠানের আগের দিন চ্যানেল আই ভবনে আনন্দ আলোর সম্পাদকীয় দফতরে একটানা কয়েকঘণ্টা তাৎক্ষণিক ছবি তুলে পত্রিকার কাভার ছাপানোর মহড়া হলো। আনন্দ আলোর কর্মী বাহিনী মোটামুটি প্রস্তুত।
পরের দিন ১০ এপ্রিল ২০১৮। বিকেলে সুরের ধারা ও চ্যানেল আই-এর উদ্যোগে ৪দিনব্যাপী বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হবে। নিরাপত্তার নানান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে পত্রিকা প্রকাশের মেশিনপত্র নেয়া হলো বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। ক্যামেরা হাতে অস্থির প্রতীক্ষা শুরু হলো চ্যানেল আই-এর ফটোগ্রাফার শাহীনুর ইসলামের। চ্যানেল আই-এর আইটি বিভাগের সিসটেম ইঞ্জিনিয়ার শরীফ-উল-ইসলাম তার মেশিন পত্র নিয়ে অস্থির অপেক্ষা করছেন। তার চেয়ে অস্থির আমি নিজে। কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আসবেন। সঙ্গে সঙ্গে তার ছবি তোলা হবে। সেই ছবি আনন্দ আলোর বিশেষ সংখ্যায় প্রচ্ছদে ফেলে প্রচ্ছদ ছাপানো হবে। দৈবাৎ যদি ছবি তোলায় ভুল হয় অথবা ফটোগ্রাফারের ক্যামেরা কাজ না করে তাহলে সব চেষ্টাই মাঠে মারা যাবে। আবার ছবি তোলা হলো। কিন্তু মেশিন যদি ছাপার কাজে সমস্যার সৃষ্টি করে তাহলেও কাজের কাজ কিছুই হবে না। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার অপার রহমতে ঘড়ির কাটায় সবকিছুই পরিকল্পনা মতো সম্পন্ন হলো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া মাত্র ছবি তুলে তা সরবরাহ করা হলো ছাপার মেশিনে। মাত্র কয়েক মিনিট আগে তোলা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসহ আনন্দ আলোর বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ হলো বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের অনুষ্ঠান স্থলেই এবং তা তাৎক্ষণিক ভাবে প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দিলেন চ্যানেল আই-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সুরের ধারার সভাপতি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ আনিসুজ্জামান ও সুরের ধারার চেয়ারম্যান রবীন্দ্র কন্যা রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। আনন্দ আলোর বিশেষ সংখ্যার কাভারে কয়েকমিনিট আগে তোলা নিজের ছবি দেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবাক হয়ে যান। নিজেই পত্রিকাটির দুটি কপি পাশে দাঁড়ানো শিক্ষাগুরু আনিসুজ্জামান এবং রবীন্দ্র সংগীত কন্যা রেজওয়ানা চৌধুরীর হাতে তুলে দিয়ে হাস্যোজ্জ্বল মুখে পত্রিকাটি দর্শকদের সামনে তুলে ধরেন। চ্যানেল আই-এর পর্দায় দেশ-বিদেশের কোটি কোটি দর্শক অনিন্দ্য সুন্দর এই দৃশ্য অবলোকন করে। আনন্দ আলো পরিবারের জন্য এ এক পরম মুহূর্ত। এজন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা আমাদের প্রিয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।