Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

দেশের টিভি চ্যানেলে বিদেশি অনুষ্ঠান যোগ্যতার বিকল্প নাই

আনন্দ আলো প্রতিবেদন: বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলে বিদেশি টিভি সিরিয়াল, বিদেশি চলচ্চিত্র, বিদেশি অনুষ্ঠান কেন প্রচার হবে- এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। আরও বিতর্ক দেখা দিয়েছে বাংলাদেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন পাশের দেশের একাধিক টিভি চ্যানেলে প্রচারকে কেন্দ্র করেও। বিদেশি ভাষার টিভি সিরিয়াল এই দেশের টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচার শুরু হয়েছে বহু বছর আগে থেকেই। এই দেশে যখন ছিল বিটিভি যুগ অর্থাৎ বাংলাদেশ টেলিভিশন ছিল একমাত্র টিভি চ্যানেল তখন বিদেশি ভাষার টিভি সিরিয়াল প্রচার হয়েছে বিদেশি ভাষাতেই। ডালাস, চার্লিস এঞ্জেল, ফলগাই, ম্যাগাইভার, রুটসসহ একাধিক ইংরেজি ভাষার টিভি সিরিয়াল তখনকার দিনে প্রচার হয়েছে বিটিভিতে। তখনকার দিনে কোনো পক্ষ থেকেই বিদেশি ভাষার অনুষ্ঠান বিশেষ করে টিভি সিরিয়াল ও ছায়াছবি নিয়ে তেমন কোনো বিতর্ক দেখা দেয়নি। বরং এই বিষয়টিতে সকল মহল থেকে উৎসাহ দেয়া হয়েছে।

বিটিভি যুগ পেরিয়ে দেশের টেলিভিশন মাধ্যম এখন অনেক বড় ও বিসৱৃত হয়েছে। এখন চলছে স্যাটেলাইট যুগ। দেশে এখন ৩০টির মতো টিভি চ্যানেল কার্যকর। শোনা যাচ্ছে, অচিরে আরও ১০/১২টি টিভি চ্যানেল আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। প্রযুক্তির কল্যাণে দেশ-বিদেশে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এখন নিমিষেই এসে যায় হাতের মুঠোয়। দেশেরটা বাদ দিলেও আরও শতাধিক টিভি চ্যানেল চোখের সামনে হাঁটাচলা করে। এ বলে আমাকে দেখ। ও বলে আমাকে দেখ… এমন পরিস্থিতিতে তথ্য গোপন করার এখন আর কোনো সুযোগ নাই। আরও সুযোগ নাই তথ্যকে বিকশিত করতে বাধা দেয়ারও। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে হঠাৎ বিতর্ক দেখা দিয়েছে নিজেদের চ্যানেলে বিদেশি ভাষার অনুষ্ঠান প্রচার হবে কি হবে না এই নিয়ে জোর বিতর্ক।

হঠাৎ কেন এই বিতর্ক? বিশেষ কোনো কারণ আছে কী? হ্যাঁ, কারণতো অবশ্যই আছে। প্রসঙ্গক্রমে সেই পরিচিত গল্পটিই আবার বলতে চাই। বাঘ এলো বাঘ এলো… সেই গল্পটি সবার জানা। তবুও পরিস্থিতি বুঝাবার জন্য গল্পটি আবার উল্লেখ করতে চাই। এক রাখাল মাঠে গরু চড়ায়। প্রায় সে মজা করার জন্য ‘বাঘ এলো বাঘ এলো’ বলে চিৎকার দেয়। মানুষজন দৌড়ে আসে। দেখে রাখাল খিলখিল করে হাসছে। এভাবে প্রায়ই সে মানুষকে ডেকে এনে বিরক্ত করে। একদিন সত্যি সত্যি বাঘ আসে। রাখাল চিৎকার, চেঁচামেচি শুরু করে দেয়। কিন্তু এবার আর কেউ তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে না। বাঘের আক্রমণে প্রাণ হারায় রাখাল।

অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে আমাদেরও প্রাণ হারানোর মতো অবস্থা। বাংলাদেশে টেলিভিশন চ্যানেল বাড়ছে, সেই  অনুযায়ী দর্শক বাড়ছে না। নিজের ঘরের টেলিভিশন চ্যানেল ছেড়ে পাশের ঘরের টেলিভিশন চ্যানেলের দিকে ঝুঁকছিলেন অনেক দর্শক। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ দর্শক কিন্তু টিভি চ্যানেলগুলোকে আকারে ইঙ্গিতে বারবারই তাগাদা দিয়ে যাচ্ছিল বদলাও, নিজেদেরকে বদলাও। কিন্তু টিভি চ্যানেল গুলোর কারও মধ্যেই যেন কোনো তাড়া লক্ষ্য  করা যাচ্ছিল না। ভাবটা এমন চলছে তো চলুক। কিন্তু ততদিনে দেশের টিভি দর্শক একটু বিরক্তই হয়ে উঠেছে। অনেকে পাশের দেশের টেলিভিশন অনুষ্ঠানের প্রতি ঝুঁকতে শুরু করে। বিশেষ করে পাশের দেশের বাংলা টিভি সিরিয়ালের প্রতি অনেকে আকৃষ্ট হয়। বোধকরি এটা বুঝতে পেরে দেশের একটি নতুন টিভি চ্যানেল শুরুতেই বদলের ডাক দেয়। সুলতান সুলেমান নামে বিদেশি ভাষার একটি টিভি সিরিয়াল বাংলায় ডাবিং করে প্রচারের সিদ্ধান্ত নেয়। প্রথম দিকে মিডিয়া সংশ্লিষ্ট অনেকে এই ব্যাপারটাকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি। অনেকে ভেবেছিল নতুন টিভি চ্যানেলে বিদেশি ভাষার টিভি সিরিয়াল হয়তো তেমন কেউ দেখবে না। পপুলার হবে না। কিন্তু সকল ধারণা পাল্টে দিয়েছে ‘সুলতান সুলেমান’। বলা যায় এই একটি অনুষ্ঠানের কল্যাণে টিভি চ্যানেলটি এখন বেশ দর্শক প্রিয়।

বোধকরি এটা বলাই যায় ‘সুলতান সুলেমানের সাফল্য অন্যান্য টিভি চ্যানেলকেও উদ্বুদ্ধ করেছে। আর তাই দেশের একাধিক টিভি চ্যানেলে বাংলা ডাবিং এ বিদেশি ভাষার টিভি সিরিয়াল প্রচার শুরু হয়েছে। এই সিরিয়ালগুলোর দর্শকও প্রচুর। তবে বিদেশি সিরিয়াল নিয়ে শুরু হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। নির্মাতাদের কেউ কেউ এ ব্যাপারে আপত্তি তুলেছেন।

দেশের টিভিতে বিদেশি সিরিয়াল এবং বিদেশি টিভি চ্যানেলে বাংলাদেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচারকে কেন্দ্র করে মিডিয়ায় কার্যত এক ধরনের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। দেশের স্বার্থে এই অস্থিরতা দূর করা জরুরি। প্রযুক্তিগত বিস্ময়কর উন্নয়নের এই যুগে টেলিভিশনে অনুষ্ঠান প্রচারের ক্ষেত্রে ‘দেশি না বিদেশি’ এই বিতর্কের বোধকরি প্রয়োজন নাই। একটি টেলিভিশন চ্যানেলে দর্শক ভালো অনুষ্ঠান দেখতে চায়। সেখানে একটি ভালো বিদেশি অনুষ্ঠান প্রচারের ক্ষেত্রে তো কোনো বিতর্ক ওঠার কথা নয়। তবে আমরা যা কিছু করব, দেখাব তা যেন দেশের সংস্কৃতিকে বাধাগ্রস্ত না করে এটা লক্ষ্য রাখা সবারই জরুরি কর্তব্য।

বিতর্ক উঠেছে বিদেশি অনুষ্ঠান কেনাকে কেন্দ্র করে। এক পক্ষ বলছে কিছু কিছু টিভি চ্যানেল অনেক টাকা দিয়ে বিদেশি নাটক, সিরিয়াল কিনছেন। যা দেশের জন্য মোটেও মঙ্গলজনক নয়। অন্য দিকে আরেকটি পক্ষ বলছেন, অনেক টিভি চ্যানেল তো বিদেশি নিউজ কিনছে। নিউজ কেনা গেলে নাটক কেন কেনা যাবে না?

দেশের বিভিন্ন পণ্যের বিজ্ঞাপন পাশের দেশের টিভি চ্যানেলে প্রচারের বিরোধিতা করছেন অনেকে। তাদের মন্তব্য- এর ফলে দেশের টাকা বিদেশে যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিজ্ঞাপন বিশেষজ্ঞ বলেছেন- প্রচারেই প্রসার বলে একটি কথা আছে। বিজ্ঞাপন প্রচার ও প্রকাশ করা হয় মূলত: পণ্যটির প্রতি কনজ্যুমারের আগ্রহ সৃষ্টির জন্য। বাংলাদেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন কেন পাশের দেশের টিভি চ্যানেলে প্রচার হচ্ছে তা বুঝতে হবে। পাশের দেশের এমন অনেক টিভি চ্যানেল আছে যার ভিউয়ার বাংলাদেশে নিজেদের অনেক টিভি চ্যানেলের চেয়েও বেশি। কাজেই বিজ্ঞাপন প্রচারের ক্ষেত্রে ঐ টিভি চ্যানেলটি তো প্রায়োরিটি পাবেই।

তিনি বলেন, পরিস্থিতি আসলেই সুখকর নয়। এজন্য প্রয়োজন দেশের টিভি চ্যানেলগুলোর আন্তরিকতা। চমক চাই একটা চমক। এজন্য চাই ভালো পরিকল্পনা ও ভালো অনুষ্ঠান। দর্শক যাতে নিজেরটা ছেড়ে অন্যের দিকে চোখ না ফেলে। এটা করা গেলে নিজেদের পণ্যের বিজ্ঞাপন অন্যদের চ্যানেলে যাবে না এটা নিশ্চিত।

আন্দোলনের ডাক

বিভিন্ন চ্যানেলে বিদেশি সিরিয়াল বাংলা ডাবিং করে প্রচারের বিরুদ্ধে টেলিভিশন মিডিয়ার ১২টি সংগঠন এক প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে একটি সংগঠন গঠন করেছে, নাম দেয়া হয়েছে ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনাল অর্গানাইজেশন এফটিপিও। সংগঠনগুলো হলো- টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশন, ডিরেক্টর গিল্ড, টেলিভিশন নাট্যশিল্পী ও নাট্যকার সংসদ টেনাশিনাস টেলিভিশন নাট্যকার সংঘ, অভিনয়শিল্পী সংঘ, ক্যামেরাম্যান অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, শুটিং হাউস ওর্নাস অ্যাসোসিয়েশন, টেলিভিশন টেকনিশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন, মেকআপ আর্টিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন, টেলিভিশন লাইট হাউজ অ্যাসোসিয়েশন, টেলিভিশন লাইট ক্রু অ্যাসোসিয়েশন, সহকারী পরিচালক সমিতি এবং প্রযোজনা ব্যবস্থাপক সমিতি।

ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে

-এস এ হক অলিক, সাধারণ সম্পাদক, ডিরেক্টর গিল্ডস

আমরা বেকার হয়ে যাচ্ছি, আমাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাচ্ছে। এখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে আমাদের প্রতিবাদের কোনোও বিকল্প নেই। দেশে এখন অনেক বিদেশি নির্মাতা কাজ করছে যাদের ওয়ার্ক পারমিট নেই। আমাদের দাবি হলো- কাজ করার আগে তাদের সরকারের অনুমতি নিতে হবে এবং একটা নিয়মের মধ্যে আসতে হবে তার মধ্যে ভাগ বসালো বিদেশি সিরিয়াল। বিদেশি সিরিয়ালগুলো জনপ্রিয় চ্যানেলগুলোতে প্রাইম টাইমে প্রচার হচ্ছে। তার মানে কি আমাদের পেটে লাথি মারার জোগাড়। এখন আমাদের একমাত্র চাওয়া এসব বন্ধ হতে হবে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এসব মোকাবিলা করতে হবে। নইলে আমরা অথৈই সাগরে ডুবে মরবো।

এখনই প্রতিরোধ জরুরি!

-মাসুম রেজা, সভাপতি নাট্যকার সংঘ

নাট্যকার সংঘের সভাপতি মাসুম রেজা বলেন, নব্বই দশকেও আমাদের দেশের টিভি নাটক বিদেশে বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল। তারা আমাদের নাটক দেখার জন্য সপ্তাহ ধরে অপেক্ষা করতো। সেই হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে নাটকের বাজেট বাড়িয়ে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

আমাদের সমৃদ্ধ সংস্কৃতিকে ধারণ করে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। দেশের সংস্কৃতিকে ধারণ করে নাট্যকর্মীরা, নাট্যকাররা দীর্ঘদিন ধরে অনেক কষ্ট করে তিল তিল করে তুলেছে নাট্যাঙ্গন। সেই অঙ্গন যদি হুমকির মুখে পড়ে তবে আমরা সেটা মেনে নেব না। আমরা প্রতিযোগিতা চাই কিন্তু অসম অসুস্থ প্রতিযোগিতা চাই না। বিদেশি যে সিরিয়ালগুলো একযোগে জনপ্রিয় চ্যানেলগুলোর প্রচার করছে তার সঙ্গে কি আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির কোনো মিল কি আছে? এসব আমাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। এসবের প্রতিরোধ এখনই জরুরি।

আমরা বিদেশি সিরিয়াল প্রচার করবো না

-মাহফুজুর রহমান, চেয়ারম্যান, এটিএন বাংলা

বিভিন্ন চ্যানেলে বিদেশি সিরিয়াল বাংলায় ডাবিং করে প্রচার করায় দেশব্যাপী আন্দোলন শুরু হয়েছে। সেই আন্দোলনের প্রতি একাত্ম ঘোষণা করে এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান  বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি বিদেশি কোনো সিরিয়াল বাংলায় ডাবিং করে এটিএন বাংলার অনুষ্ঠান মালায় প্রচার করব না। এবং আমি অন্যান্য চ্যানেলের সম্মানিত ওনারদের প্রতি আহ্বান জানাই তারা যেন বিদেশি সিরিয়াল প্রচার না করেন। এতে শুধু  আমাদের সাংস্কৃতিক বিকাশই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে না পাশাপাশি মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রাও বিদেশে চলে যাচ্ছে। আমি আশা করি সবাই দেশের স্বার্থে এক হয়ে বিদেশি সিরিয়াল প্রচার না করার পক্ষে অবস্থান নেবেন।

এটা অত্যন্ত দুঃখজনক

-মামুনুর রশীদ, আহ্বায়ক, এফবিপিও

বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনাল অর্গানাইজেশন এফবিপিও’র আহ্বায়ক। তিনি বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখ জনক, আমাদের দেশের টিভি চ্যানেল গুলো দেশের স্বার্থ না ভেবে, সাংস্কৃতিক বিকাশ ও স্বার্থ সংশ্লিষ্টতার কথা না ভেবে বিদেশি সিরিয়াল আমদানি করে বাংলা ডাবিং করে প্রচার করছে। এতে যেমন বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে চলে যাচ্ছে তেমনি সাংস্কৃতিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যে সব সিরিয়াল দেখা হচ্ছে সেগুলো আমাদের সাংস্কৃতির কোনো মিল নেই। শুধু অর্থ উপার্জনের জন্য এসব করা মোটেও ঠিক নয়। তাছাড়া বিজ্ঞাপন দাতারা তাদের বাজেটের অধিকাংশ ভারতীয় চ্যানেলে দেয়ার পরিকল্পনা করছে। শুধু বিদেশি সিরিয়াল বন্ধ নয় এসব কিছু নিয়ে আমাদের আন্দোলন।

আমরা বিচার বিভাগের কাছে যেতে বাধ্য হবো

-মোজাম্মেল বাবু, আহ্বায়ক, মিডিয়া ইউনিট

দেশের টিভি চ্যানেল বিনিয়োগকারী ও টিভি সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সদস্যরা মিলে গঠন করেছেন মিডিয়া ইউনিট। এ সংগঠনের আহ্বায়ক একাত্তর টিভি প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু, সদস্য সচিব দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসান। মোজাম্মেল বাবু বলেন, বর্তমানে টিভি চ্যানেলগুলো নানান সংকটে রয়েছে। এই সংকটে আশঙ্কাজনক ভাবে লক্ষ্য করা গেছে যে, বিজ্ঞাপন দাতারা তাদের বাজেটের অনেকাংশ ভারতীয় চ্যানেলে দেয়ার পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে। তাই বাংলাদেশে ব্যাংক, অর্থমন্ত্রণালয়, রাজস্ববোর্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, অর্থ পাচারের সুযোগ বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে। আশানুরূপ সহযোগিতা না পেলে টিভি মালিক ও সংশ্লিষ্টরা বিচার বিভাগের কাছে যেতে বাধ্য হবে। টেলিভিশন একটি শিল্প মাধ্যম হওয়ার সত্ত্বেও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কল্যাণে কিংবা সুরক্ষায় তেমন কোনো সহযোগিতা করা হয় না বলেই চলে।

সাংস্কৃতিক আগ্রাসন আমাদের কোনঠাসা করতে যাচ্ছে

-হাফিজুর রহমান সুরুজ, অভিনেতা

দেশীয় সংস্কৃতির পরিপন্থি, বিকৃত ভাষায় ডাবিং করা বিদেশি টিভি সিরিয়াল ও ছবি অনতিবিলিম্বে বন্ধ হওয়া উচিত। এসকল সিরিয়াল ও ছবি আমাদের সংস্কৃতির পরিপন্থি। ১৯৭১ সালে বীর শহীদদের আত্মত্যাগে অর্জিত আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ। স্বাধীন এই দেশে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, ঐহিত্য সমৃদ্ধির লক্ষে আমাদের নাটক, সাহিত্য, চলচ্চিত্র, গান বিকশিত হচ্ছে। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি যখন সারা বিশ্বে প্রশংসিত হচ্ছে তখন বিদেশি সাংস্কৃতিক আগ্রাসন আমাদের কোনঠাসা করতে চাচ্ছে। আমি এবং টেনাশিনাসের পক্ষ থেকে বিদেশি ভাষার সিরিয়াল বন্ধের আহ্বান জানাই। আমি মনে করি বিদেশি সিরিয়াল অবাধে চলার কারণে নাট্যকার শিল্পী, টেকনিশিয়ানদের কাজের পরিধি কমে যাচ্ছে। এবং এই শিল্প মাধ্যম হুমকির মধ্যে পড়ছে।