সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © 2001-2021 - আনন্দ আলো
মামুনুর রহমান
চঞ্চল চৌধুরী নামটি বাংলাদেশের মিডিয়া জগতে ব্যাপক আলোচিত। বাংলাদেশের এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল যে এই অভিনেতাকে চেনেন না। চঞ্চল চৌধুরী এমন একজন খ্যাতনামা অভিনেতা যিনি তাঁর অভিনয় গুণে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই প্রচুর ভক্তের মনের গভীরে আসন করে নিয়েছেন। দুর্দান্ত অভিনয়ের জন্য তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার পেয়ছেন একাধিকবার। মঞ্চ ও ছোটপর্দায় অভিনয়ের মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। এখন ছোট ও বড় পর্দায় সমান জনপ্রিয়।
১৯৭৪ সালে ১ জুন চঞ্চল চৌধুরী পাবনা জেলার কামারহাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম রাধা গোবিন্দ চৌধুরী। মা নমিতা চৌধুরী। তিনি কামারহাট প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং ১৯৯০ সালে উদয়পুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপরে তিনি রাজবাড়ি সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলায় ভর্তি হন।
চঞ্চল চৌধুরী তাঁর অভিনয়ের ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন স্টেজ শো এর মাধ্যমে। বিশিষ্ট অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু চঞ্চল চৌধুরীকে পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং গিয়াস উদ্দিন সেলিমের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন এবং দেশের দুই কিংবদন্তি পরিচালকের সঙ্গে পরিচয়ের সুবাদে তিনি টেলিভিশন নাটকে আরও বেশি করে অভিনয় শুরু করেন।
অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী ফরিদূর রহমানের “গ্রাস” নাটকের মাধ্যমে টেলিভিশন নাটকের জগতে পা রাখেন। মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীর তাল পাতার সেপাই নাটকে অভিনয় করার পর থেকেই তিনি দর্শকের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। তিনি কিন্তু শুধু টিভি নাটকের জনপ্রিয় অভিনেতা নন। তিনি বড় পর্দার একজন বিখ্যাত অভিনেতা যিনি ২০০৯ সালে গিয়াস উদ্দিন সেলিম পরিচালিত মনপুরা ছবিতে সোনাই চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তিনি তৌকীর আহমেদের রূপকথার গল্প সিনেমা দিয়ে বড়পর্দায় পর্দায় পা রাখেন।
মনপুরা ছবিতে সু অভিনয়ের জন্য তিনি ৩৪তম জাতীয় চলচ্চিত্র শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পুরস্কার লাভ করেছিলেন। মনপুরা ছবিতে তিনি তাঁর প্রতিভার প্রমান করতে সক্ষম হয়েছিলেন। বক্স অফিসে এই ছবিটি মারাত্মক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এবং বাণিজ্যিকভাবে এটি প্রচুর প্রশংসা অর্জন করেছিল। এছাড়াও মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর আরও একটি জনপ্রিয় সিনেমা চঞ্চল চৌধুরীকে অভিনয় করতে দেখা যায়।
২০১৬ সালে অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীকে অমিতাভ রেজার আয়নাবাজি ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয় করতে দেখা যায়। এই সিনেমাটিতে তিনি এক সাথে ছয়টি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। এই ছবিটি বক্স অফিসে অসাধারণ সাফল্যে লাভ করে। এই সিনেমাটির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা এবং দ্বিতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছিলেন। এটি বাংলাদেশের সিনেমা হলে সব রেকর্ড ভেঙ্গে দেয়।
গত বছর ভারতীয় ওটিটি প্লাটফর্ম ‘হইচই’তে রিলিজ হয়েছিল তার অভনীত আট পর্বের ওয়েব সিরিজ ‘তাকদির’। সৈয়দ আহমেদ শাওকীর পরিচালনায় লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়ির ড্রাইভারের চরিত্রে নাম ভূমিকায় অভিনয় করে চঞ্চল চৌধুরী বাজিমাৎ করেছেন। কাজটি এতোটাই আলোচিত হয়েছে যে, এমএক্স প্লেয়ারেও সিরিজটি হিন্দিতে ডাবিং করা হয়। ইতোমধ্যে চঞ্চল চৌধুরী বহুমুখী চরিত্রে অভিনয় করে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। গিয়াসউদ্দিন সেলিম পরিচালিত পাপপূণ্য এবং মেজবাউর বহমান সুমন পরিচালিত ‘হাওয়া’ ছবিতে চঞ্চল চৌধুরী নতুন চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
চঞ্চল চৌধুরী বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় অভিনেতা যিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরণের নাটক, টেলিভিশন সিরিজ এবং ফিল্ম করেছেন এবং তিনি তাঁর ক্যারিয়ার জীবনে একজন সফল অভিনেতা।