Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

ছোটো ছোটো শিল্পীর বড় বড় গল্প!

ছোট্ট দিঘী একটি বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেই চমকে দিয়েছিল সবাইকে। সেই সময় দিঘীকে ঘিরে মিডিয়া সহ সাধারন মানুষের মাঝেও ব্যাপক আগ্রহ দেখা দেয়। দিঘী যেন অনেকের কাছে বিস্ময়কর বালিকা হয়ে ওঠে। দিঘীর মা অভিনেত্রী দোয়েলই মূলত দিঘীকে দীক্ষা দিয়েছিলেন। বাবা অভিনেতা সুব্রত’র ভূমিকাও কম ছিল না। শিল্পী দম্পতির গুণী মেয়ে দিঘী। অভিনয় প্রতিভার দ্যূতি ছড়ায় সেই ছোট্ট বেলায়। গ্রামীণফোনের সেই বিজ্ঞাপনের পর সিনেমায় ব্যস্ত হয়ে ওঠে দিঘী। বেশ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করে দর্শকের কাছে আরও বেশী আদরনীয় হয়ে ওঠে। কিন্তু হঠাৎ করেই যেন হারিয়ে যায় দিঘী। মায়ের মৃত্যু দিঘীর মাঝে একটু শূন্যতা তৈরি করে। কিন্তু দিঘীর বাবার ভূমিকা ছিল বিশেষ ভাবে উল্লেখ করার জন্য। মেয়েকে আদর, স্নেহ ও ভালোবাসা দিয়ে মানুষ করেছেন। দিঘী কৈশোর পেরিয়ে তারুণ্যে পা দিয়েছে। শোনা যাচ্ছে অচিরেই সে সিনেমায় নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।
পাঠক, ফেলানীর কথা মনে আছে আপনাদের? মেয়েটির না ইশিতা। বিটিভির নতুন কুড়ি অনুষ্ঠানে ফেলানী নামে একটি অসহায়, দুস্থ পরিবারের মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিল ইশিতা। ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছিল তার অভিনয়। সেই ইশিতা পরবর্তিতে টিভি নাটকের নির্ভরযোগ্য অভিনেত্রী হয়ে ওঠে।
শুধু ইশিতাই নয়, আজকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা, তারিনও ছোটবেলায় নতুন কুড়ির মাধ্যমেই অভিনয় জগতে পা রাখেন। বর্তমান সময়ের আলোচিত সুরকার, শিল্পী ইমন সাহা ও মাস্টার শাকিলও শিশু বয়সেই অভিনয় জগতে পা রেখেছিলেন। বিটিভির বহুল আলোচিত টিভি ধারাবাহিক ‘সকাল সন্ধ্যায়’ টুনী নামের একটি কিশোরীর চরিত্রে অভিনয় করেছিল একজন কিশোরী। তাকে আর অভিনয় জগতে দেখা যায়নি। আজকের জনপ্রিয় চিত্র নায়িকা পুজা চেরির কথাই যদি ধরি তাহলে বলতে হবে তার শৈশবের কথা। তার আনন্দময় শৈশবই আজকের জায়গায় এনে দাড় করিয়েছে।
একটা সময় ছিল শিশু-কিশোর অভিনেতা-অভিনেত্রীদের ব্যাপারে মিডিয়া অনেক সরব ছিল। শিশু-কিশোর চরিত্র নাটকে অনেক গুরুত্ব পেত। ফলে অভিনয়ের ক্ষেত্রে শিশু-কিশোরদের আগ্রহ ছিল ব্যাপক। বর্তমান সময়ে তেমনটা দেখা যায় না মোটেও। শুধু অভিনয় নয়, গান নাচ, আবৃত্তির ক্ষেত্রেও শিশু-কিশোরদেরকে তেমন একটা গুরুত্ব দেয়া হয় না। রেডিও, টেলিভিশন এমনকি দৈনিক পত্রিকাতেও শিশু-কিশোরেরা অবহেলিত। শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ। অথচ শিশুদের প্রতিভা বিকাশে নাই কোনো সমন্বিত পরিকল্পনা। শহরে অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিশুদের জন্য খেলার মাঠ নাই। ব্যাগের বোঝা কাধে চাপিয়ে তারা স্কুলে যায় আর আসে। তারপর কোচিং আর প্রাইভেট মাস্টারের সাথে সময় কাটে তাদের। অনেকের একটু খানি অবসরও হয় না। বিটিভি ছাড়া অধিকাংশ টেলিভিশন চ্যানেলে শিশুদের জন্য কোনো অনুষ্ঠান নাই। দুই একটি টেলিভিশন শিশুতোষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করলেও অনুষ্ঠানের ফরমেট বদলে যায়নি। শিশুদেরকে দাড় করিয়ে সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন অথবা আবৃত্তি করানোর মধ্যেই শিশুদের প্রতিভা খুঁজে বের করার সেই পুরনো নিয়ম এখনও চলছে।
একটা সময় আমাদের দেশেও টিভি নাটক ও ধারাবাহিকে শিশু-কিশোরদের চরিত্র বেশ গুরুত্ব পেত। আজকাল অধিকাংশ টিভি নাটকে শিশু-কিশোরদের উপস্থিতিই চোখে পড়ে না। অবস্থাটা এমন আমাদের পরিবারগুলোতে শিশুদের যেন কোনো ভূমিকা নাই।
শুধু কি নাটক? স্কুলেও তো শিশু-কিশোরদের প্রতিভা বিকাশের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নাই। শহরের অধিকাংশ স্কুলে খেলার মাঠ নাই। মুরগির খোয়ারের মতো ছোট্ট পরিসরে শিশু-কিশোরেরা অনেক স্কুলে ক্লাশ করে। বাবা-মায়ের হাত ধরে অনেক কষ্টে স্কুলে আসে অনেকে। স্কুলের অপরিসর জায়গায় ক্লাশ করে। সেখানেই হাটে, সেখানেই দৌঁড়ায়। তারপর যানজট সহ নানান সমস্যার মোকাবিলা করে বাড়িতে ফিরে যায়। তারপর দম ফেলতে না ফেলতেই শুরু হয় কোচিং। অথবা বাড়িতে মাস্টার পড়াতে আসে। ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিশু-কিশোরেরা প্রতিভা বিকাশের সুযোগও পায় না। আবার সুযোগ পেলেও পড়াশুনার চাপে সে সুযোগ নিতেও পারে না। ফলে শুধু শিশু-কিশোরেরাই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে আমাদের ভবিষ্যৎ।
অনেকে হয়তো অবাক হচ্ছেন। ভাবছেন ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্থ হয় কি করে? ভবিষ্যৎ নির্মাণ করেন কে? আমরা যারা এখন বেঁচে আছি তারাই তো ভবিষ্যৎ নির্মাণ করবো নাকি? আজ যারা শিশু তারাই তো হবে ভবিষ্যতের তারকা। কিন্তু সেই সুযোগ কোথায়? মিডিয়ায় তো শিশু-কিশোরদের জন্য তেমন কোনো জায়গায়ই নাই। এক সময় বিটিভিতে ছিল নতুন কুঁড়ি। একথা মানতেই হবে আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যারা আজ নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের অনেকে প্রতিভার দ্যূতি ছড়িয়েছেন বিটিভির নতুন কুড়ি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। অথচ বিটিভিতেও এখন শিশু-কিশোরদের জন্য কার্যকর তেমন কোনো অনুষ্ঠান নির্মাণ প্রচার হচ্ছে না।
অথচ পাশের দেশের কলকাতায় টিভি মাধ্যমে বিভিন্ন অনুষ্ঠান বিশেষ করে নাটকে শিশু-কিশোরেরা ব্যাপক সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। কলকাতার একাধিক টেলিভিশন চ্যানেলে দীর্ঘ ধারাবাহিকে শিশু-কিশোরেরাই মূল চরিত্রে অভিনয় করছে। জি বাংলার জয়বাবা ভোলা নাথ, রানু পেল লটারী, আলো ছায়া সহ একাধিক টিভি ধারাবাহিকে শিশু-কিশোরেরাই কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করছে। তাদের অভিনয়ও বেশ প্রশংসিত। আমরা তাদের অভিনয় দেখি আর অনেকেই ভাবি, আহারে আমরা কেন তাদের মতো হতে পারছি না।
কিন্তু আমরা তো বহু আগেই এসব করে দেখিয়েছি। শহীদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে বিটভিতে শুরু হয়েছিল ‘সংশপ্তক’ নামে একটি দীর্ঘ ধারাবাহিক। সেখানে মালু নামে একজন কিশোরের চরিত্র ছিল অনেক বড়। চরিত্রটি ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছিল। সকাল-সন্ধ্যায় টুনী নামের চরিত্রটিতো র্দশকের অতি প্রিয় হয়ে উঠেছিল। এরপর আর টিভি নাটকে শিশু-কিশোরদের চরিত্র তেমন গুরুত্ব পায়নি। শুধু কি টিভি নাটক? চলচ্চিত্রেও শিশু-কিশোরেরা উপেক্ষিত। প্রতি বছর অসংখ্য চলচ্চিত্র নির্মিত হচ্ছে। কোথাও নেই পরিবারের সব চেয়ে আদরের ধন শিশু-কিশোরেরা।
আনন্দ আলো পরিবার ও বন্ধুর কথা বলে। তাই আমরা একটা দাবী তুলতে চাই। নাটক, সিনেমা সহ সংস্কৃতির অন্যান্য শাখায়ও শিশু-কিশোরদের প্রতিভা বিকাশের পর্যাপ্ত সুযোগ সৃষ্টি করা হোক। ভালো স্কুল চাই, তাদের জন্য খেলার মাঠ চাই। তাদের জন্য আনন্দময় শৈশব চাই।

বাপ-বেটার যুগলবন্দী
বাবা গিটারে সুর তুলে গানের কিছু অংশ গাইছেন, পাশেই ছোট ছেলে তালে তাল মিলিয়ে গেয়েই চলেছে গান। সবচেয়ে নজরকাড়া ব্যাপার হলো, বাবা আর ছেলের পোশাক একই রকম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর জের ধরে এই বাবা আর ছেলেকে এখন অনেকেই চেনে। ‘বাপ কা বেটা’ নামে ব্যান্ডও করেছে তারা। এই দলে ‘বেটা’ নামে পরিচিত ঋতুরাজ ভৌমিক, আর তার বাবা শুভাশীষ ভৌমিক হলেন এই দলের ‘বাপ’। ঋতুরাজের মা মৌসুমী সাহা ক্যামেরার পেছন থেকে এই কলকাঠি নাড়েন প্রতিটি গানের, প্রতিটি পরিবেশনার।
ছোট্ট ঋতুরাজের বয়স এখন ছয়বছর। অস্ট্রেলিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের স্ট্যান্ডার্ড ওয়ানে পড়ে সে। ঋতুরাজের বাবা শুভাশীষ বলেন, ছেলের বয়স যখন ছয়মাস তখন থেকে ওর সামনে গিটার নিয়ে গান করতেন বাবা। এরপর যখন একটু বড় হয়ে ঋতু ইংরেজি মাধ্যমে লেখাপড়া শুরু করল, তখন ছেলে যেন বাংলা সংস্কৃতি ভুলে না যায় আর অতিরিক্ত প্রযুক্তি ব্যবহার না করে, এ জন্য ওর গানের তালিম দেওয়া শুরু করেন বাবা।
চলতি বছর থেকে ঋতুরাজ ও তার বাবা জনপ্রিয় গানের কভার করা শুরু করেন এবং তা ফেসবুকে ছাড়তে শুরু করেন। ‘পেন্সিল’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপেও ‘বাপ কা বেটা’র গান তোলা হলে দেখা গেল মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে সেখানে প্রায় ২৫০ মন্তব্য আর কয়েক হাজার শেয়ার। মন্তব্যগুলোর মধ্যে নেই কোনো বাজে কথা। এরপর উৎসাহ বেড়ে যায় বাবা আর ছেলের। তারপর থেকে প্রতি সপ্তাহে একটি করে আসতে থাকে নতুন গান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাড়তে থাকে ছোট্ট ঋতুর পরিচিতি।
ঋতুরাজের ইচ্ছা বাবা ছাড়াও তাহসানের সঙ্গে একদিন যুগলে গান গাইবে সে। কিছুদিন আগে একটি মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনে মডেল হয়েছে এই ভাইরাল ‘বাপ-বেটা’ জুটি। প্রতিদিন সন্ধ্যারাতে ঘুমিয়ে গেলেও নতুন কিছু করার জন্য সে রাত প্রায় আড়াইটা পর্যন্ত শুটিং করে গেছে দারুণ আনন্দে। বড় হয়ে একসঙ্গে অনেক কিছু হতে চায় ঋতুরাজ বিজ্ঞানী, আর্মি অফিসার, পাইলট আর গায়ক তো অবশ্যই।

হরিণছানার গল্প
এটা বেশ কয়েক বছর আগের ঘটনা। দূরপ্রবাসে বসে ‘হরিণছানার বাংলাদেশ’ গান দিয়ে হঠাৎ আলোচনায় উঠে আসে ছোট্ট অবারিতা আরুশি। ইউটিউবে থাকা গানের ভিডিওতে দেখা যায়, বাবার পাশে বসে ছোট্ট মেয়ে হাত-পা নেড়ে মিষ্টি কণ্ঠে গেয়ে চলেছে গান। মা-বাবার সঙ্গে আরুশি এখন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা। ছোট্ট হরিণছানার এ সময়ের কথা জানতে চাইলে ওর বাবা যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস টেক ইউনিভার্সিটির ল্যান্ডস্কেপ আর্কিটেকচারের সহকারী অধ্যাপক মুন্তাজার মনসুর হেসে জানালেন, ‘সে তো এখন আর ছোট্ট নেই, এখানকারই একটি স্কুলের ফোর্থ গ্রেডে পড়ছে।’
অবারিতা আরুশিকে মা-বাবা গান শোনানো শুরু করেন বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য, দেশের কথা জানানোর জন্য। খুব ছোটবেলা থেকেই আরুশি গান ভালোবাসত। বাবা মুন্তাজার বলেন, ‘২০১১ সালে যখন যুক্তরাষ্ট্রে চলে এলাম তখন ওর বয়স ১৮ মাস। একদিন আমরা সবিস্ময়ে লক্ষ করলাম, আমি গিটারে যে সুরই বাজাই অবারিতা সঙ্গে সঙ্গেই গুনগুন করে উঠছে। শব্দের গাঁথুনি তখনো ওর তৈরি হয়নি, শুধু সুর বেরোচ্ছিল। পুরো বিষয়টা বেশ মজার ছিল। ২০১৩ সালে অবারিতার এ রকম একটা গানের সুরে আমি কথা বসিয়ে লিখেছিলাম ‘বাঘ আর হরিণছানা’। নিজের ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে সেই গান আপলোড করার পর ইন্টারনেটে যে হুলুস্থুল পড়ে যাবে, তা কল্পনাও করিনি।’
মা রোজালিন সামিরা ও বাবা মুন্তাজার মনসুর প্রবাসে থেকেও মেয়েকে বাংলা গানের সঙ্গে জুড়ে রেখেছেন। লেখাপড়ার বাইরে প্রায় তিন বছর ধরে আরুশি শিখছে ভরতনাট্যম। সেখানকার বাংলা বর্ষবরণ বা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান ও নাচে সব সময় অংশ নেয় আরুশি। বাংলায় গান করে, নাচে বাংলা গানের তালে।

গানের পাখি সুতপা
সাদাসিধে পোশাক পরা শান্ত একটি মেয়ে অবলীলায় খালি গলায় গেয়ে চলেছে লতা মঙ্গেশকর আর আশা ভোসলের বিভিন্ন গান। ফেসবুকে ওর গান শুনে অনেকেই তাকে ‘লতাকণ্ঠী’ বলেও সম্বোধন করছে। সুতপা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে হয়ে উঠেছে হাজারো শ্রোতার কাছে পরিচিত। সুতপা মণ্ডলের গান তারই স্কুলের শ্রেণিশিক্ষক ফোনে ধারণ করে ফেসবুকে তুলে দেন। এমন মধুর কণ্ঠে গাওয়া গান তোলপাড় তোলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে থাকা গানপ্রেমীদের মনে।
সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার কোদন্ডা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সুতপা। ছোটবেলা থেকেই মোবাইল ফোনে রেকর্ড করা গান শুনে গাইত, এখনো গায়। প্রায় তিন বছর ধরে আনুষ্ঠানিকভাবে নিচ্ছে গানের তালিম। মৃণাল কান্তি মণ্ডল ও সুমনা মণ্ডলের দুই সন্তানের মধ্যে সুতপা বড়।
‘ভাইরাল’ হয়ে ওঠার কল্যাণে এক ব্যক্তি সুতপার গানে মুগ্ধ হয়ে ওর লেখাপড়ার জন্য ১ লাখ টাকা উপহার হিসেবে পাঠিয়েছেন। এ তথ্য দিলেন সুতপার শিক্ষক বাবা। এমনকি ফেসবুক ইউটিউবের গণ্ডি পেরিয়ে মূলধারার গানের জগতেও এরই মধ্যে নাম লেখা হয়ে গেছে তার। গেল দুর্গাপূজায় কবির বকুলের লেখা ও কুমার বিশ্বজিতের সুরে ‘মুখোমুখি’ নামে একটি মৌলিক গানে কণ্ঠ দিয়েছে সুতপা।

লিউনা এখন তারকা!
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া জামালপুরের পরিচিত মুখ লিউনা তাসনিম, ডাকনাম সাম্য। সে ২৮ নম্বর উত্তর মেলান্দহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। এই বয়সেই সে প্রায় ৭০টি গান মুখস্থ করে ফেলেছে। গানের পাশাপাশি লিউনা নাচে, আঁকে ও কবিতা আবৃত্তি করে। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় জাতীয় ও বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান অধিকারের পুরস্কারও আছে তার অর্জনের ঝুলিতে।
লিউনার বাড়ি জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা এলাকায়। তবে বাবা আজমত আলী মেলান্দহ উপজেলায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের অফিস সহকারী ও কম্পিউটার অপারেটর। তিনি জানান, একদিন লিউনার সহপাঠী ও বন্ধুর বাবা মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তামিম আল ইয়ামীন ছোট্ট লিউনার একটি গান ভিডিও করে ফেসবুশ্রেু তুলে দেন। তারপর একে একে বিভিন্নজন গানের ভিডিওটি শেয়ার করতে থাকে। রাতারাতি ভাইরাল হয়ে ওঠে লিউনার গান। তার গান এতটাই খ্যাতি পায় যে জামালপুর থেকে ঢাকায় আসতে হয় লিউনাকে, গান গাইতে হয় পরিচিতজনদের অনুরোধে। গানের চর্চা চালিয়ে যেতে চায় লিউনা।