Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

এ সি আই পিওর সরিষার তেল আনন্দ আলো জাতীয় ভর্তা প্রতিযোগীতা ২০১৭ আনন্দ মুখর পরিবেশ গালা রাউন্ড সমাপ্ত

সুবর্ণা হক
ভদ্র মহিলা ঝর ঝর করে কেঁদে ফেললেন। কষ্টের নয় আনন্দের কান্না। পুরস্কার বিতরণের মঞ্চে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সামনে একজন বয়স্ক মহিলা কাঁদছেন। এ দৃশ্য দেখে সবাই যেন একটু থমকে গেলেন। ভদ্র মহিলা কাঁদতে কাঁদতেই তার বিজয়ের আনন্দ প্রকাশ করলেন এভাবেÑ আমি স্বপ্নেও ভাবিনি এত বড় মঞ্চে প্রথম পুরস্কার পাব। বলতে পারেন এটাই প্রথম আমার প্রকাশ্যে মঞ্চে আসা। আমি একজন সাধারণ গৃহিণী। সংসার সামলাতেই সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকি। বাইরে আসতে, কিছু একটা করতে ইচ্ছে যে হতো না তা কিন্তু নয়। কিন্তু ঐ যে বললাম স্বামী-সংসার সামলাতে গিয়ে পারিনি। হঠাৎ একদিন পত্রিকায় ভর্তা প্রতিযোগিতার খবর পড়লাম। প্রতিদিন খাবারের পাতে কত পদেরই না ভর্তা থাকে। সেই ভরসায় মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম এবার বাইরে বের হবো। প্রতিযোগিতায় নামবো।
বলতে বলতে আবারও অঝোরে কাঁদতে থাকলেন খালেদা খানম তুলি। এ সি আই পিওর সরিষার তেল আনন্দ আলো জাতীয় ভর্তা প্রতিযোগিতায় সারাদেশে প্রথম হয়েছেন তিনি। বেলে মাছ দিয়ে মাশরুমের ভর্তা বানিয়েছিলেন তিনি।
২৮ এপ্রিল চ্যানেল আই ভবনে প্রতিযোগিতার গালা রাউন্ডে দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছেন যথাক্রমেÑ শামসুন নাহার সাথী ও সৈয়দ রাহাত হোসেন। সাথী বানিয়েছিলেন টাকি মাছের ভর্তা। আর রাহাত বানিয়েছিলেন চিংড়ি ও কুমড়ো বিচির মাখা ভর্তা। আনন্দমুখর পরিবেশে গালা রাউন্ডের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে চ্যানেল আই-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, এ সি আই কনজ্যুমার ব্র্যান্ড-এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ আলমগীর, বিচারকদের পক্ষে দেশের বিশিষ্ট রন্ধন বিশেষজ্ঞ কেকা ফেরদৌসী, বিশিষ্ট শিশুসাহিত্যিক আমীরুল ইসলাম, এ সি আই ফুডস লি. এর বিজনেস ডিরেক্টর ফারিয়া ইয়াসমিন, আনন্দ আলোর সম্পাদক রেজানুর রহমান বক্তৃতা করেন। বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী তনিমা রায় অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন মৌসুমী বড়–য়া।
Vorta-3সকালে চ্যানেল আই-এর ছাদ বারান্দায় গালা রাউন্ডের জন্য নির্বাচিত ১২ জন রন্ধন শিল্পী চ‚ড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। বিচারকের গুরু দায়িত্ব পালন করেন দেশবরেণ্য অভিনেতা, নির্মাতা, চিত্রশিল্পী, ছোটকাকুখ্যাত আফজাল হোসেন, বরেণ্য রন্ধন বিশেষজ্ঞ, রন্ধন গুরু কেকা ফেরদৌসী এবং বিশিষ্ট শিশুসাহিত্যিক আমীরুল ইসলাম। প্রতিযোগিতার বাছাই পর্ব শেষে গালা রাউন্ডের জন্য তানজিমা আক্তার, শামসুন নাহার সাথী, রাজিয়া কাশেম, খালেদা খানম তুলি, সৈয়দ রাহাত হোসেন, বদরুন নাহার চৌধুরী, গাজী সাহিদুর রহমান, হাসিনা আক্তার, রুকসানা পারভিন, জাহানারা লাইজু, এম এন সালেহ বায়জীদ ও সুলতানা মাকসুদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাদের মধ্য থেকে খালেদা খানম তুলি প্রথম, শামসুন নাহার সাথী দ্বিতীয় এবং সৈয়দ রাহাত হোসেন তৃতীয় হয়েছেন। বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার হিসেবে অর্থ মূল্য, ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট, উত্তরীয় এবং এ সি আই-এর সৌজন্যে মশলা সামগ্রী প্রদান করা হয়। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীর অর্থমূল্যের পুরস্কার ছিল যথাক্রমে ২০, ১৫ ও ১০ হাজার টাকা।

যাত্রা শুরুর গল্প

সম্পর্কিত

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খাদ্য সংস্কৃতির এক বিরাট জায়গা আলোকিত করে রাখে মা-বোন ও গৃহিণীদের বানানো হরেক রকমের ভর্তা। দেশে এমন কোনো পরিবার হয়তো পাওয়া যাবে না যে পরিবারে খাবারের সঙ্গে ভর্তা থাকে না। ভর্তা হলো খাবারের অনুপম এক সৌন্দর্য। পাশাপাশি খাবারে রুচিও বাড়িয়ে তোলে। গরম ভাতের সঙ্গে যদি থাকে ভর্তার কোনো আয়োজন তাহলে তো খাবারের আকর্ষণটাই বেড়ে যায়। আর তাই খাবারের সঙ্গে ভর্তাকে আরো জনপ্রিয়, উপাদেয় ও স্বাস্থ্যসম্মত করে তোলার লক্ষ্যেই এ সি আই এবং আনন্দ আলো যৌথভাবে জাতীয় পর্যায়ে ভর্তা প্রতিযোগিতা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়। ১৫ মার্চ চ্যানেল আই-এর ছাদ বারান্দায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ সি আই পিওর সরিষার তেল আনন্দ আলো জাতীয় ভর্তা প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে এ সি আই ফুডস লি. এর বিজনেস ডিরেক্টর ফারিয়া ইয়াসমিন ও আনন্দ আলোর সম্পাদক রেজানুর রহমানসহ দেশের কয়েকজন রন্ধনশিল্পী উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিযোগিতায় সারাদেশ থেকে কয়েকশ প্রতিযোগী ফেসবুক এবং ডাকযোগে চিঠি মারফত আবেদন করে। নানা প্রক্রিয়া শেষে ৬২ জনকে চ্যানেল আই-এর ছাদ বারান্দায় বাছাই পর্বে আহŸান জানান হয়।

বাছাই পর্বেই জমলো মেলা

ঘোষণা ছিল পহেলা বৈশাখ অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সুরেরধারা ও চ্যানেল আই আয়োজিত হাজার কণ্ঠে বর্ষবরণের আনন্দমুখর পরিবেশে এ সি আই পিওর সরিষার তেল আনন্দ আলো জাতীয় ভর্তা প্রতিযোগিতার বাছাই পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলাজনিত কারণে সেদিনের অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়। পরবর্তী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরের দিন ১৫ এপ্রিল বিকেলে চ্যানেল আই-এর ছাদ বারান্দায় বাছাইপর্বের আয়োজন করা হয়। সারাদেশ থেকে প্রতিযোগীরা বাছাই পর্বে অংশ নেন। অনেকে পরিবারের সদস্যদেরও সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন। রং বেরংয়ের পোশাক পরা মায়েরা, বোনেরা ও ভাইয়েরা বাছাই পর্বের পরিবেশকে আনন্দমুখর করে তোলেন। সেদিন তাদেরকে ভর্তা বানিয়ে আনার জন্য বলা হয়েছিল। বিরাট টেবিলের ওপর ৬২ জন প্রতিযোগীর ভর্তা সাজানো হয়। টেবিলটিকে মাঝখানে রেখে দুপাশে চেয়ারে বসেন প্রতিযোগীরা। বিচারকবৃন্দ ঘুরে ঘুরে টেবিলে রাখা ভর্তার স্বাদ গ্রহণ করেন। অন্যতম প্রধান বিচারক আমীরুল ইসলামের নেতৃত্বে বাছাই পর্বে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন বিশিষ্ট অভিনেতা তুষার খান, রাহিমা সুলতানা রীতা, মেহেরুন নিসা, জেবুন্নেসা বেগম, কানিজ ফাতেমা রিপা ও মাহবুবা রেজানুর। বাছাই পর্বের অন্যতম চমক ছিল উপমহাদেশের বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, চ্যানেল আই-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর এবং স্বর্ণকিশোরী নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ফারজানা ব্রাউনিয়ার আগমন। বাছাই পর্বের একপর্যায়ে তারা প্রতিযোগীদের সামনে আসতেই সকলে আনন্দে অভিভ‚ত হয়ে ওঠেন। বাছাই পর্বেই প্রতিযোগিতা জমে ওঠে। বিচারকদের রায়ে সারাদেশ থেকে ১২ জন প্রতিযোগী গালা রাউন্ডের জন্য নির্বাচিত হন।

অবশেষে এলো সেই কাক্সিক্ষত মুহূর্ত!

Vorta-5২৮ এপ্রিল শুক্রবার ছুটির দিনে আয়োজন করা হয় প্রতিযোগিতার গালা রাউন্ড। গালা রাউন্ড মানেই প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলা। ১২ জন লড়বেন চ‚ড়ান্ত লড়াইয়ের জন্য। এবার বিচারক থাকবেন তিনজনÑ বরেণ্য অভিনেতা আফজাল হোসেন, রন্ধনবিদ কেকা ফেরদৌসী ও শিশুসাহিত্যিক আমীরুল ইসলাম। চ্যানেল আই-এর ছাদ বারান্দায় আগেই সাজানো হয়েছিল প্রতিযোগিতার মঞ্চ। লম্বা টেবিলের দুই পাশে ৬ জন করে প্রতিযোগী তাদের ভর্তা বানানোর সরঞ্জাম নিয়ে দাঁড়ালেন। সম্মানিত তিন বিচারকের সামনেই বানালেন নানা পদের ভর্তা। তানজিমা আক্তার কলা আর পেয়ারার মিশ্রণে একটি ভর্তা বানালেন। টাকি মাছের ভর্তা বানালেন শামসুন নাহার সাথী। কাঁচা কাঁঠালের ইলিশ ভর্তা বানালেন রাজিয়া কাশেম, বেলে মাছ দিয়ে মাশরুমের ভর্তা বানালেন খালেদা খানম তুলি, চিংড়ি ও কুমড়ো বিচির ভর্তা বানালেন সৈয়দ রাহাত হোসেন, টাকি মাছের ভর্তা বানালেন বদরুন নাহার চৌধুরী, মাছ, মাংস ও ডিমের থ্রিডি ভর্তা বানালেন গাজী সহিদুর রহমান, আম চিংড়ির শাহী কচু ভর্তা বানালেন হাসিনা আক্তার, মুরগি এবং গরুর মাংসের ভর্তা বানালেন রুকসানা পারভিন, কাঁচা কাঁঠালের মাংসের ভর্তা বানালেন জাহানারা লাইজু, কাঁচা কলার মুচি দিয়ে তেঁতুল ভর্তা বানালেন এম এন সালেহ বায়জীদ ও ইলিশ বেগুন ভর্তা বানালেন সুলতানা মাকসুদ।
বিচারকরা বিচারকার্য শেষ করার পর বললেন সবই ঠিক আছে। তবে ভর্তার ক্ষেত্রে ফিউশনটা একটু বেশি হয়ে গেছে।

ভর্তার যতো নাম!

Vorta-2এ সি আই পিওর সরিষার তেল আনন্দ আলো জাতীয় ভর্তা প্রতিযোগিতায় যে ভর্তাগুলো প্রতিযোগিতা করেছে তার নাম: সজনে ডাঁটার ভর্তা, সজনে পাতার ভর্তা, বাদাম ভর্তা, তিল ও বাদামের ভর্তা, পেঁপে ভর্তা, নিমপাতার ভর্তা, নারকেল চিংড়ির ভর্তা, তেলাকচু পাতার ভর্তা, খেসারির শাক ভর্তা, পুদিনা পাতার ভর্তা, সিদল ভর্তা, বাঁশ কুড়লের ভর্তা, কলার মোচার ভর্তা, গাজরের ঝুরি ভর্তা, ইলিশ ভর্তা, ইলিশ মাছের ফুলজার ভর্তা, লাউবিচির ভর্তা, ডুমুরের বিচির ভর্তা, স্মোকি চিকেন ভর্তা, মগজের সাহেবী ভর্তা, বাহারী বেগুন ভর্তা, চ্যাপা শুঁটকির কুমরো পাতার ভর্তা, নোনা ইলিশ ভর্তা, চিংড়ি বরবটি ভর্তা, ইলিশ মাছের মাথা ভর্তা, কান্দাল ভর্তা, সবজির সবুজ ভর্তা, টক পাতার ভর্তা, লাউ চ্যাপা শুঁটকির ভর্তা, কুমড়ো বড়ির ভর্তা, পুঁটি মাছের শুঁটকির ভর্তা, চুই ঝালে চ্যাপা ভর্তা, পটল খোসার ভর্তা, চিংড়ি এচোড় ভর্তা, কুমড়ো ফুলের ভর্তা, সিম বরবটি মাছের ভর্তা, কচুমুখি ভর্তা, ডিম ফুলুচি ভর্তা, কলাই ডালের বড়ি ভর্তা, কুমড়ো ফুলের ভর্তা, মটরশুটি ভর্তা, কচি কাঁঠালের ভর্তা, কচু পাতার ভর্তা, মিষ্টি আলুর ভর্তা, কাঁঠালের বিচির ভর্তা, লাউয়ের ছিলকার ভর্তা, মুরগির মাংস ও মটরশুটির ভর্তা, সরষে ফুলের ভর্তা, পোড়া রসুনে বেগুন চিংড়ি ভর্তা, টকঝাল ভর্তা, মাংসের ভর্তা, গরুর মাংসের শুঁটকির ভর্তা, তিল তিসির ভর্তা, সরিষার ভর্তা, আচারি সবজি ভর্তা, কাচাকলা ইলিশের ভর্তা, আম টমেটো ভর্তা, কালোজিরা ভর্তা, কচুর লতির ভর্তা, কাঁচা আমের ভর্তা, মুরগির মাংসের ভর্তা, লাউশাক চ্যাপা শুঁটকির ভর্তা, লেমন গ্রাসে ইলিশ ভর্তা, মাছ ও মাংসের শুঁটকির ভর্তা, মিষ্টি আলুর ঝাল ভর্তা, বাইম মাছ ও নারকেল ভর্তা, ইলিশ মাছ ও আলুর ভর্তা ইত্যাদি।

কি পেলেন বিজয়ীরা?

Vortaপ্রতিযোগিতার সেরা ১২ জনই পেয়েছেন আফজাল হোসেন, কেকা ফেরদৌসী ও আমীরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত সার্টিফিকেট ও এ সি আই-এর সৌজন্যে মশলা সামগ্রীর উপহার। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার বিজয়ী পেয়েছেন যথাক্রমে ২০ হাজার, ১৫ হাজার ও ১০ হাজার টাকা অর্থমূল্যের পুরস্কার। সঙ্গে রয়েছে ক্রেস্ট এবং উত্তরীয়।

আনন্দ আলোয় ঈদ বোনাস

আনন্দ আলোর ঈদ সংখ্যা ‘এক ব্যাগ আনন্দ এক ব্যাগ আলো’র বর্ণাঢ্য আয়োজনে থাকবে এ সি আই পিওর সরিষার তেল আনন্দ আলো ভর্তা প্রতিযোগিতায় গালা রাউন্ডের জন্য নির্বাচিত ১২ জনের রেসিপি নিয়ে এক্সক্লুসিভ বুকলেট। এছাড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সেরা ৫০ রাঁধুনীর এক্সক্লুসিভ ভর্তার রেসিপি নিয়ে আগামী বছর একুশে বইমেলা উপলক্ষে রান্নার একটি বই প্রকাশের পরিকল্পনাও রয়েছে।

কথাটা অনেকবার ভেবেছি

-আফজাল হোসেন
নাট্যব্যক্তিত্ব
ভর্তা প্রতিযোগিতার মতো একটি কর্মকাÐে বিচারক হিসেবে আমি কেন জড়িত হবো একথা অনেকবার ভেবেছি। কারণ এই প্রতিযোগিতা তো আর অন্য দশটা প্রতিযোগিতার মতো নয়। খাবার নিয়ে প্রতিযোগিতা। তাও আবার খাবারের নাম ভর্তা। পরে ভেবে দেখলাম আমাদের দেশে প্রতিটি পরিবারে প্রতিবেলায় খাবারের আয়োজনে ভর্তাইতো বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। প্রতিদিন প্রত্যেক বেলা আমাদের খাবারের টেবিলে কোনো না কোনো ভর্তা থাকেই। কাজেই প্রিয় এই খাবারটি নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার।
দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিযোগিরা এসেছেন। তাদের উৎসাহ ও উদ্দীপনা আমাকে মুগ্ধ করেছে। সত্যি এ এক বিস্ময়কর অভিজ্ঞতা। প্রতিযোগিতাটি অব্যাহত থাকুক। সবার জন্য রইলো শুভ কামনা।

সবার জন্য শুভ কামনা

-ফরিদুর রেজা সাগর
ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চ্যানেল আই
ভর্তা নিয়ে প্রতিযোগিতার এই উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। কারণ আমাদের দেশে প্রতিটি পরিবারে প্রতিবেলার খাবারের তালিকায় ভর্তাই গুরুত্ব পায় বেশি। কাজেই ভর্তা নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে এমন একটি প্রতিযোগিতা হতেই পারে। এ সি আই কর্তৃপক্ষ উদ্যোগটির সঙ্গে আনন্দ আলোকে যুক্ত করেছেন এজন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এ সি আই কর্তৃপক্ষ চাইলে আগামীতে প্রতিযোগিতাটিকে আরো বর্ণাঢ্য ও আকর্ষণীয় করে তোলার ক্ষেত্রে চ্যানেল আই সম্ভাব্য সবরকমের সহযোগিতা প্রদান করবে। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সকল প্রতিযোগীর জন্য রইলো অনেক শুভ কামনা।

ফিউশন যেন ঐতিহ্যকে ভুলিয়ে না দেয়
Ñকেকা ফেরদৌসী
রন্ধন বিশেষজ্ঞ
ভর্তা নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে এই প্রতিযোগিতার উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। প্রায় সারাটা জীবনই আমাদের খাদ্য সংস্কৃতির উন্নয়নে কাজ করে গেলাম। আর তাই খাবার নিয়ে বিশেষ কোনো আয়োজন দেখলে আমি খুব খুশি হই। এ সি আই ও আনন্দ আলোর যৌথ উদ্যোগে জাতীয় পর্যায়ে ভর্তা প্রতিযোগিতায় যারা অংশ নিয়েছেন তাদের সবাইকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। গালা রাউন্ডে বিচার করার সময় একটা বিষয়ের অভাব বোধ করেছি। আমাদের ঐতিহ্যবাহী অনেক ভর্তা আছে। সেগুলো আরো বেশি ফোকাস হলে ভালো হতো। অনেকে ভর্তাকে ফিউশনে রূপ দিয়েছেন। এটা দোষের কিছু নয়। তবে ফিউশন করতে গিয়ে আমরা যেন ঐতিহ্যকে ভুলে না যাই। সবার জন্য রইলো শুভ কামনা।

আমার একটি প্রস্তাব আছে

-আমীরুল ইসলাম
শিশুসাহিত্যিক
ভর্তা নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করায় এ সি আই ও আনন্দ আলো কর্তৃপক্ষকে অভিনন্দন। প্রতিযোগিতায় বিচারকার্য সম্পাদন করতে গিয়ে অনেকটাই হিমমিশ খেতে হয়েছে। কারণ প্রতিযোগীদের প্রত্যেকের বানানো ভর্তাই ছিল সেরা। স্বাদের ক্ষেত্রে একটু ‘উনিশ বিশ’ ছিল এই আরকি। আমার একটি প্রস্তাব আছে। প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া সেরা ভর্তা নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক মানের বই প্রকাশ করা যেতে পারে। এ সি আই সাহস দিলে আনন্দ আলোর পক্ষে এটি করা সম্ভব। বইটি ইংরেজি, বাংলা দুই ভাষাতেই হতে পারে। সঙ্গে থাকবে ভর্তার রেসিপি ও রন্ধন শিল্পীর ছবি। প্রতিযোগিতাটি যেন অব্যাহত থাকে এই কামনা করছি।

ভবিষ্যতে আরো আলো ছড়াক এই প্রত্যাশা

-সৈয়দ আলমগীর
নির্বাহী পরিচালক, এ সি আই কনজ্যুমার ব্র্যান্ড
শুক্রবার ছুটির। দুপুরে আমার বাসায় খাবারের তালিকায় দুই প্রকারের ভর্তা ছিল। ভর্তা দিয়ে ভাত খাওয়ার পর দেখলাম অন্য তারকারীর প্রতি আর তেমন আগ্রহ পাচ্ছি না। আমার ধারণা ভর্তা আমাদের খাদ্য তালিকায় সবার কাছেই এভাবেই গুরুত্ব পায়। সে কারণে ভর্তা নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন। আনন্দ আলোকে ধন্যবাদ সুন্দরভাবে প্রতিযোগিতাটি সম্পন্ন করার জন্য। সেই সঙ্গে ধন্যবাদ চ্যানেল আইকেও প্রয়োজনীয় সকল সাপোর্ট দেয়ার জন্য। সম্মানিত বিচারকদের প্রতি রইলো অনেক কৃতজ্ঞতা। আমার দৃঢ় বিশ্বাস ভর্তা নিয়ে জাতীয় পর্যায়ের এই প্রতিযোগিতাটি ভবিষ্যতে আরো বেশি আলো ছড়াবে। সবার জন্য রইলো শুভ কামনা।

অভিনন্দন কৃতজ্ঞতা

-ফারিয়া ইয়াসমিন
বিজনেস ডিরেক্টর, এ সি আই ফুডস লি.
আমরা প্রতিবেলায় ভাতের সঙ্গে কোনো না কোনো ভর্তা খাই। আর তাই ভর্তা ছাড়া খাবার টেবিলের সৌন্দর্য পরিপূর্ণ হয় না। আমাদের প্রতিবেলার আহারে তৃপ্তিও আসে না। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েই আমরা আনন্দ আলোকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে ভর্তা প্রতিযোগিতার এই আয়োজন করেছি। সারাদেশ থেকে বিপুল সাড়া পেয়েছি। রন্ধন শিল্পীদের পাশাপাশি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সাধারণ অনেক গৃহিণীও প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। তাদের সবার আগ্রহ ও উদ্দীপনা আমাদেরকে মুগ্ধ করেছে। প্রতিযোগিতা সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য আনন্দ আলো পরিবারকে অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই। সেই সঙ্গে অনেক কৃতজ্ঞতা চ্যানেল আই-এর প্রতিও। বিচারকার্যে যারা জড়িত ছিলেন বিশেষ করে নন্দিত অভিনেতা আফজাল হোসেন, রন্ধনবিদ কেকা ফেরদৌসী ও শিশুসাহিত্যিক আমীরুল ইসলামের প্রতি রইলো অনেক কৃতজ্ঞতা। ভবিষ্যতে এই উদ্যোগটিকে আরো বড় করতে চাই। সবার জন্য রইলো অনেক শুভ কামনা।