Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

এখনো ঘুরেফিরে ১৮ এর মধ্যেই আছি! – কুমার বিশ্বজিৎ

লক্ষ কোটি তরুণের প্রিয় শিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ। সেই ১৯৮২ সালে ‘তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে’ গান দিয়ে তার পথচলা শুরু। গান করে চলেছেন ৩৩ বছর ধরে। আধুনিক, ক্লাসিক্যাল এবং লোকগীতি সব ধরনের গানের এক উজ্জ্বল তারকা কুমার বিশ্বজিৎ এর সঙ্গে কথা হয় সম্প্রতি এক দুপুরে আনন্দ আলোর স্টুডিওতে বসে। নিচে তারই চুম্বক অংশ। লিখেছেন মোহাম্মদ তারেক

আনন্দ আলো: সঙ্গীত জীবনে ৩৩ বছর পার করলেন। আপনার অনুভ‚তি কী জানতে চাই? কুমার বিশ্বজিৎ: সঙ্গীতের ভুবনে আমার ৩৩ বছর পার হয়েছে এটা আমি কখনই অনুভব করিনি। প্রশান্ত মহাসাগরের যেমন কোনো তল খুঁজে পাওয়া যায় না ঠিক তেমনি সঙ্গীতের বিস্তৃতিও একই রকম গভীর।

আনন্দ আলো: দীর্ঘ পথচলায় শ্রোতাদের প্রত্যাশা কতোটা পূরণ করতে পেরেছেন বলে মনে হয়? কুমার বিশ্বজিৎ: চেষ্টা করেছি কিছুটা হয়তো সফল হয়েছি তাই এখনো গাইতে পারছি এবং আমার অনেক গান জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

আনন্দ আলো: চলচ্চিত্রের গান অর্থাৎ প্লেব্যাক শুরু হয় কীভাবে? কুমার বিশ্বজিৎ: ১৯৮২ সালে নূর হোসেন বলাই পরিচালিত ‘ইন্সপেক্টর’ ছবিতে প্রথম প্লেব্যাক করি। এনিয়ে একটা মজার ঘটনা বলি। ১৯৮২ সালে যখন বিটিভিতে ‘তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে’ গানটি প্রচার হয় তখন স্বাভাবিকভাবে চলচ্চিত্র থেকে প্লেব্যাক করার ডাক এলো। প্রডিউসার রাকিব এবং ডিরেক্টর বলাই ভাই তারা আমাকে ডেকে বললেন, সিনেমায় গান করতে হবে। আমি বললাম সঙ্গীত পরিচালক কে? বললেন আলাউদ্দিন আলী। নামটা শুনে প্রথমে আমি ভয় পেয়ে গেলাম। কারণ ৮০’র দশকে আমরা যখন গান গাওয়া শুরু করি তখন আমাদের কয়েকজন আইকন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে আলাউদ্দিন ভাই অন্যতম। তার গান করব? এতো বিশাল ব্যাপার। তিনি নাকি বলেছেন আমার সাথে দ্বৈতকণ্ঠ দিবেন পাকিস্তানের পপ সম্রাট আলমগীর। একদিন আলাউদ্দিন ভাই গান নিয়ে বসলেন। গান তুললাম। গান তোলার পর আলাউদ্দিন ভাই আমাকে বললেন, গানটা যেহেতু দ্বৈত তুমি আলমগীরের বাসায় যাও। একদিন আলমগীরের বাসায় গেলাম। গিয়ে দেখি সে স্কার্প দিয়ে মাথা ঢেকে বসে আছে। কোনো কথা বলছে না। আলাউদ্দিন ভাইকে বললাম, ভাই উনিতো আমার সাথে কথা বলছেন না। আলাউদ্দিন ভাই বললেন কাল তার রেকর্ডিং তাই প্রস্তুতি নিচ্ছে। বেশি কথা বললে নাকি গলা চুলকায়। এই দ্বৈত গানের মাধ্যমে শুরু হলো আমার প্লেব্যাক গানে পথচলা।

আনন্দ আলো: প্রয়াত নায়ক জাফর ইকবালের সঙ্গে আপনার একটা বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল। সেই সম্পর্কে কিছু বলুন? কুমার বিশ্বজিৎ: সঙ্গীত জীবনের শুরুতেই নায়ক জাফর ইকবালের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। তিনি আমাকে ভীষণ পছন্দ করতেন। কেন করতেন সেটা আমি জানি না। আলাউদ্দিন আলী ভাইয়ের সুরে জাফর ইকবালের অভিনীত ছবির প্লেব্যাক করি। জাফর ইকবাল বলতেন আমার গান ছাড়া অন্য কারো কণ্ঠে লিপ দিবেন না। তার প্রযোজিত প্রথম ছবি ‘প্রেমিক’-এ আমাকে অভিনয় করানোর খুব শখ ছিল। কিন্তু আমি রাজি হইনি। ছবির গান করতে কলকাতায় গেলাম। রেকর্ডিং শেষে যেদিন দেশে ফিরে আসি সেদিনই বিকেলে আমার বাসায় এলেন নায়ক জাফর ইকবাল। এসেই ‘দোস্ত’ বলেই ধুম করে একটা ঘুষি মারলেন পিঠে। বললাম, গান কী ভালো হয়নি? বললেন শুধু ভালো নাদারুণ হয়েছে। ছবির সবগুলো গান কলকাতায় রেকর্ডিং হয়েছিল। জাফর ইকবালের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব ছিল বলে শ্রদ্ধেয়া শাহনাজ রহমতউল­াহ আমাকে দেখলে বলেন, তোমাকে দেখলে আমার ভাই জাফরের কথা মনে পড়ে। এজন্যই শাহনাজ রহমতউল­াহকে আমি মা ডাকি। মিউজিকের প্রতি ওর ভীষণ রকম ভালো লাগা ছিল। অনেক ভালো গান গাইতেন। অনেক স্মার্ট ছিলেন শুধু পোশাক আশাকে না, ওর রুচিবোধ, ইন্টেলেকচুয়াল হাইট, ফ্যাশন সচেতনতা সবই ছিল নজর কাড়ার মতো। শোবিজের আর কারো মধ্যে এরকম দেখিনি। আমি নিজেই দেখেছি তার বাসার শোর‌্যাকে তিনশ রকমের জুতা। জুতা রাখার আলাদা একটা কর্ণার ছিল। জুতার সঙ্গে মিল রেখে ড্রেস পরতেন। এখনকার কোনো নায়কের মধ্যে এমন ফ্যাশন সচেতনতা আছে কিনা জানি না।

আনন্দ আলো: আপনার অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি গান ‘চন্দনা গো রাগ করো না’। এই চন্দনা কী ভালোবাসার মানুষ ছিল আপনার? কুমার বিশ্বজিৎ: এটা গীতিকারের কল্পনা। আমার কাছে তার কোনো অস্তিত্ব নেই।

Kumar-Bijowjitআনন্দ আলো: আপনার সঙ্গীত জীবনের টার্নিং পয়েন্ট কোন গানটি? কুমার বিশ্বজিৎ: ১৯৮২ সালে ‘তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে’ গানটি বিটিভির শিউলিমালা অনুষ্ঠানে গাওয়ার পর মানুষ আমাকে চিনতে শুরু করে। গানটি লিখেছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আব্দুল­াহ আল মামুন। সুর করেছিলেন নকীব খান। তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে গানটা আমার টার্নিং পয়েন্ট হলেও ‘যেখানে সীমান্ত তোমার’ গানটা আমাকে অন্য লেভেলে নিয়ে গেছে। গানটা লিখেছেন কাওসার আহমেদ চৌধুরী আর সুর করেছেন লাকী আখন্দ। এই গানটা আমাকে সঙ্গীতে দীর্ঘস্থায়ী করেছে। একটা ভালো জায়গা করে দিয়েছে।

আনন্দ আলো: নিজের গাওয়া কোন গানগুলো সবচেয়ে প্রিয়? কুমার বিশ্বজিৎ: আমার কাছে নিজের গাওয়া সব গানই প্রিয়। জীবনে ভালোলাগা ছাড়া গান করিনি। ভালো লাগা গানের মধ্যে রয়েছে — যেখানে সীমান্ত তোমার, এখন অনেক রাত, তুমি রোজ বিকেলে, মনেরই রাগ অনুরাগ, আমি নির্বাসনে যাব না, আমার তুমি ছাড়া কেউ নাই, কিছুই নাকি দেইনি তোমায়, সুখ ছাড়া দুঃখ, একটা চাঁদ ছাড়া রাত, যদি দুঁ’ফোটা চোখের জল, তুমি যদি বল পদ্মা মেঘনা, প্রেমের মানুষ, বলো না তুমি ছাড়া কে আছে আমার, কাল ঘুমাতে পারিনি আমি কেঁদেছি রাতে, জন্মাইলে মরতে হবে, মা, আমার গহীন বুকে, যারে ঘর দিলাম, তোরে পুতুলের মতো করে সাজিয়ে — এরকম বহু গান আছে কোনটা ছেড়ে কোনটা বলব।

আনন্দ আলো: আপনার বেশির ভাগ গানে উঠে এসেছে না পাওয়ার আক্ষেপ, বেদনা, বিরহ, দুঃখ কষ্ট। এর কারণ কী? কুমার বিশ্বজিৎ: আমার মনে হয়েছে মানুষের জীবনে বেদনাটাই বেশি। দুঃখটাই অনেক বেশি দীর্ঘস্থায়ী হয়। সুতরাং দুঃখের বিষয়টা যে গানের সঙ্গে মিলে যায় সেই গানটা চিরস্থায়ী হয়ে যায় মানুষের মনে। আমি কিন্তু বিরহের গান একটু ব্যতিক্রমভাবে করার চেষ্টা করেছি। তোমাকে ছাড়া চলবে না, তোমাকে ছাড়া বাঁচব না-এই ধরনের বিরহের গান করিনি।

আনন্দ আলো: গান গাওয়া, সুর করা কোন কাজ করতে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন? কুমার বিশ্বজিৎ: সুরকার সঙ্গীত পরিচালক কিছুই হতে চাই না। আমি শুধু গান গাইতে চাই। গান গাইতে ভীষণ রকম স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক হয়েছি মানুষজনের প্রেসারে।

আনন্দ আলো: বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নতুন শিল্পীরা নিজের গানের চেয়ে অন্য শিল্পীদের পরিচিত গান গাইতে বেশি দেখা যায় কেন? কুমার বিশ্বজিৎ: নতুনরা অনেকেই একাজটা করে থাকে। মূলত চমক দেখানোর জন্য। অন্যের গান করে কখনো নিজের পরিচয় তৈরি করা যায় না। তারা চিন্তা করে না একটি গান করলে আমার কি হবে, না করলে কি হবে। যেমন ঈদে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে বিভিন্ন নামে অনেক অনুষ্ঠান হয়। অনেকে না ভেবেই চেহারা দেখাতে অংশ নেয় সেসব অনুষ্ঠানে। অনেকেই সেখানে অন্যের গান গেয়ে দর্শকদের বিনোদন দিয়ে আসে। কি দরকার এমন বিনোদন দর্শকদের দেওয়ার।

আনন্দ আলো: এই সময়ের নতুনরা কেমন করছে? কুমার বিশ্বজিৎ: নতুনদের উদ্দেশ্যে একটা কথা বলতে চাই, কাউকে উপদেশ দেয়ার জন্য বলছি না। কেননা অনেকে এটা সহজভাবে নিতে পারে না। সঙ্গীত জীবনে আমার ৩৩ বছর কেটে গেছে। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি কেউ যদি ভাবে সোনার ডিম পেয়েছি, জলদি খেয়ে নেই, সেটা তার ব্যাপার। সঙ্গীত এমন একটা জিনিস সেটা ফোর্স করে হয় না, তাড়াহুড়ো করে কিছু হয় না। অসম্ভব সংযম, বিনয়, ধৈর্য, অসম্ভব অনুশীলন না থাকলে কোনোদিন গান করা সম্ভব নয়। রিলেশন মেইনটেইন করে গান গেয়ে বেশি দূর যাওয়া যায় না। আমার যদি গান থাকে, মানুষ এমনি ডাকবে। গান থাকলে সবাই ডাকবে।

আনন্দ আলো: অ্যালবামের গানকে প্রাধান্য দেয়ায় চলচ্চিত্রের গানে সময় দিতে পারেননি। এটা কেন হয়েছে? কুমার বিশ্বজিৎ: চলচ্চিত্রের গানে আমার ব্যাপক উপস্থিতি নেই বলে আমার অতৃপ্তি নেই। আমি আজীবন খুব অল্পতেই তুষ্ট থেকেছি। চলচ্চিত্রে গান করে যা পেয়েছি তাতেই আমি সন্তুষ্ট। কারণ ২০০৯ সালে আমি স্বামী স্ত্রীর- ‘ওয়াদা’ ছবিতে মা গানটি গাওয়ার জন্য শিল্পী এবং সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে পেয়েছি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। আবার ২০১১ সালেও আমি প্রজাপতি ছবিতে ছোট ছোট আশা খুঁজে পেলো ভাষা গানটির জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি। এটাতো কম পাওয়া নয়। অ্যালবামের গানকে প্রাধান্য দিয়ে এসেছি। তা না হলে চলচ্চিত্র থেকে আরো অনেক কিছু পেতাম।

আনন্দ আলো: ডিজিটাল মিউজিক আমাদের দেশের অবস্থা কি মনে করেন? কুমার বিশ্বজিৎ: আমি এ বিষয়ে অনেক আশাবাদী। কিন্তু সময় লাগবে। কারণ আমি এখনই চিন্তা করতে পারবো না যে আমাদের সাধারণ শ্রোতারা অনলাইন থেকে গান কিনে শুনবে। তাদেরকে এই বিষয়টাতে অভ্যস্ত করাতে হবে। তার জন্য সময় প্রয়োজন। যখন তারা সহজেই অনলাইন থেকে গান কিনতে পারবে তখন সব ঠিক হয়ে যাবে। আর অ্যালবামের ওপর আর কতদিন নির্ভর থাকবে শিল্পীরা। তাদেরও অর্থের প্রয়োজন আছে। এখন অনলাইনে অনেক সাইট থেকেই আয় করা সম্ভব।

আনন্দ আলো: গান ছাড়া আর শিল্পের কোন বিষয়ের প্রতি আপনার দুর্বলতা আছে কী? কুমার বিশ্বজিৎ: গান ছাড়া পেইন্টিংয়ের প্রতি আমার দুর্বলতা রয়েছে। আমার কাছে কালিদাস কর্মকার, স্বপন দাশ থেকে শুরু করে উত্তম কুমারের অনেক ছবি আছে। রাশিদ খানের অনেক ছবি আছে আমার সংগ্রহে।

Kumar-Bijjow-jit-3-4আনন্দ আলো: সঙ্গীতের গুণী শিল্পীদের স্মৃতি সংরক্ষণে একটি জাদুঘর স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এটি কতটুকু অগ্রসর হয়েছে? কুমার বিশ্বজিৎ: পৃথিবীর অনেক দেশে এরকম জাদুঘর আছে। লস অ্যাঞ্জেলসে আমি তেমন একটা জাদুঘর দেখেছি, সেখানে শিল্পীদের হাতের ছাপসহ নানা ধরনের জিনিসের সংগ্রহ রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে এখনো সরকারি-বেসরকারিভাবে এ ধরনের কোনো উদ্যোগ নেই। তাই আমার বাড়ির টপ ফ্লোরে শিল্পীদের হাতের ছাপ, স্বাক্ষর ও নানা ধরনের জিনিসের সংগ্রহশালা করার উদ্যোগ নেই। এরই মধ্যে কাজও শুরু করে দিয়েছি। ফ্রেম বানানো আছে। মেলোডি কমিউনিকেশন নামের একটা টিম আমার সাথে থাকবে। ওরা প্রত্যেকটা শিল্পীর বাসায় গিয়ে সংগ্রহ করে নিয়ে আসবে তাদের হাতের ছাপ। তারপর সেটা ড্রাই করে দেয়ালে পেস্ট করা হবে।

আনন্দ আলো: ক্যারিয়ারের ৩৩ বছর পার করেছেন। এমন কিছু কী আছে সেটা করতে না পারার কষ্ট আপনাকে তাড়িয়ে বেড়ায়? কুমার বিশ্বজিৎ: বিভিন্ন সময়ে অনেক কাজই প্রত্যাখ্যান করেছি। ক্যারিয়ারের এই সময়টা আমার ৩৩টা গানই হয়তো মানুষ শুনেছে। আমার মনে হয় সংখ্যাটা আরো বেশি হওয়া উচিত ছিল। আমি যা দিয়েছি দেশ ও দেশের মানুষ আমাকে তার অনেক বেশি দিয়েছে।

আনন্দ আলো: এই সময়টায় ব্যক্তি জীবনে কোনো পরিবর্তন লক্ষ করেছেন? কুমার বিশ্বজিৎ: মানুষ হিসেবে যেমন ছিলাম তেমনই আছি। বয়স কোথায় যাচ্ছে কখনো অনুভব করিনি। শারীরিক ও মানসিকভাবেই শক্ত থাকার চেষ্টা করি। আমি এখনো ঘুরে ফিরে ১৮-এর মধ্যেই আছি।

আনন্দ আলো: আপনি একটু বিশ্রাম চান, অবসর কি খুঁজে নিতে পারলেন? কুমার বিশ্বজিৎ: অবসরের আর সুযোগ কোথায়। একটা না একটা ব্যস্ততা লেগেই আছে। গত দু’তিন বছর একটানা ইউরোপ-আমেরিকা ভ্রমণ করে কাটিয়ে দিলাম। ৩৩ বছর পেরিয়ে এলাম সঙ্গীতে। এখন নিজেকে কিছুটা ক্লান্ত মনে হয়। তবুও ভালোবাসার টানেই ফিরে যেতে হয় শ্রোতাদের কাছে। তাদের জন্য মনপ্রাণ উজাড় করে গাইতে পারি। কেবল বোঝাতে পারি না আমার ঘর সংসার, পরিবার পরিজন আছে। তাদের দিকেও দৃষ্টি দিতে হবে। ব্যয় করতে হবে খানিকটা সময়।

আনন্দ আলো: আপনার পরিবার সম্পর্কে কিছু বলুন? কুমার বিশ্বজিৎ: আমার স্ত্রীর নাম নাঈমা সুলতানা। আর আমার ছেলে কুমার নিবিড়। এই হচ্ছে আমার পরিবার। আর আমাদের পরিবারের মূল কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে নিবিড়। স্কলাস্টিকাতে ক্লাস সেভেনে পড়াশোনা করছে। ও মনে করে বাবার মতো গাইতে পারবে না তাই গায়ক হয়ে লাভ নেই তার। যেহেতু মিউজিকটা তার রক্তের মধ্যে মিশে আছে সেহেতু সে চায় একজন কম্পোজার হতে। পিয়ানো বাজাতে পারে। দেখা যাক বাকীটা কী হয়।