Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

এই সব ভালোবাবাসি!

ভালোবাসা সম্ভাবনার সৌধ গড়ে। আবার নিমিষে সেই সৌধ ভেঙ্গে চুরমারও করে দেয়। ভালোবাসার জন্য কি না করে মানুষ। সাত সমুদ্দুর তের নদী পার হয়ে আসে আবার পার হয়ে যায় ভালোবাসার জন্যই।
বাংলাদেশের বিনোদন জগতে এখন একটাই খবরÑ সালমান শাহ’র আত্মহত্যা। এতদিন ভক্তদের ধারনা ছিল সালমান শাহ আত্মহত্যা করতে পারেন না। তাকে হত্যা করা হয়েছে। অপরাধীর তালিকায় সালমানের স্ত্রী সামিয়াকেই সন্দেহ করা হচ্ছিলো। ২৫ বছর পর পিবিআই সালমান শাহ’র মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করেছে বলে দাবী করছে। পিবিআই এর তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, খুন হননি সালমান শাহ। তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এজন্য প্রেমকেই দায়ী করা হয়েছে। ফ্লাশ ব্যাকটা এমনÑ সহশিল্পী হিসেবে সিনেমায় একের পর এক অভিনয় করতে গিয়ে সালমান ও চিত্রনায়িকা শাবনুর বেশ কাছাকাছি চলে এসেছিলেন। দু’জন দু’জনকে ভালোবেসে ফেলেছিলেন।
সালমানের স্ত্রী সামিয়া এটা বোধকরি মেনে নিতে পারছিলেন না। তাই স্বামীর সাথে তার ঝগড়া লেগেই থাকতো। ধারনা করা যায়, সালমান ও শাবনূরের অন্তরঙ্গতার ব্যাপারে মা নীলা চৌধুরীর শায় ছিল না। ফলে শাশুড়িকেও পছন্দ হতো না সামিয়ার। এক পর্যায়ে সালমান শাহ মারা গেলে অনেকেই ধরে নেয় সামিয়া হয়তো লোক লাগিয়ে সালমানকে হত্যা করিয়েছেন। এক্ষেত্রে সালমানের এক বন্ধু অভিনেতার নামও উঠে আসে।
২৫ বছর পর বোধকরি ঘটনার রহস্য বেরিয়ে এলো। এফবিবিআই সালমান শাহ হত্যার ৫টি কারণ উল্লেখ করেছেন। তবে একথা নিশ্চিত করে বলা যায় ৫টি কারণ মিলিয়ে একটিই বড় কারণ হয়ে উঠেছিলÑ প্রেম। প্রেমের বলি হয়েছেন সালমান শাহ। যদিও সালমান শাহ’র মা পিবিআই এর তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন।
প্রেম জীবনকে শানিত করে। অথচ এই প্রেমকে লুকিয়ে রাখার কত চেষ্টাই না চলে। ঢাকাই ছবির বর্তমান সময়ের একজন চিত্রনায়ক ৫ বছর আগে বিয়ে করেছিলেন। সংসারে তার দুটি ফুটফুটে সন্তান রয়েছে। অথচ ৫ বছর ধরে বিবাহিত জীবনের কথা লুকিয়ে রেখেছিলেন। কি করে এটা সম্ভব হল? এতদিন কেউই জানতো না ওই চিত্রনায়ক বিয়ে করেছেন? স্ত্রীও সন্তানদের নিয়ে নিশ্চয়ই তিনি বাইরে ঘুরেছেন। কেউ কি দেখেনি? অনুসন্ধিুৎসু সাংবাদিকতারই বা কি হল? একজন নায়ক বিয়ে করেছেন। তার দুটি মেয়ে আছে। তারা এই ঢাকা শহরেই থাকে। অথচ কেউ জানলোই না। বিনোদন পত্রিকার সাংবাদিকরাই বা কি করলেন?
অপু বিশ্বাস বাচ্চা পেটে নিয়ে কলকাতায় কাটিয়ে দিলেন এবং শেষে বাচ্চা জন্ম দিয়ে তাকে কোলে নিয়ে এসে জানালেন এই বাচ্চা চিত্রনায়ক শাকিব খানের। তারপর সবার মাঝে হৈচৈ পড়লো। ২ বাচ্চার বাবা চিত্রনায়ক স্বয়ং তার বিবাহিত জীবনের গল্প পত্রিকায় প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, বিবাহিত জীবনের কথা প্রকাশ পেলে তার নায়ক পরিচয়ে হয়তো ভাটা পড়বে। তাই পরিবারের লোকজন নাকি তাকে বিবাহিত না বলার পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু নায়ক মনে করেন এটা ঠিক হয়নি। অভিনয় জানলে বিবাহিত নায়কও পর্দা কাপাতে পারে। দর্শকের প্রিয় হতে পারে। এতদিন বিবাহিত জীবনের তথ্য গোপন করা ভক্তদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। বাহ! বাহ! বেশ! বেশ…

পাঁচ কারণে আত্মহত্যা
আবারও আলোচনায় এলেন কিংবদন্তী চলচ্চিত্র নায়ক সালমান শাহ। তিনি কি আত্মহত্যা করেছিলেন নাকি তাকে খুন করা হয়েছিল এই নিয়ে বছরের পর বছর ধরে নানা তর্ক চলেছে। কখনও মনে হয়েছে সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন আবার কখনও মনে হয়েছে তাকে খুন করা হয়েছিল। কিন্তু সালমান শাহ’র মৃত্যুর কোনো কূল-কিনারাই যেন পাওয়া যাচ্ছিল না। হঠাৎ খবর বের হলো সালমান শাহ’র মৃত্যু রহস্য জানা গেছে। খুন নয় আত্মহত্যা করেছিলেন সালমান শাহ। এর পেছনে সম্ভাব্য ৫টি কারণ রয়েছে বলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা পিবিআই আনুষ্ঠানিক এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে। পিবিআই এর মতে, প্রথম কারণ, সালমান শাহ ও চিত্র নায়িকা শাবনূরের অতিরিক্ত অন্তরঙ্গতা। দ্বিতীয় কারণ, স্ত্রী সামিয়ার সাথে সালমানের দাম্পত্য কলহ, তৃতীয় কারণ, মাত্রাতিরিক্ত আবেগ প্রবণতার ফলে একাধিকবার আত্মঘাতি হওয়ার বা আত্মহত্যার চেষ্টা। ৪র্থ কারণ, মায়ের প্রতি সালমান শাহ’র অতিরিক্ত ভালোবাসা এবং তা জটিল সম্পর্কের বেড়াজালে পড়ে পুঞ্জীভূত অভিমানে রূপ নেয়া।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহ। ওই সময় এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন তার বাবা কমর উদ্দিন আহমদ চৌধুরী। ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহ’র মৃত্যুকে ‘আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু সিআইডির এই প্রতিবেদন প্রত্যাখান করেন সালমান শাহ’র বাবা কমরউদ্দিন। তিনি মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন করেন।
২০০৩ সালের ৩মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠানো হয়। প্রায় ১২ বছর পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। ২০১৫ সালের ১৯ এপ্রিল মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবার রিভিশন আবেদন করেন সালমান শাহ’র মা নীলা চৌধুরী। ২০১৬ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ-৬ এর বিচার ইমরুল কায়েস মা মঞ্জুর করে পিবিআইকে ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেন।
তদন্ত বিষয়ে পিবিআই এর প্রধান বনজ কুমার বলেছেন, পিবিআই এর তদন্তে সালমান শাহকে হত্যার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পারিবারিক কলহ ও মানসিক যন্ত্রনায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তিনি বলেন, ২০১৬ সালে পিবিআই মামলাটির তদন্ত শুরু করে। মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার জবানবন্দী গ্রহণ করতে বেশী সময় লেগেছে।
কিংবদন্তী চিত্র নায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর কারণ উদঘাটিত হওয়ার পর নানা ধরনের মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। সালমান শাহ’র মা নীলা চৌধুরী পিবিআই এর প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন। করে চিত্রনায়িকা শাবনূরকে নিয়ে এখন চলছে জোর কানাঘুষা। স্বামী সংসার নিয়ে এখন বিদেশে রয়েছেন শাবনূর। সেখান থেকেই তিনি বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে তার প্রতিবাদ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
শাবনূরের বরাত দিয়ে দৈনিক প্রথম আলো লিখেছে প্রেম নয় বন্ধুত্বপুর্ণ সম্পর্ক ছিল। অর্থাৎ শাবনূরের ভাষ্যমতে, সালমান শাহ ছিলেন তার বন্ধু। কাজেই তার সাথে প্রেম করার প্রশ্নই আসে না। এর আগে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত শাবনূরের একটি সাক্ষাৎকারের শিরোনাম ছিল ‘প্রেম নয়, ভাইবোনের সম্পর্ক ছিল’।
আনন্দ আলোর পাঠকদের জন্য ওই সাক্ষাৎকারটি হুবহু প্রকাশ করা হলো।