Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

উৎসব জমবে তখনই যখন গুরুত্ব পাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা

শহর, গ্রাম সবখানেই কোরবানি হবে গবাদিপশু।  কিন্তু পশু কোরবানির পর অনেক সময় পশুর রক্ত ও বর্জ্য পদার্থ যথাস্হানে ফেলা নিয়ে অবহেলা করা হয়।  অনেকেই খোলা স্হানে বর্জ্য ফেলে রাখেন।  তাদের জানা উচিৎ এসব বর্জ্য ও নোংরা থেকে ছড়াতে পারে নানা রোগব্যাধি।  সৃষ্টি হতে পারে অসুস্হ ও অস্বাস্হ্যকর পরিবেশ।  তাই কোরবানির পর সুস্হ পরিবেশ র¶ার জন্য সবারই এ বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।  পশু কোরবানির পর পশুর বর্জ্য মাটিতে পুঁতে রাখাই ভালো।  কিন্তু যারা শহরে থাকেন, তাদের প¶ে কোরবানির পশুর বর্জ্য মাটিতে পুঁতেফেলা সম্ভব হয়ে ওঠে না।  তবে একটা উপায় আছে।  বর্জ্যগুলো ব্যাগে ভরে ডাস্টবিনে বা এলাকার একটি নির্দিষ্ট স্হানে ফেলা যেতে পারে।  গ্রামে যারা কোরবানি দিচ্ছেন তারা বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে গর্ত করে বর্জ্য মাটিতে পুঁতে ফেলুন।  যে জায়গাটিতে কোরবানি সম্পন্ন হয়েছে সেখান থেকে দ্র“ত পানি দিয়ে রক্ত পরিষ্কার কর“ন।  রক্ত পরিষ্কারের পর সে স্হানে এন্টিসেপটিক দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।  কোরবানির দিন অনেকেই শখের বসে গোশত কাটতে লেগে যান।  যারা গোশত কাটতে আগ্রহী তারা আগে থেকেই হাতের কাছে প্রয়োজনীয় অ্যান্টিসেপটিক, তুলা ও ব্যান্ডেজ রাখুন।  যখন-তখন সেগুলো আপনার কাজে লাগতে পারে।  গোশত বিলি-বণ্টন শেষে হাতটি ভালোভাবে সাবান ও জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।  শিশুদের শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ¶মতা কম, তাই তাদেরকে কোরবানির গোশত, রক্ত বিশেষ করে বর্জ্য থেকে দূরে রাখুন।  কোরবানিতে ব্যবüত ধারালো ছুরিগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে গরম পানিতে ফুটিয়ে নিরাপদ স্হানে রেখে দিন।  সাবধান থাকুন পশুর বর্জ্য ব্যবস্হাপনায়।  আপনার অসাবধানতা যেন অন্যের দুর্ভোগের কারণ না হয়।  শহরে হলে ড্রেন বা বড় নালার পাশে পশু জবাই করাটাই শ্রেয়।  পশুকে শোয়ানোর সময় এমনভাবে শোয়াতে হবে যেন জবাইয়ের পর রক্ত সরাসরি ড্রেন বা নালায় গিয়ে পড়ে।  অথবা এমন জায়গায় জবাই করতে হবে যেন সেই স্হানটি পরবর্তী সময়ে খুব দ্র“ত পরিস্কার করে ফেলা যায়।  খেয়াল রাখতে হবে জবাই করা পশুর রক্ত যেখানে সেখানে যেন পড়ে না থাকে।  এতে পরিবেশ দূষিত হতে পারে।  এছাড়াও সিটি কর্পোরেশনের পশু জবাই’র নির্দ্দিষ্ট স্হান আছে।  চাইলে সেখানেও পশু জবাইয়ের কাজটি সারতে পারেন।  গ্রামে বা খোলা মাঠে পশু জবাই করতে হলে পশু জবাইয়ের স্হানে গর্ত করে নিন।  যাতে করে পরে সেটি মাটি চাপা দেওয়া যায়।

এখন গরম আর বর্ষাকালের এই সময়ে বিভিন্ন ধরনের রোগের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে।  আবহাওয়া জনিত কারণে সর্দি-কাশি-জ্বর সহ ভাইরাল ফিভার, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস, ডাইরিয়া জন্ডিসের মতো রোগ দেখা যাচ্ছে।  জ্বর হলে মাথা এবং গা-হাত-পা ব্যথায় কাবু হয়ে পড়ছেন আক্রান্তরা।  কোনো কোনো ¶েত্রে আবার শরীরের বিভিন্ন অংশে র্যাশও বের হচ্ছে।  তবে এই ধরনের বিভিন্ন উপসর্গ সহ জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নতুন কোনও বিষয় নয়।  প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

কিছুদিন পরই প্রকৃতির রূপ পাল্টে যাবে।  ঠান্ডা পড়তে শুর“ করবে।  এজন্য এখন থেকেই সতর্ক থাকতে হবে।  না হলে আবহাওয়ার পরিবর্তনের সময়ে শরীর কাবু হয়ে যেতে পারে।  আবহাওয়ার পরিবর্তনের সময়ে শিশু এবং বয়স্কদের প্রতি বিশেষ নজর রাখা উচিত।  যাঁদের অ্যাজমা রয়েছে এই সময়ে তাঁদেরকেও সচেতন এবং সতর্ক থাকতে হবে।  যারা ইনহেলার ব্যবহার করেন, সচেতন থাকতে হবে তাঁদেরকেও।

আবহাওয়ার পরিবর্তনের সময় সাধারণত সর্দি-কাশির প্রকোপ দেখা দেয়।  অনেক ¶েত্রে অ্যালার্জি থেকেও এ সব দেখা দিতে পারে।  কাজেই, বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে, আবহাওয়ার পরিবর্তনের এই সময়ে যেন ঠান্ডা লেগে না যায়।

ঈদে পারিবারিক ব্যস্ততার পাশাপাশি থাকে বন্ধু-বান্ধব থেকে শুর“ করে আত্মীয়-স্বজনকে নিয়ে আলাদা এক ব্যস্ততা।  আর তাই তো এমন দিনে নিজে সম্পূর্ণ সুস্হ্য থাকা খুব প্রয়োজন।  কেননা নিজে সম্পূর্ণ সুস্হ্য-সুন্দর থাকলে ঈদের আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করা যায় খুব সহজেই।  জীবাণুমুক্ত জীবনের জন্যও চাই কিছু নিয়মানুবর্তিতা।  এই সময়টা একটু স্পর্শকাতরই বলা যায়।  একদিকে প্রচন্ড গরম, অন্যদিকে বৃষ্টি- তাই তো গরম আর ঠান্ডার কারনে শরীরে রোগ-জীবাণু বাসা বাঁধে খুব সহজেই।  সুস্হ থাকার জন্য তাই অবলম্বন করতে হবে কিছু সাধারণ কৌশল।  খাবার দাবার থেকে শুর“ করে দৈনন্দিন জীবন-যাপনে নিয়ম মানতে হবে।

পরিচ্ছন্নতার জন্য এই সময়ে দু’বার গোসল করে নেয়াই ভালো।  প্রতিবার গোসলের ফলে শরীরের ক্লান্তি দূর করার পাশাপাশি শরীরকে চাঙ্গা করে তোলে।  শরীরের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য এন্টিসেপটিক সাবান ব্যবহার করা উচিত।  গোসলের ¶েত্রে বিশেষ ধরনের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সোপ ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়।  প্রয়োজনে জার্ম ফ্রি সাবান দিয়ে গোসল করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।  এসব সাবানে একদিকে যেমনি পাওয়া যাবে জীবাণুমুক্ত গোসল তেমনি অন্যদিকে শরীরের সুস্হ্যতার জন্যও মিলবে আলাদা যত্ন।  তাই শরীরকে সম্পূর্ণ সুস্হ্য রাখার গোসলে অবশ্যই জীবাণুমুক্ত সাবান চাই-ই চাই।  অন্যদিকে শরীরে ঘামজনিত দুর্গন্ধ দূর করার জন্য ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করা উচিত।  ডিওডোরেন্ট ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে এবং ঘামকে দূর করে।  ডিওডোরেন্ট গোসলের পরপরই ব্যবহার না করে গোসলের কিছু সময় পর শরীর শুকিয়ে ও ঠাÊা করে তারপর ব্যবহার কর“ন।  এতে ডিওডোরেন্ট দীর্ঘসময় কার্যকারিতা পাবে।

স্বাস্হ্য সুর¶ায় অবশ্যই করণীয় কিছু বিষয়:

মৌসুমি ফল আপনার খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত কর“ন।  এর ফলে আপনার শরীর প্রয়োজনীয় ও অপরিহার্য ভিটামিন পাবে।  আপনার শরীরে ইমিউন সিস্টেমকে বৃদ্ধি করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।  এছাড়াও ফল শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।  ভিটামিন ও খনিজের প্রধান উৎস হল ফলমূল।

সময়মত অবশ্যই খাবার খাবেন।  কোন বেলার খাবার ত্যাগ করবেন না।  কম করে হলেও বারবার খাবার অভ্যাস কর“ন।  চর্বিযুক্ত বা ফ্যাট জাতীয় খাবার যতোটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।

যা-ই খান রিল্যাক্স হয়ে, আস্তে আস্তে ভালোমতো চিবিয়ে খাবেন।  এতে মুখের ভেতরের এনজাইম বেশি সক্রিয় হয়, যা কম খাবারে পেট ভরাতে সাহায্য করবে।

এক ধরনের খাবার না খেয়ে মিক্সড খাবার খান।  মিক্সড খাবারে পুষ্টিগুণ অনেক বেশি।

পানি খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে।  পাশাপাশি ঘরে তৈরি ফ্রেশ জুস খাবেন।

যেসব সবজি ও ফলমূলে পানি বেশি থাকে এবং যেগুলো ফাইবার সমৃদ্ধ, সেসব সবজি-ফলমূল খেতে হবে বেশি বেশি।

রাতে খাওয়ার পর একটু হেঁটে আসতে পারলে খুব ভালো হয়।

খাবারের সঙ্গে কাঁচা লবণ খাবেন না।

আগের দিনই প­্যান কর“ন পরের দিন কী খাবেন।  কম আর বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবারের সমন্বয় কর“ন।

খাবারের মাঝখানে পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।  খাবার খাওয়ার আধঘণ্টা আগে ও পরে পানি খান।

লো-ক্যালরি খাবার মানে শুধু সেদ্ধ, বিস্বাদ রেসিপি নয়, বেশি তেল-মসলা ছাড়াই এগুলোকে মুখরোচক করার পদ্ধতি জেনে নিন।

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সারা বিশ্বেই এখন তাপমাত্রার এলোমেলো ভাব।  এই গরম, এই ঠাÊা, তো এই বৃষ্টি! গ্রীষ্মকালে প্রচÊ গরমে তাপমাত্রার ওঠা-নামা শরীরের জন্য যখন অসহনীয় হয়ে উঠে, তখন সুস্হ থাকার কিছু উপায় জেনে নিন।

এই সময়ে সুতি কাপড়ের হালকা পোশাক পরা উচিত কারণ সুতি কাপড় সূর্যের কিরণ থেকে শরীরকে র¶া করে এবং ঘামকে জমতে দেয় না।  তবে ঘাড় এবং মাথা হালকা কাপড়ে ঢেকে রাখা ভালো যেন সূর্যের তাপ না লাগে।

বাইরে প্রচন্ড গরম আর ঘরের ভেতরে অর্থাৎ অফিস বা বাড়িতে প্রচন্ড ঠান্ডা, যার ফলাফল ‘ঠান্ডা লাগা’।  আর এই পরিস্হিতিতে যদি পানি কম পান করা হয় তাহলে ফলাফল হতে পারে আরো খারাপ।

সকালবেলায় খানিকটা হাঁটাহাঁটি বা সাইকেল চালানো খুবই ভালো।  দুপুরবেলা বা যখন সূর্যের তাপ খুব বেশি থাকে তখন কোনো ধরণের ব্যায়াম করা উচিত নয়।

ট্রেন বা গাড়িতে যাতায়াতের সময় খোলা জানালার বাতাস প্রথমে খুবই আরাম লাগে এটা ঠিক, তবে তা খুবই ভয়ঙ্কর।  এতে নাকের ঝিলি­ দিয়ে রক্ত চলাচলের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।  যার ফলে সহজে যেকোনো ভাইরাস ইনফেকশন হতে পারে।  যদি খোলা জানালার বাতাস উপভোগ করতেই চান তাহলে হালকা সিল্ক বা সুতি কাপড় দিয়ে গলা এবং মাথা পেচিয়ে জানালার পাশে বসুন।

হঠাৎ করে তাপমাত্রার ওঠা-নামার কারণে বিশেষ করে প্রবীণ এবং শিশুদের শরীরের ওপর প্রচÊ চাপ পড়ে।  হঠাৎ করে তাপমাত্রা বেশি হলে সে¶েত্রে খুব আস্তে আস্তে শরীরকে অভ্যস্ত করতে হবে।  কারণ বিভিন্ন সমী¶ায় দেখা গেছে হঠাৎ করে বাইরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় হার্টের রোগীদের সমস্যা হয় এবং অনেক রোগী মারাও যায়।  তাই অতিরিক্ত গরমে অতিরিক্ত কোনো চাপ নেবেন না।

ঘামের মধ্য দিয়ে শরীর থেকে মিনারেল, বিশেষ করে লবণ, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি বেরিয়ে যায়।  একজন মানুষের প্রয়োজন দিনে দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করা।  সবচেয়ে ভালো হয় দুই বা তিনটি পানির বোতল সব সময় কাছে রাখা।

প্রচÊ গরমে অনেকের মাথা ঘোরে এবং বমিভাব হয়।  এর প্রধান কারণ হলো পানি কম পান করায় ধমনির রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়েছে।  ফলে রক্তের চাপ থাকে অস্হির বা অস্হিতিশীল।  চিকিৎসকের পরামর্শ হলোণ্ড একবারে বেশি পানি পান না করে বরং প্রতি আধঘণ্টা পরপর অল্প অল্প করে পানি পান কর“ন।  পানির সাথে লেবুর রস, পুদিনা পাতা বা আদা মেশানো যেতে পারে।

বাইরে তাপমাত্রা বেশি হলে স্বাভাবিকভাবেই খাওয়ার র“চি কমে যায় তাছাড়া গরমে চর্বিজাতীয় বা অতিরিক্ত মসলা খেলে শরীরে আরো বেশি ঘাম হয় তাই বেশি করে ফল খাওয়া উচিত।  কারণ ফলে রয়েছে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন, আঁশ ও মিনারেল।