Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

আসুন সাজি এবারের পুজোয়

নগরের কোলাহল ছাপিয়ে পূজার বাদ্য বেজে ওঠার অপেক্ষা আর মাত্র কয়েক দিনের। মন্ডপ তৈরি ও প্রতিমা গড়ার কাজ চলছে জোরেশোরে। আয়োজন শুরু হয়ে গেছে পোশাক-আশাক নিয়েও। শঙ্খধ্বনি ও ঢাকের আওয়াজে মুখর দুর্গাপূজার এ আনন্দ আয়োজনে নিজেকেও সাজানো চাই বর্ণিল পোশাকে। ষষ্ঠীর শাড়িটা কেমন হবে? দশমীর দিন তো ঐতিহ্যবাহী পোশাকে নিজেকে সাজাতেই হবে। যেহেতু পূজা চলে বেশ কয়েক দিন ধরে, তাই একটি পোশাক তো আর নেওয়া যায় না- চাই বেশ কয়েকটি বর্ণিল পোশাক। আবার দুর্গাকে বরণ করার জন্য যদিও চাই সনাতনী সাজ, কিন্তু ফ্যাশনে আধুনিকতার মিশেল না থাকলে স্বাচ্ছন্দ্যে উৎসবটা উপভোগ করা যাবে না। এ জন্য প্রয়োজন রুচি, সময় ও অনুষ্ঠানের ধরন বুঝে পোশাক নির্বাচন করা। উৎসবে বর্ণিল পোশাক পূজা মানেই রঙের ছড়াছড়ি। বর্ণিলতার সেই ছোঁয়া থাকা চাই পোশাকজুড়েও।
পূজা আর শরৎ মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় পূজার বর্ণিল পোশাক আর সাজসজ্জায়। কাশফুলের শুভ্রতা দেখা যায় পূজার শাড়িতে। সাদা গরদের এই শাড়ির লাল পাড় ধারণ করে শক্তির প্রতীক। আর সাদা যে শান্তির বার্তা পিঠে করে স্বর্গ হয়ে পৃথিবী ঘুরে বেড়ায়। সেই আদিকাল থেকেই সাদা আর লালের সঙ্গে সখ্য গড়ে পূজায় সেজে আসছে মানুষ। লাল পেড়ে সাদা শাড়ির সঙ্গে আলতা রাঙানো পা ও সিঁদুরের রক্তিম ছোঁয়া পূর্ণ করে সনাতনী সাজকে। কপালে বড় একটি সিঁদুরের টিপ আর শাঁখা-পলার উপস্থিতি সেই সাজের জৌলুসকে বাড়িয়ে দেয় আরও কয়েক গুণ। তবে এ সাজ কেবল বিবাহিত নারীদের জন্যই। একটু কম বয়সীরা শাড়ির পাশাপাশি বেছে নিতে পারেন সালোয়ার-কামিজ কিংবা জিন্স-ফতুয়া ও কুর্তাকে। লাল-সাদার পাশাপাশি বিভিন্ন উজ্জ্বল রঙ উঠে আসতে পারে পূজার পোশাকে। কেননা, দুর্গাকে সাদরে বরণ করতে ঐতিহ্য আর সনাতনী সাজের পালে আজ লেগেছে নতুন হাওয়া। যে হাওয়া আধুনিকতার মলাটে মোড়ানো। তাই ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার স্বাচ্ছন্দ্য মেলবন্ধনে গতানুগতিক রঙের পাশাপাশি সবুজ, নীল, বেগুনিসহ অনেক রঙ এসে ধরা দিয়েছে এ উৎসবে। শাড়ির পাশাপাশি এখন সালোয়ার-কামিজ, জিন্স-ফতুয়া, টপস এবং কুর্তায় দেখা যায় এসব রঙ। ফেব্রিক হিসেবে এখনকার পোশাকে প্রাধান্য পেয়েছে ভয়েল, সুতি, অ্যান্ডি সিল্ক, হাফ সিল্ক এবং মসলিন। আর এসবে ব্যবহার করা হয়েছে এমব্রয়ডারি, স্ক্রিনপ্রিন্ট, অ্যাপলিকের কাজসহ সিকোয়েন্স ও মেটালের কম্বিনেশন। আর শিশুদের পোশাকে দেবী দুর্গাকে দেখা যাবে নান্দনিক রূপে। এ বিষয়ে ফ্যাশন হাউস অঞ্জন’সের শীর্ষ নির্বাহী শাহীন আহম্মেদ বলেন, ‘পূজার মূল আনন্দই হচ্ছে দলবেঁধে বন্ধুদের সঙ্গে কিংবা সপরিবারে মন্দিরে মন্দিরে ঘুরে বেড়ানো। দেবী দর্শনসহ পূজার অনুষ্ঠানগুলো আনন্দঘন করে তোলা। আর এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে স্বাচ্ছন্দ্যময় পোশাক। দুর্গাপূজার এবারের আয়োজনে রয়েছে বৈচিত্র্য, পোশাকে এসেছে দুর্গাদেবীর ত্রিশূল মন্ত্র দিয়ে সাজানো বিভিন্ন নকশার তৈরি শাড়ি, পাঞ্জাবি, সালোয়ার-কামিজ, সিঙ্গেল কামিজ, ফতুয়া, টি-শার্ট, উত্তরীয়। রঙের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পেয়েছে সব ধরনের উজ্জ্বল রঙ, যেমন- লাল, কমলা, ম্যাজেন্টা, নীল, হলুদ, বেগুনি, সবুজ ইত্যাদি। এ ছাড়া ভ্যালু অ্যাডিশনে থাকছে ব্লক, স্প্রে, টাইডাই, অ্যাপলিক, মেশিন এমব্রয়ডারি, কারচুপি, আড়ি ইত্যাদি।

এবারের পূজার পোশাকের আয়োজন নিয়ে ফ্যাশন ডিজাইনার বিপ্লব সাহা বলেন, ‘দুর্গাপূজার এবারের আয়োজনে রয়েছে শাড়ি, থ্রি-পিস, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, কুর্তা, টি-শার্টসহ সকল পোশাকে দেবী দুর্গা ও দুর্গার দশ অস্ত্রের ফর্ম, দুর্গাকে নিয়ে বিভিন্ন শ্লোকের মোটিফ নান্দনিকভাবে ব্যবহার করা ডিজাইনের অনুষঙ্গ হিসেবে। আমরা এবার প্রধানত সুতি কাপড় নিয়েই কাজ করেছি। এছাড়া ক্রেতাসাধারণের রুচি ও মূল্যবোধ অনুসারে দৃষ্টিনন্দন এক্সক্লুসিভ এন্ডি, এন্ডি সিল্ক, সিল্ক, জামদানি, মসলিন, রেশমি কটন, ডুপিয়ান কাপড় নিয়ে কাজ করেছি। কাপড়ের বুননে ও রঙে অনেক পরির্বতন আনা হয়েছে।’
আনন্দের এ মুহূর্তগুলো স্বাচ্ছন্দ্যে উপভোগ করার জন্য পোশাক নির্বাচন করতে হবে বুঝে শুনে। ষষ্ঠীর দিন থেকেই মূলত উৎসব শুরু হয়। নানা কাজে কেটে যায় শুরুর দিনটা। এদিন তাই খুব জমকালো পোশাক এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। সাদা কিংবা যে কোনো হালকা রঙের পোশাক বেছে নিন ষষ্ঠীর দিন। সপ্তমীর দিন থেকে একটু একটু করে পোশাকের চাকচিক্য বাড়াতে পারেন। সকালে পূজার অঞ্জলি দিতে যাওয়ার সময় অবশ্য সাদামাটা সুতির শাড়ি বেছে নিলেই ভালো। দিনের বেলার সব অনুষ্ঠানেই সাধারণ পোশাকে আরামদায়ক থাকার চেষ্টা করুন। এ সময় পোশাকের রঙ হওয়া চাই হালকা ও মিষ্টি ধরনের। বিকেল বা সন্ধ্যার দিকে সাজতে পারেন। রাতের বেলা আত্মীয়-স্বজনের বাসায় ঘুরতে যাওয়া হয়। লাল কিংবা মেরুনের মতো গাঢ় রঙের সিল্ক, টিস্যু বা কাতানের শাড়ি বেছে নিতে পারেন এ সময়। ব্লাউজের ঢঙে বৈচিত্র্য নিয়ে আসা যায় নানাভাবে।
লাল ব্লাউজের গলায় কিংবা হাতে সাদা কুচি দিয়ে পূজার আমেজ নিয়ে আসা যায়। যে কোনো শাড়ির সঙ্গেই সুন্দর মানিয়ে যাবে ব্লাউজটি। আরও খানিকটা ভিন্নতা আনতে ফুলহাতার পাড়ে একটি মোটা লেইস কিংবা কয়েকটি চিকন লেইস বসিয়ে নিন। ঘটি হাতার ব্লনাউজও সুতি শাড়ির সঙ্গে দারুণ মানানসই। টিনএজরা ঘোরাঘুরির সুবিধার্থে কামিজ কিংবা কুর্তা-ফতুয়া পরতে পারেন। দশমীর দিন সাজা চাই একেবারে মনের মতো করে। এদিন সিঁদুর খেলা হয়। তাই লাল বা গাঢ় রঙের পোশাক বেছে নেওয়াই ভালো। দশমীর দিন তাঁত বা জামদানি শাড়ির ঐতিহ্যে সাজাতে পারেন নিজেকে। অনেকে এদিন একেবারে সনাতনী কায়দায় সাজতে চান; তারা এক প্যাঁচে অঙ্গে জড়িয়ে নিন ঐতিহ্যবাহী গরদের শাড়িটি। পাশাপাশি টিকলি, নথের মতো ঐতিহ্যবাহী গহনাও থাকতে পারে সাজে। ছেলেদের ক্ষেত্রে পূজার পোশাক মানেই ধুতি-পাঞ্জাবি। একসময় কেবল সাদা রঙের ধুতির প্রচলন ছিল। কিন্তু এখন সাদার পাশাপাশি মেরুন, ঘিয়া, সোনালি, সবুজ কিংবা লাল রঙের ধুতিও পরছেন অনেকেই। যারা মধ্যবয়স্ক, তারা অবশ্য সাদা রঙের ধুতি বেছে নিলেই ভালো করবেন। তরুণরা বাহারি রঙের ধুতি পরতে পারেন। সকালে অঞ্জলি দিয়ে যাওয়ার সময় সুতির পাজামা-পাঞ্জাবি কিংবা ট্রাউজার-ফতুয়ায় স্বস্তিবোধ করেন অনেকে। বিকেলে বন্ধুদের আড্ডায় টি-শার্ট, হাফ শার্ট আরামদায়ক হবে। ধুতি অথবা পাজামার সঙ্গে হালফ্যাশনের শর্ট পাঞ্জাবি গায়ে চাপিয়েও ঘুরতে বেরিয়ে পড়তে পারেন। সন্ধ্যার অনুষ্ঠানে ধুতি-পাঞ্জাবির সঙ্গে উত্তরীয় জড়িয়ে নিলে পূজার আভিজাত্য ও গাম্ভীর্য ফুটে উঠবে বেশ। পূজার দিনগুলোতে মনের মতো সেজে ওঠার প্রস্তুতি শুরু করে দিন এখন থেকেই। তবে যেভাবেই সাজুন না কেন, তাতে উৎসবের আমেজ ও স্বাচ্ছন্দ্য থাকা জরুরি। পূজায় দেশীয় এসব পোশাক কিনতে হলে যেতে পারেন দেশীয় ফ্যাশন হাউজগুলোতে। আড়ং, রঙ, বিশ্বরঙ, অঞ্জন’স, দেশীদশ, প্রবর্তনা, অন্যমেলা, স্বদেশী, নগরদোলা, দেশাল, নিপুণ, নিত্য উপহার, বাংলারমেলা, সাদাকালো সহ এসব ফ্যাশন হাউজে যেতে পারেন। আর আলাদাভাবে শাড়ি কেনার জন্য যেতে পারেন নগরীর বেইলী রোড, নিউ মার্কেট, মৌচাক, কে ক্র্যাফট, বিবিআনা সহ বিভিন্ন মার্কেটে। আর একটু বেশি দামের শাড়ি কিনতে হলে যেতে পারেন বসুন্ধরা শপিং মল কিংবা যমুনা ফিউচার পার্কে। আর একটু সাধ্যের মধ্যে শাড়ি কিনতে হলে যেতে পারেন নগরীর আজিজ সুপার মার্কেটে।

পূজায় আকর্ষণীয় সাজ পেতে
মহালয়ার মাধ্যমে দেবীর আগমনের যে বার্তা ছড়িয়ে পড়ে সপ্তমীর দিনে, অঞ্জলী দিয়ে বরণের মাধ্যমেই শুরু হয় এর মূল আয়োজন। এরই মধ্যে শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। চলছে দুর্গা প্রতিমার রূপ অনেক স্থানে ফুটে উঠেছে। সেই সঙ্গে চলছে পূজার সাজে নিজেকে সাজানোর পরিকল্পনাও। আর, এই সাজে পূর্ণতা এনে দিতে ফ্যাশন হাউজগুলো নিয়ে এসেছে ‘পূজা কালেকশন-২০১৯’। ঐতিহ্য-আধুনিকতার সঙ্গে বাঙালিয়ানার মিশেল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে অনেক সাজপোশাক। এছাড়া অনেক হাউজ পূজার পোশাকে বাঙালির ঐতিহ্য ধরে রেখে যোগ করেছে সমকালীন বৈশ্বিক চল। পছন্দের ড্রেস কেনার এখনই সময়। অন্যদের কেনা শেষ বলে হতাশ হবেন না, সব শ্রেণির ক্রেতার জন্য আলাদা পোশাক আছে। আপনারটা আপনার জন্যই রয়েছে। বিভিন্ন হাউজগুলোতে ঢুঁ মারুন, দেখতে দেখতে আকর্ষণীয় কিছু পেয়ে যাবেন।
একাধিক পোশাক কিনুন
একসময় পূজার সাজ বলতে দোকানে দোকানে শোভা পেত শাড়ি। তবে আবহাওয়ার পরিবর্তন ও নাগরিক ব্যস্ততার প্রভাবে এখন পোশাকের চাহিদা বেশি। পাশাপাশি, পাঁচ দিনের উৎসব হওয়ায় পূজায় ক্রেতারা সাধারণত একই সঙ্গে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের পোশাক চান। কেউবা প্রতিদিনের জন্য আলাদা পোশাক বরাদ্দ রাখেন। আপনি চাইলে একাধিক পোশাক কিনতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার পোশাকের তালিকায় স্পেশাল কয়েকটি পোশাক থাকবে। প্রশংসা করে কেউ কেউ বলবেন, তোর এ পোশাকটা সুন্দর, কিন্তু আমার না ঐটা বেশি ভালো লেগেছে। এক সেট পোশাক থাকলে কারও কারও ভালো নাও লাগতে পারে।
পূজোয় ট্রেন্ডি ও ট্র্যাডিশনাল সাজ
উৎসবের দিনগুলোতে নিজেকে মনের মতো করে সাজানোর জন্য সারা বছর ধরে মুখিয়ে থাকেন প্রায় সব মানুষই। দুর্গাপূজা যেহেতু বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা তাই সাজসজ্জায় থাকা চাই বাঙালিয়ানা। যেহেতু সপ্তাহজুড়ে উৎসব আয়োজন চলতে থাকে, তাই একটি মাত্র পোশাক ও সাজসজ্জায় পরিপূর্ণতা আসে না, এজন্য চাই অনুষ্ঠান উপযোগী পোশাক ও ফ্যাশন। সাজসজ্জায় থাকা চাই আধুনিকতার মিশেল। ঐতিহ্যবাহী পোশাকের পাশাপাশি ফ্যাশনপ্রেমীরা ঝুঁকছেন ট্রেন্ডি পোশাকের দিকেও। পূজার পোশাকে লাল-সাদা রঙের শাড়ি প্রাধান্য পেয়ে থাকলেও টিয়ে, লাল, নীল, বেগুনি, গোলাপি, হলুদ, সবুজ কিংবা মেরুনের মতো রঙগুলোও বেছে নেয়া যেতে পারে এ উৎসবের জন্য। সঙ্গে চুলের স্টাইলকে হরেক রকমের খোঁপা, যা বাঙালিয়ানা সাজকে ফুটিয়ে তুলবে। কপালে টিপ, হাতে শাঁখা, সিঁথিতে সিঁদুর, খোঁপায় খোঁপার কাঁটা বা ফুল। এমন সাজ দিদি, বউদি, মা-খালাদের জন্য হলেও তরুণীরা নিজেদের এমন ঐতিহ্যবাহী সাজে সাজিয়ে তুলতে পারেন। তবে উৎসবের কথা মাথায় রেখে অনেকেই স্বাচ্ছন্দ্য মতো সালোয়ার-কামিজ, জিন্স, ফতুয়া ও কুর্তা বেছে নিতে পারেন।
ইউনিক কিছু বাছাই করুন
পূজার রঙ বলতে আমরা লাল ও সাদাকেই জানি। কিন্তু এখন সে ধারনায় পরিবর্তন এসেছে। আপনি ইউনিক কিছু বাছাই করুন। পূজা উপলক্ষে বিভিন্ন হাউজে শোভা পাচ্ছে লাল-সাদার বাইরে নীল, সবুজ, হলুদ, কমলা, বেগুনি, খয়েরি ও কালো রঙে পোশাক। সিল্ক, রেয়ন, সাটিন, শিফন, লিনেন, কটন ও ভয়েল ইত্যাদি আরামদায়ক কাপড়ে এসব পোশাকে বিভিন্ন ফ্লোরাল মোটিফ, মিরর ওয়ার্ক, অ্যাম্ব্রয়ডারি ও রুচিশীল সিলৌটির সঙ্গে নকশা ফুটিয়ে তুলতে প্রিন্টিং, মিক্সড মিডিয়া ও কন্ট্রাস্ট স্টিচিং ব্যবহার করা করা হচ্ছে। আপনি বরং নিজের ডিজাইনে ব্যতিক্রম কোনো সাজে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারেন।
পোশাকের সঙ্গে ত্বককে গুরুত্ব দিন
শুধু পোশাক নিয়ে ভাবলে চলবে না পাশাপাশি ত্বকের যতেœও নজর রাখতে হবে। সারাদিন পূজা ম-পে ম-পে আর আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে ঘুরতে ঘুরতে ত্বকের উপর অনেক চাপ পড়ে। তাই উৎসবের আমেজের সঙ্গে নিজের সাজের মিল রাখতে হবে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে রূপ চর্চা করতে পারেন। উৎসবের দিনের ব্যস্ততার কথা ভেবে দিনে হালকা সাজ আর রাতের বেলা ভারী ও গর্জিয়াস সাজ নেয়া যেতে পারে। প্রয়োজনে আগে থেকেই বিউটিশিয়ানের সঙ্গে সাক্ষাত করে পরামর্শ নিতে পারেন। সাজসজ্জার জন্য একজন মেকআপ আর্টিস্টের শিডিউল বুক করতে পারেন।
দিনের সাজ
পূজার সময় দিনের বেলার সাজটা বেশ উজ্জ্বল তবে হালকা হওয়াটাই ভালো। কারণ দিনের বেলা মন্দিরে পূজার অঞ্জলি দেয়ার সময় শুভ্র ও ¯িœগ্ধ ভাবটা যাতে থাকে সেদিকে নজর দেয়া উচিত। প্রথমে সানস্ক্রিন ত্বকে লাগিয়ে হালকা বেইজ মেকআপ দিন ত্বকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে। হালকা করে ফাউন্ডেশন লাগিয়ে নিন ত্বকের ওপর। যদি প্যানকেক দিতে চান তবে খুব সাবধানে হালকা করে দিয়ে একটি ভেজা স্পঞ্জ দিয়ে বেন্ড করে নিন পুরো ত্বক। এরপর এর ওপর লাগিয়ে নিন একটু উজ্জ্বল রঙের মেকআপ পাউডার। ব্যস বেইজ তৈরি হয়ে গেল। চোখের সাজে অফ হোয়াইট হাইলাইটস, বাদামি ও কালো রঙের মিশ্রণে অথবা পোশাকের রঙের সঙ্গে মিশিয়ে হালকা রঙের আইশ্যাডো ব্যবহার করুন। পেন্সিল আই লাইনার অথবা শুধু কাজলের একটা হালকা রেখা টেনে চোখের সাজে আনতে পারেন ¯িœগ্ধতা। ঠোঁটে পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে হালকা যে কোনো রঙের লিপস্টিক বা কোরাল কিংবা হালকা গোলাপি লিপস্টিক লাগাতে পারেন। খোঁপা করলে গুঁজতে পারেন ফুল কিংবা বেণি করে চুল বাঁধলেও পছন্দ করে ফুল দিতে পারেন। বিবাহিত হলে বড় করে কপালে লাল টিপ ও সিঁথিতে সিঁদুর দিন। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে গহনা পরতে পারেন। দিনের বেলা ফুলের গহনা ব্যবহার করতে পারেন। কিংবা পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে পার্ল ও পুঁতির গহনা পরতে পারেন।
রাতের সাজ
সন্ধ্যার পর পূজার জন্য একটু গাঢ় করে সাজতে পারেন। তাই রাতের মেকআপ একটু ভালো করে করে নিন। প্রথমে চোখের আশপাশে এবং দাগ থাকলে সেটা ঢাকার জন্য কনসিলার ব্যবহার করে তা ঢেকে নিন। এর ওপর ফাউন্ডেশন লাগিয়ে স্পঞ্জ করে বেইজ মেকআপ করে নিন। এর ওপর ফেইস পাউডার দিন। এবার ভেজা স্পঞ্জ দিয়ে আরও একবার ভালো করে বেন্ড করুন। সিলভার রঙের হাইলাইটস দিয়ে একটু গাঢ় রঙের আইশ্যাডো ব্যবহার করুন রাতের সাজে। আইলাইনার ও কাজল দিয়ে মোটা করে চোখ আকিয়ে নিন। চোখের পাপড়ি ঘন ও বড় দেখানোর জন্য ২-৩ বার মাশকারা ব্যবহার করুন। চোখের মেকআপ গাঢ় হলে লিপস্টিকের রঙ হালকা দেয়ার চেষ্টা করুন। পোশাক ও সাজের সঙ্গে মানানসই করে চুলের স্টাইল করে নিন। খোঁপা, লম্বা বেণি, খোলা চুলেও বেশ লাগবে। এছাড়া চুল স্ট্রেইট বা কার্ল করেও স্টাইল করতে পারেন। পূজার সময় চুলে ফুল থাকা ভালো। তাই যে স্টাইলই করুন না কেন চুলে ফুল গুঁজে নিন। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে গহনার প্রতিও নজর দিন। মেটালের গহনা বেশ ভালো লাগবে রাতের বেলা।