Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

আমাদের সিনেমার দিনকাল!

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেরণাদীপ্ত কথাটি শুনে আনন্দে মন ভরে গেল। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি গর্বের সাথে বলেছেন, রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে সিনেমা দেখার সুযোগ পাই না। কিন্তু বিদেশে যাওয়ার সময় উড়োজাহাজে বসে দেশের সিনেমা দেখি। আমাদের সিনেমা অনেক ভালো।
এর চেয়ে প্রেরনাদীপ্ত কথা আর কী হতে পারে? দেশের প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং বলেছেন, দেশের সিনেমা অনেক ভালো! কিন্তু সত্যিকার অর্থে আমরা কী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রেরণাদীপ্ত বক্তব্যকে সম্মান দিতে পারছি?
এবার ২০১৭ ও ২০১৮ সাল মিলিয়ে দুই বছরে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত গুণী শিল্পীদের মাঝে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করা হল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানের পুরোটা সময় জুড়ে উপস্থিত ছিলেন। পুরস্কার প্রাপ্তদের হাতে দুই বছরের পুরস্কার তুলে দিয়ে দর্শক সারীতে বসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেছেন। চলচ্চিত্রের প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই আন্তরিকতা দেখে বার-বার একই কথা মনে হয়েছে, যে দেশের প্রধানমন্ত্রী চলচ্চিত্রকে এতো ভালোবাসেন সেই দেশে চলচ্চিত্রের কেন এতো করুন অবস্থা। আগে গ্রাম পর্যায়েও সিনেমা হল ছিল। আর এখন দেশের অধিকাংশ বিভাগীয় শহরেও সিনেমা হল নাই। সিনেমা হল ভেঙ্গে আধুনিক মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে। বলা হয়েছিল, যারাই সিনেমা হল ভেঙ্গে মার্কেট করবেন তারাই মার্কেটের একটি ফ্লোরে সিনেমা হল বানাবেন। এব্যাপারে কারও কোনোই আন্তরিকতা নাই। দেশে একের পর এক সিনেমা হল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে হয়তো দেখা যাবে সিনেমা হল বলে কোনো কিছুই থাকবে না। তাহলে সিনেমার ভবিষ্যৎ কী?
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সিনেমার ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির কথা বলেছেন। এটাই যুগের দাবী। কিন্তু ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার হবে কোথায়? এজন্য তো সিনেমা হলের প্রয়োজন। দেশে সিনেমা হল না থাকলে সিনেমা দেখানো হবে কোথায়? আমরা অনেকেই ভালো সিনেমা নির্মাণের কথা বলি। একটি সিনেমার জন্য যেমন ভালো কাহিনী দরকার। তেমনি দরকার ভালো প্রযোজক, দক্ষ অভিনেতা-অভিনেত্রী ও নেপথ্যের দক্ষ কর্মী। ধরা যাক সবই পাওয়া গেল। একটি ভালো সিনেমাও নির্মিত হলো। ওই সিনেমা দেখানো হবে কোথায়? সিনেমা হল তো নাই? সিনেমা চলবে কোথায়?
দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনে একটি করে আধুনিক মানের সিনেমা হল নির্মাণের দাবী উঠেছে। সরকার এ ধরনের একটি উদ্যোগ নিবে বলে শোনাও যাচ্ছে। ধরা যাক, ৩০০টি আধুনিক সিনেমা হল নির্মিত হল। এবার প্রশ্ন উঠবে, ভালো সিনেমা কই?
আমাদের অনেক সৌভাগ্য, দেশের প্রধানমন্ত্রী সিনেমার উন্নয়নের ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক। কিন্তু সিনেমার বৃহৎ পরিবারটি কী এব্যাপারে আন্তরিক?
তবুও সিনেমার জয় হোক।