Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

হোমমেইড নাটক এখন সময়ের দাবি

সৈয়দ ইকবাল:
বাসা থেকে বের হলেই পথেও ঘিরে ধরে তাদের ভক্তরা। একটি মাত্র টিভি ধারাবাহিকে অভিনয় করে এত সাড়া পেয়ে তারা নিজেরাও অবাক। তাই তো আনন্দ আলো কার্যালয়ে এসে খুবই উচ্ছ্বসিত দুজন। পাঠক, এই দুই অভিনয়শিল্পীর নাম আতিক ও জয়ী। তবে নিজেদের আসল নাম ছাপিয়ে বর্তমানে দীপ্ত টেলিভিশনের ‘অপরাজিতা’ নাটকের সুনন্দ ও শিলা দাস নামেই তাদেরকে চিনে সবাই। নিজেদের নাম হারিয়ে যাওয়া নিয়ে একদমই মন খারাপ নয় তাদের। বরং একটি ধারাবাহিকে কাজ করে সেই নাটকের চরিত্রের নামে পরিচিতি হওয়া সত্যিই অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করছে নতুন এই তারকা জুটির। আনন্দ আলোর মুখোমুখি পর্বে আতিক রহমান ও শারমিন জেনি জয়ী বলেছেন, নিজেদের ক্যারিয়ার ও কাজ নিয়ে নানান কথা।
আড্ডার ডালপালা শুরু হয় দীপ্ত টেলিভিশনের ‘অপরাজিতা’ নাটকের বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে। শুরুতেই আতিক রহমান যিনি সুনন্দের চরিত্রে অভিনয় করছেন। তিনি বলেন, হুট করেই আমার এক বন্ধুর মাধ্যমে দীপ্ত টিভিতে আসি অডিশন দিতে। এর আগে আমি জানতে পারি চ্যানেলটির কয়েকটি ধারাবাহিকে নতুন মুখ নিয়ে কাজ শুরু হবে। যাই হোক অডিশন দেয়ার পরই আমাকে ‘অপরাজিতা’ নাটকে সুনন্দ চরিত্রের জন্য কাস্ট করা হয়। এটা সত্যিই অন্যরকম এক অনুভূতি।
নিজের চরিত্র নিয়ে আতিক বলেন, ‘সুনন্দ চরিত্রটি আমার একদম বিপরীত একটি চরিত্র। আমি ব্যক্তি জীবনে যা না তাই এই নাটকে অভিনয় করে দেখাতে হচ্ছে। নাটকে চার বোনের এক ভাই আমি। জীবনে পাওয়া-না পাওয়া এবং চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে নিজেকে একটা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়াই আমার চরিত্রের চ্যালেঞ্জ। খুব উপভোগ করছি চরিত্রটিতে কাজ করে। আমি ব্যক্তি জীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগ থেকে পড়াশোনা করার ফলে অভিনয়ের যে জ্ঞানটা অর্জন করেছি তা এখানে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি।’
আতিকের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনছিল জয়ী। এবার নিজের কথার ঝাঁপি খুললেন তিনি। বললেন, ‘শিলা দাস একটি নেতিবাচক চরিত্র। আমি যখন অডিশন দিয়েছিলাম তখনই চরিত্রটিতে অভিনয় করার জন্য উদ্বুদ্ধ হই। অনেকেই এই চরিত্রটিতে অভিনয় রাজি হয়নি। কিন্তু আমি চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করি। কারণ আমার বিশ্বাস ছিল পারব।’ নাটকটিতে অভিনয় করে কেমন সাড়া পাচ্ছেন? এমন প্রশ্নে উত্তরে জয়ীর বলেন, ‘এতটা সাড়া পাব কখনো ভাবিনি। আমি বাংলাদেশ বিমানে কাজ করি। তাই এয়ারপোর্টে অনেক যাত্রীই আমাকে দেখলে প্রায়শই জিজ্ঞেস করেন আপনি দীপ্ত টিভিতে নাটক করেন না। তখন খুব ভালো লাগে। একটি নাটকে অভিনয় করে এত বেশি রেসপন্স পাব এটা চিনৱাও করিনি।’
Home-mAid-1আতিক বলেন, ‘আমি টিভিতে বেশকিছু নাটকে কাজ করেছি। দেশ টিভির ‘সাতকাহন’ ছিল আমার ক্যারিয়ারের উল্লেখযোগ্য ধারাবাহিক। তবে আমাকে পরিচিতি এনে দিয়েছে এই ‘অপরাজিতা’। রাস্তায়, মার্কেটে কিংবা শপিংমল যেখানেই যাই না কেন মানুষ চিনে ফেলে এবং আগবাড়িয়ে কথা বলে, ছবি তোলে। সত্যিই এটা একজন অভিনেতার জন্য অনেক বড় পাওয়া। এতো গেল নিজেদের অভিনীত ধারাবাহিক ও চরিত্র নিয়ে কথোপকথন। আড্ডার এই পর্যায়ে আসে পরিবার কেন্দ্রিক নাটক নিয়ে আলাপচারিতা।
এই বিষয়ে প্রথমেই মন্তব্য তুলে ধরেন আতিক। তিনি বলেন, ‘একসময় বিটিভিতে নাটকে পরিবারের নানান গল্প ফুটিয়ে তোলা হতো। এমনকি পরিবারের গল্পই ছিল নাটকের প্রাণ। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন চ্যানেলে প্রেম-ভালোবাসা এবং ছেলে-মেয়েদের বিভিন্ন সম্পর্ককে প্রাধান্য দিয়ে নাটক নির্মাণ হয় যেখানে পরিবার ভাবনা অনুপস্থিত। তবে দীপ্ত টিভির প্রত্যেকটি নাটকই পরিবারকে প্রাধান্য দিয়ে নির্মিত হচ্ছে। আমাদের সংস্কৃতি এবং আমাদের সম্পর্কগুলো নিয়েই চ্যানেলটির সব নাটক। দীপ্ত টিভির নাটকগুলো কোনো না কোনো পরিবারের কথা বলে থাকে বলে দর্শকরাও তাদেরকে নাটকে রিলেটেড করতে পারে।
জয়ী অবশ্য বিষয়টিকে একটু ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করলেন। তিনি বলেন, বিটিভির সময়কার নাটক ছিল হোমমেইড। মূলত: পরিবারকে প্রাধান্য দিয়ে পরিবারের জন্যই নাটক নির্মিত হতো। আর এখন নাটক ইন্ডাস্ট্রিয়াল হয়ে গেছে। দীপ্ত টেলিভিশন সেই পরিবার কেন্দ্রিক নাটক দর্শকদের মাঝে ফিরিয়ে আনতে চায়। দীপ্ত এখন হোমমেইড নাটক বানাচ্ছে। সমাজকে প্রতিফলিত করে এমন সব গল্প নিয়েই চ্যানেলটি দর্শকদের সামনে হাজির হচ্ছে।
আড্ডার এই পর্যায়ে বাংলায় ডাবিংকৃত বিদেশি সিরিয়াল নিয়ে দুই অভিনয় শিল্পীর সঙ্গে আলোচনা হয়। প্রথমেই এই বিষয়ে ভাবনার কথা জানান জয়ী। তিনি বলেন, বিদেশি সিরিয়ালের মাধ্যমে দেশের টিভি দর্শকে আমাদের একাধিক টেলিভিশন ফিরিয়ে আনছে। এটা অবশ্যই ইতিবাচক একটা দিক।
আতিক বলেন, এসব সিরিয়াল প্রচারের ফলে আমাদের এখানে কাজের প্রতিযোগিতাও সৃষ্টি হচ্ছে। এটা অবশ্যই প্রশংসার দাবীদার।