Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

সোয়েবের স্থাপত্য ভাবনা

আধুনিক স্থাপত্য শিল্পে সৃষ্টিশীল কাজ করে চলেছেন সোয়েব উল আলম। বন্ধু মহলে সবাই তাকে অলিভ বলে চিনেন। ২০০৮ সালে দি ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক থেকে স্থাপত্য বিষয়ে ব্যাচেলর অব আর্কিটেকচার ডিগ্রি লাভ করেন। পাস করে বের হওয়ার পরপরই তিনি যোগ দেন স্থপতি মামনুন মুর্শেদ চৌধুরী ও স্থপতি মাহমুদুল আনোয়ার রিয়াদের তত্তাবধানে ডি ডবিøউ এম ফোর আর্কিটেকটস নামের একটি প্রতিষ্ঠানে। সেখানে তিনি এসোসিয়েট আর্কিটেক্ট হিসেবে তিন বছর চাকরি করেন। এরপর এডিসি কনসালটেন্ট নামের একটি ফার্মে ১ বছর চাকরি করেন। ২০১৪ সালে নিজে গড়ে তোলেন ইন্টারএজ এবং আর্কএজ নামের দুটি প্রতিষ্ঠান। এ যাবৎ তিনি অসংখ্য বিল্ডিংয়ের ডিজাইন ও ইন্টেরিয়র করেছেন। এবার শাহ সিমেন্ট সুইট হোমে তাকে নিয়ে প্রতিবেদন। লিখেছেন মোহাম্মদ তারেক

তিন ভাই বোনের মধ্যে আর্কিটেক্ট সোয়েব উল আলম অলিভ মেঝ। তার গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর জেলায়। তবে জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকায়। বাবার নাম মোঃ সরোয়ার উল আলম। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মা ফজিলাতুন্নেসা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা। স্কুলে পড়াকালীন সোয়েব উল আলম সাংস্কৃতিক কর্মকাÐের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কবিতা আবৃত্তি করতেন। নাটক করতেন। ছবি আঁকাআঁকি, বই পড়া ছিল তার পছন্দের বিষয়। ছোটবেলা থেকে সোয়েবের ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হবেন। মা এবং বড় ভাইয়ের অনুপ্রেরণায় তিনি হয়েছেন সফল একজন স্থপতি। এটাই তার আনন্দ। বরিশাল ব্রজমোহন বিদ্যালয় থেকে তিনি এসএসসি পাস করেন ১৯৯৮ সালে। ২০০১ সালে তেজগাঁও কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে এইচএসসি পাস করে ভর্তি হন দি ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক-এর স্থাপত্য বিভাগে। তার সহপাঠী বন্ধুদের মধ্যে আছেন স্থপতি ফরহাদ, রুবেল, শাওন, টুনি ও মুনমুন। এরা সবাই প্রতিষ্ঠিত আর্কিটেক্ট। প্রিয় শিক্ষকের তালিকায় আছেন স্থপতি সামসুল ওয়ারেস, স্থপতি ড. আবু সায়ীদ মুস্তাক আহমেদ, স্থপতি মামনুন মুর্শেদ চৌধুরী ও স্থপতি নওশাদ এহসানুল হক। সোয়েব উল আলম দি ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক থেকে স্থাপত্য বিষয়ে ব্যাচেলর অব আর্কিটেকচার ডিগ্রি লাভ করেন ২০০৮ সালে। পাস করে বের হওয়ার পর পরই তিনি যোগ দেন স্থপতি মামনুন মুর্শেদ চৌধুরী ও স্থপতি মাহমুদুল আনোয়ার রিয়াদের তত্তাবধানে ডি ডবিøউ এম ফোর আর্কিটেক্ট নামের প্রতিষ্ঠানে। যেখানে তিনি এসোসিয়েট আর্কিটেক্ট হিসেবে তিন বছর কাজ করেন। তারপর ২০১২ সালে তিনি এসোসিয়েট আর্কিটেক্ট হিসেবে যোগ দেন এডিসি কনসালটেন্ট-এ। সেখানে একবছর চাকরি করার পর ২০১৪ সালে নিজে গড়ে তোলেন ইন্টারএজ এবং আর্কএজ নামের দুটি ফার্ম। মোহাম্মদপুরে খুব সুন্দর একটি অফিস সাজিয়েছেন তিনি। ইতোমধ্যে সোয়েব উল আলম দেশের নামকরা হাসপাতাল, রেস্টুরেন্ট, কমার্শিয়াল বিল্ডিং, হোটেল, অফিস বিল্ডিংসহ অসংখ্য ভবনের ডিজাইন ও ইন্টেরিয়র করেছেন। এসোসিয়েট আর্কিটেক্ট হিসেবে তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছেÑ

Shah-Cementউত্তরার এস্টার পার্ক হোল্ডিংস-এর আবাসিক ভবন, উত্তরার অ্যাডভান্স ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের আবাসিক ভবন, এমডিডিএল-এর আবাসিক ভবন, ধানমন্ডির কমপ্রিহেনসিভ হোল্ডিংস-এর আবাসিক ভবন, চিটাগং খুলশির সানমার প্রপার্টিজের আবাসিক ভবন, মালিবাগের সাবসয়েল প্রপার্টিজের আবাসিক ভবন, ধানমন্ডির এবোড হোল্ডিংস-এর আবাসিক ভবন, মিরপুরের এস্টার পার্ক হোল্ডিংস-এর আবাসিক ভবন, বসুন্ধরার সাবসয়েল প্রপার্টিজের আবাসিক ভবন ইত্যাদি। নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের হয়ে তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছেÑ গাজীপুর জিরানীর ঢাকা ইউনিভার্সিটির টিচারস হাউজিং প্রজেক্ট, ঢাকা ইউনিভার্সিটির গ্রামীণফোন সিএসআর-এর রেনোভেশন এবং ইন্টেরিয়র ডিজাইন, পল্টনের ট্রাস্ট সিকিউরিটিস লিমিটেড হেড অফিসের রেনোভেশন এবং ইন্টেরিয়র ডিজাইন, ময়মনসিংহের নেক্সাস কার্ডিয়াক হসপিটাল, বরিশালের সাউথ গ্রীণ ডেভেলপমেন্টস লিমিটেডের আবাসিক ভবন, ঢাকা ইউনিভার্সিটির ই-লাইব্রেরী অব বিজনেস স্টাডিজ-এর রেনোভেশন এবং ইন্টেরিয়র ডিজাইন, ঢাকা ইউনিভার্সিটির ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের রেনোভেশন এবং ইন্টেরিয়র ডিজাইন, চিটাগং-এর স্টোন অ্যাসুরেন্স ডেভেলপমেন্টস-এর আবাসিক ভবন, ডিওএইচএস-এর মি: জাহিদের আবাসিক ভবন, ঢাকা ইউনিভার্সিটি বাণিজ্য অনুষদের ফুডকোর্ট-এর রেনোভেশন এবং ইন্টেরিয়র ডিজাইন, কুক রেস্টুরেন্টের রেনোভেশন এবং ইন্টেরিয়র ডিজাইন, মিরপুরের স্টোন অ্যাসুরেন্স ডেভেলপমেন্টস-এর আবাসিক ভবন, মোহাম্মদপুরের ডুব রেস্টুরেন্টের রেনোভেশন এবং ইন্টেরিয়র ডিজাইন, বরিশালের মি: আফজাল করিমের আবাসিক ভবন, কক্সবাজারের হোটেল সমুদ্র বিলাস, গেন্ডারিয়ার স্টোন অ্যাসুরেন্স ডেভেলপমেন্টস-এর আবাসিক ভবন, যৌথ ভাবে শিকদার গ্রæপের কমার্শিয়াল বিল্ডিং সমূহ, গ্রীণটাচ ডেভেলপমেন্টস লিমিটেডের বিভিন্ন কাজসহ অসংখ্য ভবনের ডিজাইন ও ইন্টেরিয়র কাজ করেছেন। এছাড়া বর্তমানে বেশ কিছু প্রজেক্টের কাজ করছেন। সোয়েব উল আলম তার সব ধরনের কাজ স্থাপত্য নীতি ও রাজউকের নিয়ম মেনেই করেন। ২০০৮ সালে তিনি বিয়ে করেন। স্ত্রীর নাম ফারজানা নাসরিন। তিনি আর্কএজ ফার্মের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। এই দম্পতি দুই সন্তানের জনক-জননী।

স্থপতি সোয়েব উল আলম বলেন, আমি মূলত স্থাপত্য শিল্পে মডার্ন আর্কিটেকচার প্র্যাকটিস করে থাকি। আমার কাজে ক্লায়েন্টের চাওয়া পাওয়াগুলো অনুধাবণ করে কম খরচে সহজলভ্য ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করি। আমার যে কোনো কাজে সব সময় চেষ্টা থাকে স্থাপত্যের মাধ্যমে সর্বোচ্চ নান্দনিক আবহ তৈরি করা। বাংলাদেশের আবহাওয়া, জলবায়ু ও প্রকৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের দিকে নজর দেন তিনি। পাশাপাশি পেশার কাছে দায়বদ্ধ থেকে সেটাকে সততার সঙ্গে শেষ করতে চান। স্থাপত্য নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে স্থপতি সোয়েব উল আলম বলেন, সবকিছুর উপর আমরা মানুষ, আমরা মানবিক। ভবিষ্যতে আমি স্থাপত্য চর্চার মাধ্যমে মানবিক হওয়া এবং সমাজে মানবিকতা চর্চার বিস্তৃতি ঘটাতে চাই।