Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার লেখক প্রকাশক ও পাঠকের মিলনমেলা বসেছিল

একুশে বইমেলায় প্রতিবছরই একটি আয়োজন বিশেষভাবে গুরুত্বপুর্ণ হয়ে ওঠে তাহলো আনন্দ আলো বইমেলা প্রতিদিন। এটি শুধুমাত্র একুশে বইমেলাকে নিয়ে প্রকাশিত একমাত্র দৈনিক পত্রিকা। আর এই পত্রিকাটির আয়োজনকে বর্নাঢ্য ও বিশিষ্ট করে তোলে একটি সাহিত্য পুরস্কার। যার প্রেরণায় রয়েছে সিটি ব্যাংক এনএ। পুরস্কারটির শিরোনাম ‘সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার’। একুশে বইমেলা উপলক্ষে প্রকাশিত শ্রেষ্ঠ গ্রন্থের ওপর ক ও খ শাখায় এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। এবার পুরস্কারটি তার ৮ম বছর অতিক্রম করলো। যথারীতি চ্যানেল আই এর তেজগাঁওস্থ ভবনে অনিন্দ্য সুন্দর এক পরিবেশে এবারও পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়। দেশের নবীণ-প্রবীণ কবি, সাহিত্যিক, প্রকাশক, শোবিজ তারকা ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তি বর্গের উজ্জ্বল উপস্থিতিতে এবারের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটি ছিল অতীতের তুলনায় আরও বেশী উজ্জ্বল। অনুষ্ঠানটি কবি, সাহিত্যিক, প্রকাশক ও পাঠকের মিলন মেলায় পরিণত হয়। অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি লেখকদেরকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, একুশে বইমেলায় প্রকাশিত শ্রেষ্ঠ গ্রন্থের জন্য তাঁরা এই সম্মান অর্জন করেছেন। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেছেন, সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কারের জন্য বিষয় সমৃদ্ধ এমন অনেক বই জমা পড়েছে যা পড়ে আমরা বিচারকরা অনেক চমকিত হয়েছি। মনের ভেতর আশার সঞ্চার হয়েছে। একই সাথে কিছু কিছু বই পড়তে গিয়ে হতাশও হয়েছি। যারা এই ধরনের বই লিখেন তাদের প্রতি অনুরোধ একবারের জন্য হলেও ভাববেন আপনারা কাজটি কী ঠিক করছেন?

এবার যারা সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন তাঁরা হলেন: প্রবন্ধ ও স্মৃতিকথায় চন্দ্রাবতী থেকে প্রকাশিত ‘সোনালি দিনগুলির’ জন্য আবুল মাল আবদুল মুহিত, জার্নিম্যান থেকে প্রকাশিত ‘ঢাকার খাল পোল ও নদীর চিত্রকর’ গ্রন্থের জন্য মুনতাসীর মামুন, উপন্যাসে কথাপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত ‘নিঃসঙ্গতার মুখর সময়’ গ্রন্থের জন্য সেলিনা হোসেন, শিশুসাহিত্যে অন্যপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত ‘নির্বাচিত ১০০ ছড়া’ গ্রন্থের জন্য আসলাম সানী, কবিতায় (যৌথভাবে) চৈতন্য থেকে প্রকাশিত ‘শ্রীহট্টকীর্তন’ গ্রন্থের জন্য মুজিব ইরম এবং সময় থেকে প্রকাশিত ‘কবিকে নিয়ে কবিতা’ গ্রন্থের জন্য পিয়াস মজিদ।

তরুণদের ক্ষেত্রে ‘জীবনের প্রথম বই’ শাখায় জনানত্মীক থেকে প্রকাশিত ‘এ ও সে ও’ গ্রন্থের জন্য এহ্‌সান হাফিজ এ পুরস্কার পেয়েছেন।

পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, চ্যানেল আই এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, সিটি ব্যাংক এন এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চীফ ফিনান্সিয়াল অফিসার এস এইচ আসলাম হাবীব ও আনন্দ আলোর সম্পাদক রেজানুর বক্তৃতা করেন ও পুরস্কারপ্রাপ্ত গুণী কবি লেখকদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। প্রকাশকদের মধ্যে ফরিদ আহমেদ, মিলন নাথ, কামরুজ্জামান খন্দকার, উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন শিশু সাহিত্যিক লুৎফর রহমান রিটন। চ্যানেল আই অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে।

উল্লেখ্য, সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কারের মূল্যমান ‘ক’ শাখায় প্রতিটি ৩০ হাজার টাকা ও একটি ক্রেস্ট এবং ‘খ’ শাখায় প্রতিটি ১০ হাজার টাকা ও একটি ক্রেস্ট।

এই পুরস্কার আমাদের সবার জন্য আনন্দের -ফরিদুর রেজা সাগর

ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চ্যানেল আই

খুশির খবর হলো সিটিব্যাংক এন-একে সঙ্গে নিয়ে আনন্দ আলো ৮ বছর ধরে দেশের প্রতিষ্ঠিত ও নবীন লেখকদেরকে সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করে আসছে। পুরস্কার প্রদান কার্যক্রমে জুরিবোর্ডের সভাপতি হিসেবে অত্যনত্ম বিচক্ষণতার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। শিশুসাহিত্যিক লুৎফর রহমান রিটন প্রতিবার বইমেলার আগে কানাডা থেকে উড়ে আসেন এবং এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান উপস্থাপনার দায়িত্ব পালন করেন। আজকে এই অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক মুজিব ইরম বৃটেন থেকে উড়ে এসেছেন। সব কিছু মিলিয়ে সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার আমাদের সাহিত্য অঙ্গনে বিপুল আগ্রহর বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি সিটি ব্যাংক এনএ ও পুরস্কার প্রাপ্ত কবি সাহিত্যিকদের অভিনন্দন জানাচ্ছি।

মানসম্পন্ন বই চাই

-শামসুজ্জামান খান, মহাপরিচালক, বাংলা একাডেমি

এ বছর যারা সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন তাদের সকলকে অভিনন্দন জানাই। এবারে বেশ ক’জন তরুণ সাহিত্যিক এপুরস্কার পেয়েছেন। তাদের মতোই মনের দিক দিয়ে তরুণ আরও একজন বিশিষ্ট লেখক আমাদের অর্থমন্ত্রী মহোদয় আবুল মাল আবদুল মুহিতও পুরস্কার পেয়েছেন। কর্মক্ষেত্রে সীমাহীন ব্যসত্মতা সত্বেও তিনি দশখণ্ডে তাঁর আত্মজীবনী লিখেছেন এটা সত্যিই বিস্ময়কর। আরও পুরস্কার পেয়েছেন সেলিনা হোসেন ও মুনতাসীর মামুনের মতো বিশিষ্ট লেখক। অনেক বড় মাপের লেখক তারা। এ ছাড়া আসলাম সানী, পিয়াস মজিদ, মুজিব ইরম, এহসান হাফিজের মতো মেধাবী তরুণ লেখকও আছেন পুরস্কার প্রাপ্তদের তালিকায়। বইমেলায় প্রকাশিত মানসম্পন্ন বইয়ের লেখককে এবার সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করায় একদিকে যেমন বইয়ের মানবৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে অন্যদিকে লেখকরা ভালো লেখায় উদ্বুদ্ধ হবেন। এজন্য সিটি ব্যাংক এন ও আনন্দ আলোকে অভিনন্দন।

পুরস্কারের জন্য বই নির্বাচন করতে গিয়ে আমরা যারা বিচারকার্য পরিচালনা করেছি তাদের মধ্যে কখনো কখনো তর্ক হয়েছে, দ্বিমতও হয়েছে। আবার কারো কারো বই দেখে চমকিত হয়েছি। বিস্মিত হয়েছি। কখনো আবার আনন্দিত হয়েছি। আবার কিছু কিছু বই হাতে নেয়ার পরই ফেলে দিতে হয়েছে। ফেলে দেয়া বইয়ের লেখকরা ভেবে দেখবেন এ ধরনের বই প্রকাশ না করলেই কি নয়? আমরা আসলে মানসম্পন্ন বই চাই। সেদিকে সবার মনোযোগ দেয়া জরুরি।

অভিনন্দন শুভেচ্ছা -এসএইচ আসলাম হাবীব

সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চীফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার, সিটি ব্যাংক এনএ

যাঁরা এবার সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার পেলেন তাদেরকে জানাই সিটি ব্যাংক এনএ বাংলাদেশ-এর পক্ষ থেকে সম্ভাষণ ও আনত্মরিক শুভেচ্ছা। সেই সঙ্গে অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত বইয়ের লেখক, প্রকাশক ও পাঠককে অভিনন্দন।

সিটি ব্যাংক এনএ একটি দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে এধরনের উদ্যোগকে আত্মপরিচয়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করে। বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি প্রচারে সিটি ব্যাংক এনএ সব সময় আনত্মরিক ভাবে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছে। এ পুরস্কারের বিচারক মণ্ডলীকে জানাই আনত্মরিক কৃতজ্ঞতা। এবারের পুরস্কার প্রদান কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য আনন্দ আলো ও চ্যানেল আইকে অভিনন্দন এবং পুরস্কার প্রাপ্ত সব লেখককে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

এই স্বীকৃতি আমাকে অভিভূত করেছে -আবুল মাল আবদুল মুহিত

প্রাবন্ধিক, মন্ত্রী, অর্থমন্ত্রনালয়

সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার পাওয়ার অনুভূতি আমার কাছে অত্যনত্ম চমৎকার। এই পুরস্কার পাওয়ার খবরটি প্রথম যখন পাই তখনকার অনুভূতির কথা একটু বলি। খবরটি প্রথম শুনি আমার স্ত্রীর কাছ থেকে। তিনি আনন্দিত হয়ে শুধু আমাকেই নয় এই বইয়ের প্রকাশককেও খবরটি জানিয়েছিলেন। অত্যনত্ম আনন্দময় ছিল সেই মূহুর্তটি শুধু আমার জন্য নয়, আমার পরিবারের জন্যও।

সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কারটি হাতে পাওয়ার পর আমার অনুভূতি হলো- এটি আমার জন্য অত্যনত্ম আকর্ষনীয় একটি স্বীকৃতি। এই স্বীকৃতি আমাকে খুবই অভিভূত করেছে। এই পুরস্কার গ্রহণের সুখকর অনুভূতি বহাল থাকবে অনেক দিন। আমি আনন্দ আলো, চ্যানেল আই ও সিটিব্যাংক এনএ পরিবারকে অভিনন্দন জানাই।

আমার জন্য বড় ধরনের একটি প্রাপ্তি

-মুনতাসীর মামুন, প্রাবন্ধিক

সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার পাওয়ায় আমি আনন্দিত তো বটেই সেই সঙ্গে অভিভূতও। কেননা এই পুরস্কার প্রবর্তন হয়েছে আট বছর হলো। এই নিয়ে আমি দুইবার পুরস্কারটি পেলাম। এটা খুবই বড় ধরনের একটি প্রাপ্তি আমার জন্য। এই পুরস্কার পাওয়ায় আরো বেশি আবেগ কাজ করেছে আমার মধ্যে এই কারনে যে এটি নিজ হাতে গ্রহণ করতে পারলাম। এর আগে একুশে পদক ছাড়া অন্যকোনো পুরস্কার নিজ হাতে গ্রহণ করতে পারিনি বিদেশে থাকায় বা অন্য কোনো কাজে ব্যসত্ম থাকায়।

যে বইটির জন্য আমাকে এই পুরস্কার দেয়া হলো ‘ঢাকার খাল পোল নদীর চিত্রকর’ এটি প্রকাশ করতে জার্নিম্যান খুবই কষ্ট করেছে। এ ধরনের বই প্রকাশ করা খুবই দুরুহ ও শ্রমসাধ্য ব্যাপার। প্রকাশক একবার আমাকে বলেছিলেন এই বইটির জন্য আমরা পুরস্কার বা স্বীকৃতি পেতে চাই। তারা সেটা পেয়েছেন এবং তাদের শ্রম স্বার্থক হয়েছে। আমি পুস্কারটি আমার স্ত্রীকে উৎসর্গ করছি।

এই পুরস্কার নবীন প্রবীণ লেখকের এক সম্মিলন 

-সেলিনা হোসেন, উপন্যাসিক

পুরস্কার পাওয়া আনন্দদায়ক ঘটনা ও অনুপ্রেরনার বিষয়। এই পুরস্কার যখন ঘোষনা করা হয় তখন আমি দিল্লীতে সার্ক রাইটার্স কনফারেন্সে ছিলাম। দিল্লীর যে হোটেলে ছিলাম সেখানে ওইদিন রাত এগারটায় কবি আশরাফ জুয়েল নাম এক ভদ্রলোক আমার হোটেলের রুমে এসে হাসি মুখে বললেন, ঢাকা থেকে পিয়াস মজিদ আমাকে একটি ম্যাসেজ পাঠিয়েছেন যার অর্থ হল- আপনি এবছর সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন। খবরটি শুনে আমি আর অপেক্ষায় থাকতে পারলাম না তাই আপনাকে আনন্দ দেয়ার জন্য এক্ষুনি খবরটি জানানো মনে করছি।

সিটি আনন্দ আলো  সাহিত্য পুরস্কারের মযার্দার জায়গাটি এবং একজন লেখককে অািভভূত করার ব্যাপারটি আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কারের ক্ষেত্রে প্রবীণ-নবীনের চমৎকার সমন্বয় ঘটানো হয়েছে। এই উদ্যোগে আমরা প্রবীনদের কথা জানতে পারি, তাদের মূল্যায়ন করার জায়গা খুঁজে পেতে পারি।

আমার জন্য অনেক আবেগের

-আসলাম সানী, শিশু সাহিত্যিক

বাংলা আমি, বাঙ্গালী আমি, মহাকালের সনত্মান, মুক্তিযুদ্ধ ইতিহাস, পিতা আমার শেখ মুজিবুর  রহমান। ত্রিশ লক্ষ্য শহীদ আমার চিরকালের শ্রদ্ধা, বাংলা ভাষায় কথা বলি আমি মুক্তিযোদ্ধা। আমি যা কিছু শিখেছি মাইকেল, রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দ, সুকানত্ম, নজরুল, সুকুমার, অন্নদা শংকর রায় কিংবা জসিম উদ্দিনের কাছ থেকে।

আমার লেখার সব কিছু জুড়ে রয়েছে এই মাটি এই দেশ। এই পুরস্কার পাওয়ায় কৃতজ্ঞতা জানাই অন্যপ্রকাশকে। তারা যত্ন করে বইটি প্রকাশ করেছে। সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার আমার কাছে অত্যনত্ম আবেগের। আনন্দ আলো গত ৮ বছর ধরে আমাদের সাহিত্যকে লালন করে আসছে। পুরস্কারের মাধ্যমে সাহিত্যিকদের অনুপ্রেরণা জুগিয়ে চলেছে। অন্যান্য টিভি চ্যানেল ও পত্রপত্রিকাকেও অনুরোধ করবো আসুন বাংলা ভাষা ও সাহিত্যিকদের অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ দেই। সিটি ব্যাংক এনএ ও আনন্দ আলোকে অভিনন্দন।

আমি মুগ্ধ অভিভূত

-মুজিব ইরম, কবি

আমি তখন লণ্ডনে। প্রচণ্ড শীত পড়েছিল সেদিন। শিশুসাহিত্যিক লুৎফর রহমান রিটন আমাকে ফোন করে পুরস্কার পাওয়ার সুসংবাদটি দিলেন। তখন মুহূর্তে আমার শরীর থেকে শীত নেমে গেল। মনে হলো আমি বাংলাদেশেই আছি। যেদিন বাংলা একাডেমির একুশে বইমেলা প্রাঙ্গণ থেকে চ্যানেল আই এর সরাসরি অনুষ্ঠানে পুরস্কার প্রাপ্তদের নাম ঘোষনা করা হয় সেদিন লণ্ডনেই টিভি সেটের সামনে বসে দেখছিলাম অনুষ্ঠানটি। মনে হয়েছিল এখনই ছুটে যাই বাংলাদেশে।

সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার নেয়ার জন্য লণ্ডন থেকে ১৭ ঘন্টা জার্নি করে চ্যানেল আই-এর সরাসরি অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছি। এটা যে কত বড় আনন্দের ঘটনা তা বোঝাতে পারব না। আমার স্ত্রী ও সনত্মান লন্ডনে বসে পুরস্কার অনুষ্ঠান সরাসরি দেখেছন। তাদের কাছে এই দৃশ্য আরো বেশি আনন্দের। এই পুরস্কার আমার প্রিয়তমা স্ত্রীকে উৎসর্গ করছি। পুরস্কার পাওয়ার পর আমার অনুভূতি একটাই আমি মুগ্ধ ও অভিভূত।

অনেক বড় একটি পুরস্কার আমার জন্য

-পিয়াস মজিদ, কবি

আমি সত্যিকারে আবেগে আপ্লুত। অর্থমন্ত্রী মহোদয় সহ যাদের বই পড়ে পড়ে বড় হয়েছি সেই প্রিয় লেখক সেলিনা হোসেন, মুনতাসীর মামুন, আসলাম সানীর সঙ্গে পাওয়া এই পুরস্কার অনেক বড় একটি প্রাপ্তি আমার জীবনে। বিচারক মণ্ডলী আমার বইকে পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করায় তাদের প্রতি রইল শ্রদ্ধা।

আরও শ্রদ্ধা জানাই বইটির প্রকাশক সময় প্রকাশনীর ফরিদ আহমেদ এবং প্রচ্ছদ শিল্পী ধ্রুব এষকে। সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞতা সেই সব কবিদের প্রতি যাদের নিয়ে আমার অনুভব গুলি এই বইতে আছে। সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কারটি আমার বাবা মা ও ভাইবোনদের উৎসর্গ করছি।

আমি উচ্ছ্বসিত, আনন্দিত ও বিমোহিত

-এহসান হাফিজ, জীবনের প্রথম বইয়ের লেখক

আজ দুটো ঘটনা প্রথম ঘটলো আমার জীবনে। প্রথমটি হলো এ বছর আমার প্রথম একটি বই প্রকাশ হয়েছে। দ্বিতয়টি হলো প্রথম প্রকাশিত বইয়ের জন্য প্রথম পুরস্কার পেয়েছি। তাও আবার সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কারের মতো অনেক বড় মাপের পুরস্কার। এই পুরস্কার পাওয়ায় আমি উচ্ছ্বসিত, আনন্দিত ও বিমোহিত।

এই বইয়ের একটা বড় অংশ ছিল ইতিহাসের তথ্যকে আড়াল করে কিভাবে তার নির্যাসকে উপন্যাসের কল্পনায় রূপ দেয়া যায়। এই বিষয়ে বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ সালাহ উদ্দিন আহমেদ আমাকে আগ্রহ এবং অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।

একনজরে এ পর্যনত্ম যারা সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন

২০০৮ সাল থেকে শুধু মাত্র একুশে বইমেলায় প্রকাশিত সেরা বইকে পুরস্কৃত করার লক্ষ্যে সিটি আনন্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়। ২০০৮ সালে এই পুরস্কার পান নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ, কবি আল মাহমুদ, কাইয়ূম চৌধুরী, ইমদাদুল হক মিলন, ড. ফজলুল আলম। ২০০৯ সালে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক, কবি নির্মলেন্দু গুণ, মুনতাসীর মামুন, আনিসুল হক, তরুণ লেখক ক্যাটাগরিতে হালিম আজাদ, ইজাজ আহমেদ মিলন। ২০১০ সালে বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন, মফিদুল হক, কাইজার চৌধুরী, নাসরিন জাহান, তরুণ লেখক ক্যাটাগরিতে তনুজা ভট্টাচার্য, রিফাত কামাল সাইফ, গাজী তানজিয়া ও মাহবুব আজাদ। ২০১১ সালে মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ইমদাদুল হক মিলন, আফজাল হোসেন, তরুণ লেখক ক্যাটাগরিতে আদিত্য শাহীন, ইশরাত জাহান উর্মি। ২০১২ সালে হরিশংকর জলদাস, আফজাল হোসেন, শাহাবুদ্দীন নাগরী, লুৎফর রহমান রিটন, সাইমন জাকারিয়া, নাজনীন মর্তুজা,  তরুণ লেখক ক্যাটাগরিতে মাজহার সরকার। ২০১৩ সালে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, মুহম্মদ নূরুল হুদা, বরেণ চক্রবর্তী, আমীরুল ইসলাম, তরুণ লেখক ক্যাটাগরিতে মৃত্তিকা গুণ ও আশা নাজনীন। ২০১৪ সালে আকবর আলী খান, আসাদ চৌধুরী, মঈনুল আহসান সাবের, মোহিত কামাল, আলী ইমাম, মাহবুবা চৌধুরী, তরুণ লেখক ক্যাটাগরিতে রাতুল হাসান ও মহিম সন্নাসী। ২০১৫ সালে শামসুজ্জামান খান, ইমদাদুল হক মিলন, আলম তালুকদার, রেজাউদ্দিন স্টালিন, তরুণ লেখক ক্যাটাগরিতে মাহবুব আজীজ, কসুম সিকদার ও গালিব রহমান।