Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

ডিজিটালাইজেশনই ব্যাংকের ফিউচার এছাড়া গতি নাই

-সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, ম্যানেজিং ডিরেক্টর এন্ড সিইও, ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড

মারুফ রিমন: সৈয়দ মাহ্বুবুর রহমান একজন স্বনামধন্য ব্যাংকার। ৮ নভেম্বর থেকে ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ব্যাংকিং ও ক্রেডিট সংক্রান্ত বিষয়ে দীর্ঘ ২৭ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। এর আগে তিনি দীর্ঘ বছর ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর এন্ড সিইও হিসেবে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।

সৈয়দ মাহ্বুবুর রহমান ২০০৮ সালে ব্র্যাক ব্যাংকে যোগদানের আগে প্রাইম ব্যাংক, সিটি ব্যাংক এনএ, স্ট্যান্ডার্ড চার্টাড ব্যাংক, এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ব্যাংক, আইডিএলসি ফাইন্যান্সসহ প্রভৃতি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। সৌদি বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল এন্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানির মধ্য দিয়ে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন।

এছাড়াও তিনি ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেড, ব্র্যাক সাজান এক্সচেঞ্জ লিমিটেড, বিকাশ লিমিটেড, ব্র্যাক আইটি সার্ভিসেস লিমিটেড ও আইআইডিএফসি সিকিউরিটিজ লিমিটেড-এর পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেন। অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ লিমিটেড-এর বোর্ড অব গভর্নরস পদেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন। সিইও হিসেবে সৈয়দ মাহ্বুবুর রহমান ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস, ফাইন্যান্স এশিয়া, দ্যা এশিয়ান ব্যাংকার্সসহ অন্যান্য মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠান থেকে একাধিক স্বীকৃতি পেয়েছেন। দেশের অন্যতম এবং ক্রমবর্ধমান মোবাইল ব্যাংকিং আর্থিক সেবা ‘বিকাশ’- এর বাংলাদেশে আবির্ভাবে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন। ২০১১-২০১৩ সালে তিনি বাংলাদেশ থেকে সম্মানজনক ‘দ্য এশিয়ান ব্যাংকার লিডারশীপ অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেন।

সৈয়দ মাহ্বুবুর রহমান ১৯৬২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। কর্মজীবনে দেশে-বিদেশে ব্যাংকিং সেক্টরের উপর প্রশিক্ষণ, সেমিনার এবং কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন। তিনি দুই কন্যা সন্তানের জনক।

সম্প্রতি দেশের ব্যাংকিং খাতের নানা প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি তুলে ধরেন এই সেক্টরের গতি প্রকৃতি। ‘সোশ্যাল কর্পোরেট রেসপন্সিবিলিটির জায়গা থেকে ঢাকা ব্যাংক বাংলাদেশের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে সামনে তুলে আনার জন্যে সফলভাবে কাজ করছে। সম্প্রতি আপনারা আন্তর্জাতিক ফোক ফেস্টিভ্যালের সঙ্গেও নিজেদের যুক্ত করেছেন। কমার্শিয়াল ব্যাংক হিসেবে কালচারাল ইভেন্টের সঙ্গে নিজেদের জড়ানো- এটি কি আপনাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা নাকি এর পেছনে ব্র্যান্ডিংয়ের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ?

এই প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন,  ‘যে দেশে যে কোম্পানি কাজ করে তাদের দায়িত্ব হলো- সেই দেশ বা সমাজের উন্নয়নে কিছু একটা করা। কারণ দেশ থেকেই আমি অর্জন করছি। কাজেই দেশের জন্য আমার একটা রেসপন্সিবিলিটি আছে। ব্র্যান্ডিংয়ের ব্যাপারটি পরে আসে। অ্যাজ এ বাংলাদেশি আমার আর্নিংটা এই দেশ থেকে আসছে। দেশের ইকোনিমিতে কন্ট্রিবিউট করছি, আর্নিংটা এখান থেকে আসছে- স্বাভাবিকভাবে এই সমাজের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা থাকবে। কারণ এই দেশ, এই সোসাইটি না থাকলে আমরা কোথায় কাজ করবো? সো, ব্র্যান্ডিং উইল কাম লেটার। ব্র্যান্ডিংটা পরে, আমার যে কাজটা করা প্রয়োজন তা আমি ঠিকমতো করছি কি না? এটাই জরুরি এই প্যাশনটা থাকতে হবে। আমরা প্রত্যেকে বাংলাদেশি। বাংলাদেশি হিসেবে আমার টার্গেট থাকবে এই দেশের যে কোনো কিছুর প্রতি যদি একফোঁটাও কন্ট্রিবিউশন রাখতে পারি। সবাই মিলে ষোল কোটি মানুষ যদি একটা করে ভালো কাজ করি তবে তা কিন্তু অনেক বড় ব্যাপার হবে দিন শেষে। বাংলাদেশের চেহারাই পাল্টে যাবে।’

‘দেশের মোবাইল অপারেটরদের মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করে দেশের ইকোনমিকে আরও কীভাবে স্ট্রং করা যায়?’ এমন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ব্যাংকের ফিউচার হচ্ছে ডিজিটালাইজেশন। এছাড়া কোনো গতি নাই। আমাদের দেশের ট্রাফিক অবস্থা ভালো না। এখন আর মানুষ ব্যাংকের ব্রাঞ্চে যেতে চায় না। মানুষ বাসায় বা অফিসে বসে এখন ব্যাংকিং করতে চায়। আমরা সেবা বিক্রি করি। এই সেবা এখন একেবারে প্রান্তিক লেভেলে নিয়ে যেতে হবে। ব্যাংকিং সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে না পারলে তারা আসবে না। কারণ সবাই আমরা একই জিনিস বিক্রি করছি। আমার ব্যাংক এবং পাশের ব্যাংকের প্রোডাক্ট ভেরিয়েশন কিন্তু খুব কম। বাংলাদেশের মোবাইল টেলিফোন খাত এবং ব্যাংক একসঙ্গে মিলে দেশে অসম্ভব একটা রেভ্যুলেশন আনতে পারে।’