Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

জেসিআই তরুণদের একটি আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক 

-শাখাওয়াত হোসেন মামুন

ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট, জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (জেসিআই)

তারুণ্যের জয়ধ্বনি সর্বত্রই। তারুণ্যকে কাজে লাগিয়ে নতুন কিছু করার মাধ্যমেই এগিয়ে যাওয়া যায়। তবে এক্ষেত্রে তরুণদের সংঘবদ্ধ হওয়াটা জরুরি। নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পজিটিভ কিছু করার মধ্যে অন্যরকম আনন্দ আছে। এতে নিজেকে ভালো কিছুর সঙ্গে সম্পৃক্ত করার পাশাপাশি সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। তরুণদের তেমন একটি সংগঠন জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (জেসিআই)। দেশ-বিদেশের নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংগঠনটি ইতিবাচক অনেক কাজ করে। এই সংগঠনের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট শাখাওয়াত হোসেন মামুন। সম্প্রতি আনন্দ আলোর সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। যেখানে উঠে আসে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তারুণ্যের এগিয়ে যাওয়ার নানান গল্প।

আনন্দ আলো: জেসিআই-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার আগ্রহ কেনো হলো?

শাখাওয়াত হোসেন মামুন: দেখুন এটা তরুণদের আনৱর্জাতিক সংগঠন। এখানে দেশ-বিদেশের তরুণদের নিয়ে একটা শক্তিশালী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কাজ করা হয়। ইতিবাচক সমাজ পরিবর্তনে কাজ করে থাকে সংগঠনটি। মানবতার সেবায় কাজ করে থাকে জেসিআই। তাই বাংলাদেশে আমি জেসিআই-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হই। আমি মনেকরি ঐতিহ্যবাহী শিল্প গ্রুপ ভাইয়া গ্রুপের একজন ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে এই তারুণ্যের নেটওয়ার্কে আমার থাকাটা জরুরি। সেজন্য ২০১৬ সালে জেসিআই বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হই। এখানে বলে রাখা ভালো জেসিআই ১৯১৫ সালে ইউএস-এর মিশোরিতে গঠিত হয়। সক্রিয় তরুণ নাগরিকদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক এবং তাদের উন্নয়নের জন্য জেসিআই কাজ করে। বাংলাদেশ ১৯৭০ সালে এই সংস্থার সদস্য পদ লাভ করে। জেসিআই মূলত তরুণ ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও প্রফেশনালদের একটি চেম্বার অর্গানাইজেশন। আমি বিশ্বাস করি তরুণ শ্রেণির নেতৃত্ব এবং প্রত্যেক নাগরিকের আলাদা উদ্যোগের মাধ্যমে বিশ্বে ব্যবসা বাণিজ্যে অগ্রগতি সম্ভব। পাশাপাশি বিশ্বে শানিৱ প্রতিষ্ঠা করাও এই সংগঠনের লক্ষ্য।

আনন্দ আলো: জেসিআই এর সাম্প্রতিক কাজগুলো নিয়ে বলুন

শাখাওয়াত হোসেন মামুন: আন্তর্জাতিক ভাবে ‘নাথিং বাট নেট’ কর্মসূচির মাধ্যমে আফ্রিকা অঞ্চলে এ যাবৎ প্রায় ২ লক্ষ মশারি বিতরণ করা হয়। যার ফলশ্রুতিতে উক্ত অঞ্চলে ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুর হার ৭০% কমে গেছে। সম্প্রতি নেপালে ভূমিকম্প, জাপানের সুনামীতে জেসিআই-এর ভূমিকা আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত। তাছাড়া জাতিসংঘের পার্টনার হিসেবে আমরা জাতিসংঘের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত। সম্প্রতি বাংলাদেশেও আমরা জেসিআই থেকে বেশকিছু কার্যক্রম শুরু করেছি। এর মধ্যে রয়েছে তরুণ উদ্যোক্তাদের বাজেট ভাবনা, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও পরমেশ্বরদী গ্রামের আদিবাসীদের ২০০ জনের ওরাল ক্যান্সারের চিকিৎসার দায়ভার নেয়াসহ বেশকিছু কার্যক্রম। এছাড়াও জেসিআই ঢাকা আপটাউন সুস্বাস্থ্য, ঢাকা নর্থ ওমেন ডিজিটাল ইন্টারপিউনিয়র, সাইকেল র‌্যালী, অর্গানাইজেশন ডিবেট চ্যাম্পিয়ন, বাংলা নিউইয়ার, ক্রিকেট চ্যাম্পিয়ন, ২০৪০ রাউন্ড টেবিল ডিশকাসন, বেটার হেলথ, বিল্ডিং বেটার ফিউচার, ডেভেলপমেন্ট রুরাল বাংলাদেশ সিলেটসহ দেশের প্রত্যন্তঅঞ্চলে মেয়েদের মোটিভেট মূলক কাজ করেছে জেসিআই।

আনন্দ আলো: তরুণ উদ্যোক্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সংগঠনটি কেমন কাজ করে থাকে?

শাখাওয়াত হোসেন মামুন: জেসিআই বিভিন্ন ট্রেনিং, একাডেমি, কম খরচে কোর্স পরিচালনা করে থাকে। প্রতিবছর সমগ্র বিশ্ব থেকে ১০ জন তরুণকে আন্তর্জাতিক সম্মাননা প্রদান করে। জেসিআই ইউএস কর্তৃক ঘোষিত সাসটেইনএবল ডেভলপমেন্ট গোলস-এর আওতায় প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫০০ প্রজেক্ট করে থাকে এবং ২০১৫ সালে বাংলাদেশে ২৩টি প্রকল্প পরিচালনা করেছিল। বাংলাদেশের তরুণদের সামাজিক উন্নয়ন ও টেকসই উন্নয়নে জেসিআই কাজ করে থাকে। বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যার মধ্যে এক চতুর্থাংশের বেশি তরুণ। তাই আমাদের দায়িত্ব এই তরুণদের সক্রিয় নাগরিক হিসেবে রূপান্তরিত করণসহ তাদেরকে আগামী দিনের নেতৃত্বে দাঁড় করানো। এই সংগঠনের মাধ্যমে সমাজের দরিদ্র-হতদরিদ্র মানুষের দোরগোড়ায় নাগরিক সেবা পৌঁছে দেয়া, তরুণ উদ্যোক্তা তৈরি ও তাদের সুযোগ সুবিধা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারি/বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে কাজ করা আমাদের কর্মকাণ্ডের একটি অংশ। বর্তমানে বাংলাদেশে জেসিআই-এর সদস্য সংখ্যা প্রায় ৮০০ এবং অন্যান্য দেশে প্রায় ২ লক্ষ। তার মানে দেশের ৮০০ তরুণ বিশ্বের ২ লক্ষ তরুণের সঙ্গে জড়িত হয়েছে। কেউ চাইলেই অন্য দেশের তরুণদের সঙ্গে এক হয়ে কাজ করতে পারছেন।

আনন্দ আলো: সংগঠনটি নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা বলবেন-

শাখাওয়াত হোসেন মামুন: আমাদের লক্ষ্য ব্যবসায়ী, সরকার, উদ্যোক্তা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে বিশিষ্ট নাগরিকদের একত্রিত করা। বর্তমানে আমরা সরকারের সঙ্গে তরুণ শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য সিঙ্গেল ডিজিটে জামানত বিহীন ঋণ প্রদানের জন্য বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখতে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা সবসময় সরকারের সঙ্গে কাজ করি এবং তরুণদের উন্নয়নের জন্য সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের অংশীদার হিসেবেও কাজ করে যেতে চাই।