Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

কেকা ফেরদৌসীর দেশ বিদেশে রান্না বারো বছরে

আনন্দ আলো প্রতিবেদন: টেলিভিশনে রান্নার অনুষ্ঠানও যে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারে তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ বিশিষ্ট রন্ধন বিশেষজ্ঞ কেকা ফেরদৌসীর দেশ-বিদেশে রান্না। নিজে দেশে ৫৮টি জেলা ও বিদেশে ৭০টি নামকরা শহর পরিভ্রমণ করে দেশের টিভি মাধ্যমে বহুল আলোচিত রান্না বিষয়ক এই অনুষ্ঠানটি সাফল্যের ১২ বছরে পা দিয়েছে এই ফেব্রুয়ারিতে। দেশে তো বটেই, বিদেশে যেখানেই বাংলা ভাষাভাষি মানুষ আছেন সেখানেই কেকা ফেরদৌসীর এই অনুষ্ঠানের জয় জয়কার। একথা বললে বোধকরি অত্যুক্তি হবে না দেশের টেলিভিশনসহ প্রচার মাধ্যমে রান্নার অনুষ্ঠান সম্পর্কে মানুষের এই যে এত বিপুল আগ্রহ তার পেছনে রয়েছে কেকা ফেরদৌসীর বিশেষ অবদান। তেল, নুন, মশলা দিয়ে রান্না করা হয়তো সহজ। কিন্তু খাবারের ক্ষেত্রে পুষ্টিমান ও উপস্থাপনার বিষয়টিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এক কথায় রান্নাও একটা শিল্প। ঐ তেল, নুন, মশলা, পিঁয়াজ, মরিচ দিয়ে রান্নাকেও করে তোলা যায় পুষ্টিকর ও উপাদেয়। এজন্য চাই খাবারের গুণাগুণকে গুরুত্ব দিয়ে শৈল্পিক রন্ধন ভাবনা। রন্ধন বিশেষজ্ঞ কেকা ফেরদৌসী মূলত এই কাজটিই করে চলেছেন বছরের পর বছর ধরে। রান্নাতো শুধু রান্নাই নয় দেশের সংস্কৃতিরও অংশ। আর তাই তিনি দেশীয় রান্নাকে বিদেশের বড় বড় শহরে নিয়ে গেছেন। আবার বিদেশের রান্না এনে দেশের মানুষের কাছে উপস্থাপন করেছেন। এককথায় বলা যায়, শুধু রান্না বিষয়ক একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি দেশীয় সংস্কৃতিকে গোটা বিশ্বে তুলে ধরার ক্ষেত্রে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন।

দেশ-বিদেশে রান্না অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে আমরা যদি অতীতের আয়নায় একবার চোখ ফেলি তাহলে দেখতে পাব ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসকে। বাংলাদেশের কক্সবাজার ও দুবাইয়ে ধারণ করা দুটি ঐতিহ্যবাহী রান্নার অনুষ্ঠান দিয়ে চ্যানেল আইতে কেকা ফেরদৌসীর রান্না বিষয়ক এই টিভি অনুষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়। অঙ্কের হিসেবে এই ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠানটি ১২ বছরে পা দিয়েছে। যা দেশের টেলিভিশন মাধ্যমে রান্নার অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে একটি নতুন রেকর্ডও বটে।

অনুষ্ঠানটির মূল বৈশিষ্ট্য রান্নার মাধ্যমে খাবারের বিষয়টিকে উপাদেয় ও আকর্ষণীয় করার পাশাপাশি দেশের সংস্কৃতিকেও উজ্জীবিত করা। আর তাই দেশের রান্নার ক্ষেত্রে ঐতিহ্যবাহী রান্নাই গুরুত্ব পায় বেশি। আর বিদেশের ক্ষেত্রে প্রবাসীরা সাধারণত যে ধরনের রান্না নিয়মিত করেন বিদেশে অতিথি আপ্যায়নে যে ধরনের রান্নাকে গুরুত্ব দেন তাই তুলে ধরা হয়। যা দেখে রান্না বিষয়ক নতুন অভিজ্ঞতার পাশাপাশি দেশ-বিদেশের মধ্যে একটি সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনও গড়ে ওঠে।

Keka-Apaঅনুষ্ঠানটির আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো বিশেষ দিনে বিশেষ রান্নার অনুষ্ঠান প্রচার। এর আওতায় গত ১১ বছরে টুঙ্গীপাড়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রিয় খাবার নিয়ে একটি বিশেষ পর্ব, কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত শান্তি নিকেতন, কুষ্টিয়ার কুঠিবাড়ি, শাহজাদপুরের কাচারি বাড়িতে ঠাকুর বাড়ির প্রিয় খাবার নিয়ে বিশেষ পর্ব, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে চুরুলিয়ায় কাজী বাড়ির রান্না শীর্ষক বিশেষ পর্ব, মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রিয় খাবার নিয়ে বিশেষ পর্ব এবং ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে একাধিকবার বিশেষ পর্বের রান্না প্রচার করা হয়।

দেশ-বিদেশে রান্না বারো বছরে পদার্পণ উপলক্ষে রন্ধন বিশেষজ্ঞ কেকা ফেরদৌসী এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, রান্নার মতো একটি টিভি অনুষ্ঠান ১২ বছরে পা দিয়েছে এজন্য সত্যি আমরা আনন্দিত। এ ব্যাপারে দেশে-বিদেশে অনেকের সহযোগিতা পেয়েছি। তাদের প্রতি অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। শুরুতে পাশে ছিল চ্যানেল আই। অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা চ্যানেল আই-এর প্রতি। প্রথম থেকেই সজীব গ্রুপ টাইটেল স্পন্সর হিসেবে আমাদের সঙ্গে আছেন। এজন্য অনেক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ সজীব গ্রুপকে। গত ১১ বছরে অনুষ্ঠানটিতে দেশের অসংখ্য শিল্পী এসেছেন। মায়ের রান্না নিয়েও বিশেষ পর্বে এসেছেন অনেকে। সবার প্রতি রইল অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। মাঝখানে মালয়েশিয়ান পাম অয়েল সেরা সেফ নামে আমরা রান্না বিষয়ক একটি রিয়েলিটি শোর আয়োজন করেছিলাম। এজন্যও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই।