Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

কুমারিকাই আপনার সেরা বন্ধু!

নারীর চুলের উপমার ক্ষেত্রে জীবনানন্দ দাশের কবিতার শরণাপন্ন হন অনেকে। চুল তার কবে কার অন্ধকার বিদিশার নিশা… আর তখনই নারীর চুলের বাহারী সৌন্দর্য চোখের সামনে ভেসে উঠে। একথা তো সত্য নারীর সৌন্দর্যের অন্যতম আকর্ষণ তার মাথার চুল। আগের দিনে অভিভাবকরা পাত্রী দেখতে গিয়ে প্রথমে তার মাথার চুলের প্রতি নজর দিতেন। আর তাই এলোকেশী নারীর মান মর্যাদাই ছিল অন্যরকম। যদিও বর্তমান সময়ে নারীর মাথার চুল নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা, চলছে চুলের রূপ বদলের প্রতিযোগিতাও। অনেক নারীই তার মাথার চুল পুরুষদের স্টাইলে ছোট রাখছেন। যার আধুনিক নাম ববকাট। তবে নারীর মাথায় লম্বা চুলের কদর কিন্তু আগের মতোই রয়ে গেছে।

একটা ছোট্ট ঘটনার কথা বলি। বিয়ের পর প্রথম গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে গেছে হেমা। যার সঙ্গে হেমার বিয়ে হয়েছে সে গ্রামের ভদ্র, নম্র ছেলেদের মধ্যে অন্যতম। তার ওপর ভালো ছাত্র হিসেবেও খ্যাতি আছে। তার বউ গ্রামে আসবে। পাড়া প্রতিবেশীদের মধ্যে রীতিমত হৈ চৈ শুরু হয়ে গেল। নির্ধারিত দিনে হেমা তার স্বামীকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে পা রাখলো। নতুন বউকে দেখে সবাই বেজায় খুশি। মেয়েরা, বউ ঝিয়েরা সবচেয়ে বেশি খুশি নতুন বউয়ের মাথার চুল দেখে। মুখে মুখে খবরটা ‘রাষ্ট্র’ হয়ে গেল। অমুক বাড়ির নতুন বউ, যেমন তার রূপ, তেমন তার ব্যবহার। মাথার চুল মাশাআল্লাহ… এই তল্লাটে এত সোন্দর মাথার চুল আর কারও নাই। ‘সোন্দর’ মানে লম্বা। নতুন বউয়ের মাথার লম্বা চুল দেখার জন্য দূর দূরান্ত থেকেও বউ ঝিয়েরা আসতে শুরু করলো। সবাই নতুন বউয়ের মাথার চুল দেখে আর প্রশংসা করে। নতুন বউয়ের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলার চেষ্টায় মেতে ওঠে অনেকে। অনেকে নতুন বউকে প্রশ্ন করে বসে হ্যাঁ গো… এই যে মাথায় এত লম্বা চুল তোমার। যত্ন করো কীভাবে…

নতুন বউ সবার কথা শোনে আর হাসে। যাকে বেশি পছন্দ হয় তাকে কাছে ডেকে নিয়ে চুলের যত্নে ওপর নানা পরামর্শ দেয়। দিনে দিনে নতুন বউ সবার নয়নের মণি হয়ে ওঠে।

Kumarika-2আরেকটি ঘটনার কথা বলি। ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলে একটি অনুষ্ঠান চলছে। একটি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের ‘ফ্যামিলি ডে’ পালন টাইপের অনুষ্ঠান। কর্মকর্তারা তাদের বউ, ছেলে-মেয়েদের নিয়ে এসেছে। একটুপরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হবে। তারপর খাওয়া দাওয়া ও র‌্যাফেল ড্র। হঠাৎ এক মহিলার দিকে নজর পড়লো সবার। একজন দু’জন করে অনেকে তার দিকে এগিয়ে গেল। যারা তাকে চিনে তারা পাশের চেয়ারে বসানোর জন্য অস্থির। অন্যরা তার মাথার চুলের দিকে তাকিয়ে আছে। ইতোমধ্যে কেউ কেউ বাজি ধরেছে। মহিলার মাথার চুল আসল চুল নয়। ফলস চুল। এটাই বাজি। অবশেষে রহস্য উম্মোচিত হলো। মহিলা ফলস চুল মাথায় লাগাননি। যা দেখা যাচ্ছে তার সবটাই আসল। এবার শুধুই প্রশ্নের পর প্রশ্ন-ভাবী, আপা… আপনি এত লম্বা, ঘন চুলের যত্ন নেন কীভাবে…?

চুলের যত্নের কথা ভেবেই অনেকে অস্থির সময় কাটান। অথচ বিষয়টি অনেক সহজ। তবে এক্ষেত্রে ধৈর্যের ব্যাপারটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। দাঁতের যত্ন নেবার জন্য আমরা সকালে উঠে দাঁত ব্রাশ করি। রাতে ঘুমাতে যাবার আগেও দাঁতের যত্ন নেই। তেমনি চুলেরও যত্ন প্রয়োজন। কিন্তু এটা আমরা অনেকে মানতে চাই না। আবার মানলেও কার্যক্ষেত্রে গুরুত্ব দেই না। এটাতো সহজ একটা হিসাব। বাইরে থেকে এসে আমরা সহজেই হাত মুখ ধুয়ে নেই। মুখে হাতে ক্রীম লাগাই। তাহলে চুলের ক্ষেত্রে নয় কেন? বাসা বাড়ির বাইরে থাকলে মুখে, শরীরের অন্যান্য জায়গায় যেমন ধুলোবালি লাগে তেমনি চুলেও লাগে। সে ক্ষেত্রে একটা সহজ হিসাবও আমরা মানতে চাই না। হাত মুখ ধুয়ে নিলাম। মাথার চুল হয়তো ধোয়া সম্ভব নয়। কিন্তু চিরুনি দিয়ে মাথার চুলতো আঁচড়ে নিতে পারি। চুলের যত্নে আরো একটা সহজ হিসাব আছে। চুলের যত্নে খাদ্যাভ্যাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্যাভ্যাসে দিনে প্রচুর পরিমাণে পানি পানকে গুরুত্ব দিতে হবে। খাদ্য তালিকায় ভিটামিন ‘এ’ জাতীয় খাবার যেমন- মাছ, বাঁধাকপি, লাল শাক, ব্রকলি, ডিম জাতীয় খাবারের আধিক্য থাকা ভালো।

Kumarika-3অনেকে হয়তো ভাবতে পারেন এই পরামর্শ কি যার মাথায় লম্বা চুল তাদের জন্য না। মোটেই তা নয়। সোজা, কোকড়া, ঢেউ খেলানো, ববকাট যে ধরনেরই চুল হোক না সেক্ষেত্রে সমান যত্ন প্রয়োজন। একটি চারাগাছ রোপণ করেছেন। কিন্তু এই গাছ যদি নিয়মিত পরিচর্যা না পায় অর্থাৎ নিয়মিত পানি ও আলো-বাতাস না পায় তাহলে গাছটি শেষ পর্যন্ত বাঁচবে না। তেমনি মাথায় চুল থাকলেই হবে না। চুলের সঠিক পরিচর্যা না হলে মাথা থেকে আস্তে আস্তে চুল পড়ে যাবে। হঠাৎ একদিন দেখবেন আপনার মাথায় চুল নাই। কী বীভৎস চেহারা হবে আপনার। কাজেই সময় থাকতেই সাবধান।

কীভাবে চুলের যত্ন নিবেন, কীভাবে চুল পড়া রোধ করবেন- এ নিয়ে অনেকে সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় ভোগেন। অথচ হাতের কাছেই রয়েছে সহজ সমাধান। কুমারিকা এক্ষেত্রে প্রিয় বন্ধুর মতো ভূমিকা পালন করতে পারে। কুমারিকা বিশ্বখ্যাত একটি হেয়ার অয়েল। অনেকেই জানেন, আদিকাল থেকেই প্রাচীন শ্রীলঙ্কা নৈসর্গিক সৌন্দর্য আর বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক বনৌষধি উপকরণের উৎস হিসেবে সুপরিচিত। সৌন্দর্য চর্চায় বহুল ব্যবহৃত ব্রাহ্মী,অ্যালোভেরার মতো উপকরণগুলো প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় ঐ সিংহল দ্বীপে। ঐ শ্রীলঙ্কাতেই তৈরি হয় সবার প্রিয় কুমারিকা হেয়ার অয়েল।

কুমারিকা তেল শতভাগ প্রাকৃতিক নির্যাস থেকে তৈরি। কুমারিকা হেয়ারফল কন্ট্রোল তেল-এ আছে আমলকী, ব্রাহ্মীলতা, অ্যালোভেরা ও এক্সট্রা ভার্জিন নারিকেলের নির্যাস। যা নিয়মিত ব্যবহারে নারীর মাথার চুল পড়া কার্যকরভাবে বন্ধ করে। এছাড়াও কুমারিকা হেয়ারফল কন্ট্রোল অয়েল নিয়মিত ব্যবহার করলে চুলের ক্ষেত্রে বাড়তি আরো দুটি সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

Kumarika-4ক. চুলের আগা ফাটা রোধে কুমারিকা হেয়ার অয়েল বেশ কার্যকর। চুলের আগা ফাটা রোধে কুমারিকার আছে মধু ও মেহেদীর গুণসমৃদ্ধ কুমারিকা স্পিলিট অ্যান্ড কন্ট্রোল অয়েল। যা চুলে পুষ্টি যুগিয়ে চুলের আগা ফাটা প্রতিরোধ করে।

খ. কুমারিকা ড্যানড্রাফ কন্ট্রোল অয়েলে আছে মেথি ও লেবু। যা নিয়মিত ব্যবহার করলে খুশকি দূর হয়।

একথাতো সত্য চুলের বিভিন্ন সমস্যা যেমন চুল পড়া, খুশকি, আগা ফাটাসহ নানাবিধ সমস্যার সমাধানে হারবাল উপকরণই সেরা। এক্ষেত্রে কুমারিকা হেয়ার অয়েলের জুড়ি নাই। ১০ জনের মধ্যে ৮ জনেরই মন্তব্য কুমারিকা চুল পড়া নিয়ন্ত্রণ করে লক্ষণীয়ভাবে। কাজেই আর দেরি নয় কুমারিকাই হোক আপনার মাথায় চুল পরিচর্যার অন্যতম বন্ধু।