Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

ওয়েব নাটকে অশ্লীলতার ছড়াছড়ি!

‘আমি বুঝিনি এমন কিছু হবে। আমাদের শুটিংয়ের আগে কোনো স্ক্রিপ্ট দেয়া হয়নি। এর আগে একই পরিচালকের আরেকটি কাজ করেছিলাম আমরা নেপালে। সেখানে আমি স্পর্শীয়া, শামিম, তৌসিফ ভালো বন্ধু হয়ে গিয়েছিলাম। এবারও যখন গাজীপুরের একটি রিসোর্টে শুটিং করি, ভাবলাম বন্ধুদের সঙ্গে মজা করতে করতেই শুটিং হয়ে যাবে। কিন্তু শুটিংয়ের পর ওখানেই মনে হয়েছে, আমরা হয়তো খুব একটা ভালো কাজ করছি না। ডায়লগগুলো শুটিং করার সময় তো বন্ধুদের সঙ্গে মজা করে দিয়ে দিয়েছি। কিন্তু পরে মনে হয়েছে ব্যাপারটি ঠিক হয়নি। কারণ আমার একটা ক্যারিয়ার আছে, ওদেরও। তখন আর কিছু করার ছিল না। প্রমো দেখে মনে হয়েছে আসলেই ভুল করে ফেলেছি। ডায়লগগুলো খুবই বাজে লাগছে। প্রমোতে আরেকটা দৃশ্যে আমার পা ধরে আছে একজন, তখন যে ডায়লগটা শোনা যায়, সেটাও এই দৃশ্যের ডায়লগ না। ডিরেক্টরকে আমি এই দৃশ্যটা না রাখতে বলেছিলাম, কিন্তু প্রমোতেই রেখে দিয়েছে। স্ক্রিপ্ট না দেখে, কিছু না জেনে শুধু বন্ধুদের সঙ্গে মজা হবে ভেবে আর এ রকম কাজ করব না বলে ঠিক করেছি আমি’- কথাগুলো বলছিলেন মডেল-অভিনেত্রী রাহা তানহা খান।  যে নাটকের প্রমোটি নিয়ে রাহা কথাগুলো বললেন সেটির নাম ‘আবাসিক হোটেল’। এই ওয়েব সিরিজের নির্মাতা ইমরাউল রাফাত। কী বুঝে তিনি এইসব অশ্লীল আর ডাবল মিনিং ডায়লগ দিয়েছেন অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মুখে, আর তারাই বা কী ভেবে এই নিম্ন শ্রেণির ডায়লগগুলো দিয়ে গেছেন- বোঝা গেল না। ৫৮ সেকেন্ডের প্রমোটি আপলোড করা হয়েছে নতুন ইউটিউব চ্যানেল ধ্রæব টিভিতে। প্রমোর শুরুতে লেখা ‘সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: হেডফোন কানে দিয়ে ভিডিওটি দেখুন’। ব্যাপারটি সম্ভবত এমন যে হেডফোন দিয়ে না দেখে লাউড স্পিকারে দেখলে (অথবা শুনলে) যারা দেখছেন, তারা এবং আশপাশের সবাই লজ্জা পাবেন। এই অল্প কয়েক সেকেন্ডের প্রমোতে অসংখ্য ডাবল মিনিং ডায়লগ। এ নিয়ে শোবিজ অঙ্গনে অনেকেই নানান কথা বলাবলি করছেন। কারো কারো মতে, সুড়সুড়ি দেয়া সেসব ডায়লগ না দিয়ে পর্ণোমুভি বানালেও অন্ততপক্ষে নির্মাতা কিংবা প্রযোজকের উদ্দেশ্য বোঝা যেত। ওয়েব সিরিজ মানে কি যে যা খুশি বানাবে? যা খুশি ডায়লগ দিয়ে দিবে? এবং আমাদের প্রিয় কিছু অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও চোখ-কান বুজে এগুলো করে যাবেন? সত্যি সেলুকাস! কী বিচিত্র এই দেশ!

এ নিয়ে কথা বলেছে ডিরেক্টরস গিল্ড-এর সভাপতি গাজী রাকায়েত এবং অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিম। গাজী রাকায়েত বললেন- ‘প্রমোটি যে খুবই আপত্তিকর সেটা এর নিচে দেয়া কমেন্টগুলো পড়লেই বোঝা যায়। সরকারের এইসব বিষয়গুলোতে নজর দেয়া উচিত। এই পরিচালক সম্ভবত ডিরেক্টর গিল্ডের মেম্বার। এইসব বন্ধে আমরা উদ্যোগ নেব। আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির জন্য এটা কোনোভাবেই সুখকর নয়। যেসব শিল্পীরা কাজ করেছে, তাদের বিষয়ে অবশ্যই শিল্পী সংঘের নেতৃবৃন্দ ব্যবস্থা নেবেন।’ আর অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিম বললেন- ‘ভিডিওটি এখনো দেখা হয়নি। তবে শিল্পীদের বিভিন্ন সমস্যা -সংকট সমাধানে অভিনয় শিল্পী সংঘ কাজ করে যাচ্ছে। প্রথম থেকে আমরা শিল্পীদের সমস্যাগুলোকে সমাধানের জন্যই কাজ করে আসছি। আমাদের উত্থাপিত সমস্যাগুলো সমাধানের বিষয়গুলো এই মাস থেকেই কার্যকর হবে। অভিনয়শিল্পীদের প্রতি সাধারণ মানুষের একধরনের আগ্রহ থাকে, তেমনি প্রতিটি শিল্পীরও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে। কিন্তু তা বিসর্জন দিয়ে যদি কোনো শিল্পী শিল্পকে কুৎসিত জায়গায় নিয়ে যেতে চায়, তাহলে অবশ্যই আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’