Ananda ALo
Ultimate magazine theme for WordPress.

ঈদের ছবি এবং অনেক প্রশ্ন

মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন: দুই ঈদ আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পের জন্যও বড় উৎসব। অতীতে দুই ঈদেই ছবি মুক্তির প্রতিযোগিতা চলতো। কম করে হলেও ৫টি করে নতুন ছবি ঈদে মুক্তি পেতো। এক সঙ্গেতো রের্কড সংখ্যক ১৬টি ছবিও মুক্তি পেয়েছিল। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে ঈদ উৎসবের কোনো আমেজ চলচ্চিত্র শিল্পে নেই। সিনেমা হলের সংকটের কারনে খুব বেশি ছবি ঈদে মুক্তি পায় না। আগ্রহ থাকলেও অনেক প্রযোজক পরিবেশক ঈদে ছবি মুক্তি দিতে পারেন না প্রে¶াগৃহ সংকটসহ প্রদর্শকদের অনাগ্রহের কারনে। বড় তারকার বড় ছবি ছাড়া অন্যান্য কারো ছবি প্রদর্শকরা ঈদ উৎসবে প্রদর্শনের জন্য তেমন আগ্রহ দেখান না। দর্শকেরা ঈদের মত একটি আনন্দময় উৎসবে বড় মাপের ছবি দেখতে চান, পেতে চান পরিপূর্ণ সিনেমা
হল। সিনেমায় ডিজিটাল যুগের প্রচলন হবার সাথে সাথে প্রে¶াগৃহ সমূহ প্রজেক্টর নির্ভর হয়ে যাওয়ায় পুরনো প্রযুক্তি ছবি নির্মাণ ও প্রদর্শনী বন্ধ হয়ে যায়। ছোট হয়ে আসে সিনেমা প্রদর্শনের ¶েত্রটি। এখন রাজধানী ঢাকা শহরে সম্পূর্ণ ডিজিটাল প্রে¶াগৃহের সংখ্যা মাত্র ১৬টি। এর মধ্যে মাত্র ৪টি প্রে¶াগৃহে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রজেক্টর নির্ভর প্রে¶াগৃহের সংখ্যা প্রায় ২০০টি। দুই ঈদ, বাংলা নবর্বষে বন্ধ থাকা একশ’র কাছাকাছি প্রে¶াগৃহ স্বল্প সময়ের জন্য চালু হয়। তারপর আবার বন্ধ হয়ে যায়। এর কারন, দর্শক সংকট। আর দর্শক সংকটের কারন মানহীন চলচ্চিত্র। ডিজিটাল সিনেমার নামে ভিডিও ফিল্মের আধিক্য দর্শককে হল বিমুখ করে ফেলেছে। ফলে শত ইচ্ছা থাকা সত্বেও অনেক প্রযোজক পরিবেশক ঈদে তাদের ছবি মুক্তি দিতে পারেন না। পরিবেশক এবং তাদের প্রতিনিধি বুকিং এজেন্টদের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে সবকিছু। আর এই Ashiqi-3কারনে ঈদে কোন ছবি শতাধিক প্রে¶াগৃহে মুক্তি পায়, কোন ছবি ৩০টি প্রে¶াগৃহে। গত রোজার ঈদে ৫টি ছবি ঈদে মুক্তি পেয়েছিল। ছবিগুলো হচ্ছে- লাভ ম্যারেজ, অগ্নি টু, পদ্ম পাতার জল, অমি ও আইসক্রীমওলা এবং নদীজন। এর মধ্যে অমি ও আইসক্রিমওলা ও নদীজন ছবি দুটি প্রে¶াগৃহে মুক্তির পাশাপাশি ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয়েছিল চ্যানেল আইতে। শাহিন সুমন পরিচালিত লাভ ম্যারেজ ১২১টি প্রে¶াগৃহে মুক্তি পেয়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল। আগ্নি টু ৮২ এবং পদ্মপাতার জল ২৭টি প্রে¶াগৃহে মুক্তি পেয়েছিল। এবারের ঈদে ছবির সংখ্যা আরও কমেছে। মাত্র তিনটি ছবি ঈদে মুক্তি পাবে। ছবিগুলো হচ্ছেণ্ড বাংলাদেশ ভারতের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত আশিকি, বদিউল আলম খোকন পরিচালিত রাজাবাবু এবং অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয় পরিচালিত প্রার্থনা। এর মধ্যে প্রে¶াগৃহে মুক্তির পাশাপাশি ঈদের দিন প্রার্থনার ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হবে চ্যানেল আইতে। এই ছবিতে অভিনয় করেছেন, তৌকির আহমেদ, মৌসুমী নাগ, জারা, নওশিন ও শাহরিয়ার নাজিম জয়। বাংলাদেশের জাজ মাল্টিমিডিয়া এবং ভারতের এমকে প্রোডাকশনের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত অশোকপতি ও আব্দুল আজিজ পরিচালিত আশিকী ছবির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মৌসুমী, নবাগত ফারিয়া, অংকুশ, রজত দত্ত, রেবেকা প্রমুখ। বদিউল আলম খোকন পরিচালিত রাজাবাবু ছবির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাকিব খান, অপু বিশ্বাস, ববি, শাহনুর, সাঙ্কোপাঞ্জা, শানুশিবা, দিতি ও উজ্জল। সম্ভবত এবারের ঈদই প্রথম ঈদ হবে, যে ঈদে সবচেয়ে কম ছবি মুক্তি পাবে। চলচ্চিত্র ব্যবসায়ীরা এ বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। কারো মতে কম ছবি মুক্তি পেলে ব্যবসা ভাল হবে। কারো কারো মতে ছবির সংকট ব্যবসায়ে বির“প প্রভাব ফেলবে। তাদের কথাণ্ড যে এলাকায় পাশাপাশি ৩টি প্রে¶াগৃহ রয়েছে তাদের মধ্যে দুটি নতুন ছবি প্রদর্শনের সুযোগ পাবে। অন্যটিকে পুরনো ছবি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। এটা কোন মতেই চলচ্চিত্রের জন্য সুখকর হবে না।